Eating Disorder

Undereating signs: শরীরে কোন লক্ষণগুলি দেখলে বুঝবেন আপনি অনেকটা কম খাওয়াদাওয়া করেন

অনেকে সময় আমরা অজান্তেই প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কিছুটা কম খাই। তবে শরীরও নানা উপায়ে জানান দেয় যে, তার বাড়তি স্ফূর্তির প্রয়োজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২২ ১৯:১৫
Share:

পুষ্টিগুণের পাশাপাশি বাঙালি ক্যালোরি গুনতেও শিখল। হরেক রকম ডায়েট করা শুরু করল। ছবি: সংগৃহীত

বাড়ের সময়ে পেট ভরে খেতে হয়— এমন কথা আগে মা-কাকিমারা বলেই থাকতেন। বাচ্চা কিংবা কিশোর-কিশোরীরা যাতে দু’বেলা ভাল করে খাওয়াদাওয়া করে, তরুণ-তরুণীরা যাতে প্রাণ ভরে সাধ মিটিয়ে খায়, তা বাড়ির অভিভাবকরা মন দিয়ে দেখতেন। কোনও বাড়িতে খাওয়ার আমন্ত্রণ থাকলে, অতিথিরা যদি বার বার চেয়ে চেয়ে খাবার না নিতেন, তা হলে বাড়ির গিন্নি মনে করতেন রান্নায় কোনও গলদ ছিল বুঝি। এমনও শোনা যেত, একেক জন খেতে এসে ১৫-২০টা লুচি, ৮-১০ পিস পাঁঠার মাংস, দু’বাটি পায়েস আর ৫টা রসগোল্লা খেয়ে ফেললেন! কিন্তু সে অনেক যুগ আগের কথা। তার পর বাঙালির ঘরে ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, অম্বল-বদহমজ এমন ভাবে চেপে বসল যে, সকলেই একটু বুঝেশুনে খাওয়া শুরু করলেন।

Advertisement

পুষ্টিগুণের পাশাপাশি বাঙালি ক্যালোরি গুনতেও শিখল। হরেক রকম ডায়েট করা শুরু করল। প্রিয় তারকাদের মতো ছিপছিপে শরীর পাওয়ার ঝোঁক বাড়ল। ফলে খাওয়াদাওয়া হল আরও নিময় মাফিক। কিন্তু এ সব করতে গিয়ে অনেক সময়ই পুষ্টির অভাবও ঘটতে শুরু করল। স্ফূর্তির অভাবে শরীর নেতিয়ে পড়ল। তাই শরীর এখন নানা ভাবে জানান দেওয়ার চেষ্টা করে যে, প্রয়োজনের চেয়ে অনেকটাই কম খাবার যাচ্ছে। কিন্তু এই সঙ্কেতগুলি অনেক সময়ই আমরা বুঝতে পারি না। কিছু কিছু লক্ষণকে হয়তো আমরা অন্য কোনও রোগের উপসর্গও ভেবে বসি। তাই জেনে নেওয়া যাক, কম খাওয়ার ফলস্বরূপ শরীরে কী কী ঘটতে পারে।

শরীর এখন নানা ভাবে জানান দেওয়ার চেষ্টা করে যে, প্রয়োজনের চেয়ে অনেকটাই কম খাবার যাচ্ছে।

১। শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ার খিদে

Advertisement

সারা দিন অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকায় হয়তো দীর্ঘ ক্ষণ খাওয়া হয়নি। বাড়ি ফিরেই কি পাউরুটি, পিৎজা, অনেকটা ভাত রুটি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যায়? কম খাবার গেলে শরীরে ঠিক মতো স্ফূর্তি থাকে না। তাই কার্বহাইড্রেট বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খোঁজে শরীর। কারণ এগুলি খেলে চট করে এনার্জি পায় শরীর। তাই যদি খুব বেশি এমন প্রবণতা দেখেন, তা হলে বুঝতে হবে পেট ভরে খাচ্ছেন না।

২। খিদে মরে যাওয়া

এর আগের লক্ষণের ঠিক উল্টো লক্ষণ খিদে না পাওয়া। কিন্তু যতই অবাক লাগুক, কথাটা সত্যি। শরীরে যখন এনার্জির প্রয়োজন হয়, তখন মস্তিষ্ক আমাদের সঙ্কেত পাঠায় যে খিদে পেয়েছে। সেই মতো আমরা খাবার খাই। কিন্তু এই সঙ্কেত যদি আপনি দীর্ঘ সময়ে অবেহলা করেন আর কোনও কিছুই না খান, তা হলে শরীরও একটা সময়ে পর সেই সঙ্কেত দেওয়া বন্ধ করবে। তখন কোনও খিদে পাবে না। ঠিক এই কারণে মা-ঠাকুমারা সারা দিন উপোস করে থাকার পর দিনের শেষে বলেন, ‘বেশি কিছু খাব না, খিদে মরে গিয়েছে’।

৩। রক্তচাপ কমে যাওয়া

রক্তচাপ যদি হঠাৎ করে কমে যায়, অনেকে সেটাকে ডায়াবিটিস বলে ভুল করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে অনেকেরই খিদের চোটে মাথা ঘুরতে পারে। রক্তচাপ হঠাৎ কমে গেলে এমন হতেই পারে। প্রত্যেক দিন যদি আপনি বেলা ১টা-২টো অবধি না খেয়ে থাকেন, তা হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়বেই। এতে শরীরে হরমোনের তারতাম্যও হতে পারে।

শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিন না যায়, তা হলেও চুল পড়তে পারে।

৪। চুল পড়ে যাওয়া

নানা রকম শারীরিক সমস্যা হলেই চুল পড়তে পারে। কিন্তু যদি ঠিক করে খাওয়াদাওয়া না করেন আর শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিন না যায়, তা হলেও চুল পড়তে পারে। যদি দেখেন যে শরীর অন্য সে রকম কোনও অসুস্থতার লক্ষণ নেই, শুধুই চুল পড়ছে, তা হলে বুঝতে হবে অপুষ্টির জন্যই এমন হচ্ছে।

৫। কোষ্ঠকাঠিন্য

অনেক সময় নানা রকম ডায়েট করতে গিয়ে আমরা কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলি। কিংবা অজান্তেই হয়তো খাবারে ফাইবারের পরিমাণ কম হচ্ছে। তাতে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যায়। তাই শরীরে ঠিক মতো খাবার যাচ্ছে না, তা টের পাবেন দিনের শুরুতেই!

৬। উদ্বেগ

নানা রকম পোশাকি ডায়েট করার ফলে অনেকেই একটু খিটখিটে হয়ে থাকেন। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা লো-ক্যালোরি ডায়েট করেন, তাঁদের মধ্যে উদ্বেগের প্রবণতা অনেক বেশি। তাই শরীর যখন পর্যাপ্ত ক্যালোরি পায় না, তখন শরীর-মন দুইয়ের উপরই তার প্রভাব পড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন