কাশির ওষুধে কী কী রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে? ফাইল চিত্র।
কাশির সিরাপে বিষাক্ত রাসায়নিক রয়েছে, এমন অভিযোগ বহু আগেই উঠেছে। ভারতে তৈরি কাশির ওষুধ খেয়ে আফ্রিকায় শিশুমৃত্যুর ঘটনার পরেও এমন অভিযোগ উঠেছিল। সম্প্রতি রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে কাশির ওষুধ খেয়ে প্রায় ১১ শিশুর মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। গ্রেফতার করা হয়েছে এক চিকিৎসককে। শিশুমৃত্যুর ঘটনায় যে কাশির ওষুধ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়, তার নমুনা পরীক্ষা করে কেন্দ্র জানিয়েছে এতে কোনও বিষাক্ত পদার্থ নেই। তবে দেখা গিয়েছে, কিছু ব্র্যান্ডের কাশির ওষুধে ডাইইথিলিন গ্লাইকল (ডিইজি) ও ইথিলিন গ্লাইকল (ইজি) নামে দু’ধরনের রাসায়নিক রয়েছে। এই দুই রাসায়নিক শরীরে ঢুকলে ভয়ানক ক্ষতি করতে পারে বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকেরা।
কাশির ওষুধে কী কী রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে?
ডাইইথিলিন গ্লাইকল ও ইথিলিন গ্লাইকল জৈব যৌগ, যা মূলত শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত হয়। ওষুধ তৈরিতে এই দুই রাসায়নিকের কোনও ভূমিকা নেই। মূলত ওষুধে যে যৌগ ব্যবহার করা হয়, তার নাম প্রপিলিন গ্লাইকল, যা মানুষের শরীরের জন্য নিরাপদ। কিন্তু ডাইইথিলিন গ্লাইকল ও ইথিলিন গ্লাইকল, এই দুই রাসায়নিক শরীরের জন্য বিপজ্জনক।
এগুলি সাধারণত বর্ণহীন, গন্ধহীন এবং মিষ্টি স্বাদযুক্ত সিরাপের মতো তরল, যা শিল্পক্ষেত্রে দ্রাবক হিসেবে ও রাসায়নিক তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই রাসায়নিক রক্তে মিশলে কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে, ক্ষতি হয় লিভার ও হার্টের। মানসিক অবসাদ বাড়তে থাকে। নিয়মিত কাশির সিরাপ খেলে খাদ্যনালি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তা থেকে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়া মুখের ভিতরে ক্ষত, চর্মরোগ, স্নায়ু ও মস্তিস্কের সমস্যা হতে পারে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ২ বছরের কমবয়সি শিশুদের কাশির ওষুধ না খাওয়ানোই ভাল। নির্দিষ্ট ডোজ়ের চেয়ে বেশি ওষুধ রক্তে মিশলে তা থেকে নানা ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যাবে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কাশি সারাতে কোনও কাজই করে না সিরাপ। কাশির বেগ সাময়িক ভাবে কমাতে পারে মাত্র। অনেক সময়েই বাবা-মা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই সন্তানকে এই ধরনের কাশির সিরাপ খাইয়ে দেন। না বুঝে ওষুধ খাওয়ালে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাবে।