হাঁটার বিকল্প হতে পারে কোন কোন ব্যায়াম, রোজের ব্যস্ততাতেই করতে পারেন। ছবি: ফ্রিপিক।
দিনে দশ হাজার পা হাঁটা নিয়ে ইদানীংকালে খুব চর্চা হচ্ছে। অনেক ফিটনেস প্রশিক্ষক আবার বলছেন, দশ হাজার পা হাঁটতেই হবে এমন কথা নেই। সে ঘরের ভিতরে হাঁটাহাঁটি করলেও উপকার হবে। আসল কথা হল, দিনভর শুয়ে বা একটানা বসে না থেকে, শারীরিক কসরত করতে হবে। জিমে গিয়ে ভারী ব্যায়াম যাঁরা করতে পারেন না, তাঁরা দিনে ৩০ মিনিট হাঁটলেই কার্ডিয়োর মতোই শরীরচর্চা হবে। তাতে ১২০-১৫০ ক্যালোরির মতোও ঝরবে। এখন অনেকেই বলবেন, যে অফিস-বাড়ি সামলে ৩০ মিনিট হাঁটারও সময় নেই। ওই সময়টুকু বরং ঘুমোলে কাজে দেয়। সময়ের যদি একান্তই অভাব হয়, তা হলে আরও কিছু ব্যায়াম আছে যাতে হাঁটার মতোই সুফল পাওয়া যাবে।
৩০ মিনিট হাঁটলে যা উপকার হবে, তেমনই লাভ হবে কিছু ব্যায়ামে। একই ক্যালোরি ঝরবে। রোজের জীবনে শত ব্যস্ততাতেও সেগুলি করতে পারেন।
বাগান করা
সপ্তাহে দুই থেকে তিনও যদি গাছের পরিচর্যায় সময় দিতে পারেন, তা হলেও শারীরিক কসরত হবে। ‘হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিং’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, দিনে ৩০ মিনিট বাগান করায় সময় দিলে ১৫০-২০০ ক্যালোরি ঝরবে। পাশাপাশি মনও ভাল থাকবে। মাটি কোপানো, গাছ ছাঁটা, জল দেওয়া, সার তৈরি— সবেতেই কসরত হবে। বার বার ওঠাবসাও হবে। তা ছাড়া দীর্ঘ সময় রোদে থাকার কারণে শরীর পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি-ও পাবে। শরীর ও মন ভাল রাখতে বাগান করার বিকল্প নেই।
শিশুদের সঙ্গে খেলা
শিশুকে সময় দিন। তার সঙ্গে খেলাধুলা করুন। এতেও শারীরিক কসরত হবে। এই বিষয়ে চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের মত, ছোটদের সঙ্গে নিয়েই ব্যায়াম করুন। স্পট জগিং, জ়ুম্বা, নানা রকম অ্যারোবিক্স, হালকা যোগাসন করলে শিশুরই শরীরচর্চা হবে, আপনারও ব্যায়াম করা হয়ে যাবে। বাড়ির ছাদে হোক বা বাইরে, ছোটদের সঙ্গে খেলুন, এতে সময় দেওয়াও হবে আবার শারীরিক কসরতও হবে।
তাই চি
তাই চি চিনের বহুপ্রাচীন একটি রীতি। শরীরের নমনীয়তা ও দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সচল রাখতে এই ব্যায়াম করা হয়। ধীরে ধীরে স্ট্রেচিং-এর মতো করে করা হয় তাই চি। এতে পেশির নমনীয়তা বাড়ে। বাতের ব্যথাবেদনার কারণে যাঁরা জোরে হাঁটাচলা করা বা দৌড়তে পারেন না, তাঁদের জন্য তাই চি খুব ভাল ব্যায়াম হতে পারে। সব বয়সেই এই ব্যায়াম করা যায়। বাড়ির ছোটদের নিয়েও তাই চি অভ্যাস করতে পারেন। দেখা গিয়েছে, ৩০ মিনিট তাই চি করলে ১৫০ ক্যালোরির মতো ঝরতে পারে।
ঘর পরিষ্কার
ঘর পরিষ্কার করাও খুব ভাল ব্যায়াম। ঘর মোছা সবচেয়ে ভাল ব্যায়ামগুলির মধ্যে অন্যতম। মাটিতে বসে হাত দিয়ে ঘর মুছলে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম হয়। এতে হাত, পা ও পেটের পেশিতে চাপ পড়ে। এতে অসুবিধে হলে মপ ব্যবহার করুন, সে ক্ষেত্রে হাতের ভাল ব্যায়াম হবে। সব সময়ে ওয়াশিং মেশিনে কাপড় না কেচে, বরং বালতিতে কাপড় কাচার চেষ্টা করুন। এতে হাত ও তলপেটের পেশির ভাল ব্যায়াম হবে।
নাচ
অনেক ফিটনেস প্রশিক্ষকই বলেন, জিমে গিয়ে ভারী ওজন তুললেই যে ফিট থাকা যাবে এমনটা নয়। বরং জিমে যাওয়ার বিকল্প হিসেবে বাড়িতে মিউজিকের সঙ্গে নাচ, নানা রকম অ্যারোবিক্সের পদ্ধতি বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। জ়ুম্বায় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের পেশির সঞ্চালন হয়। হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখতেও এই ব্যায়াম নিয়ম করে করতে পারেন। জ়ুম্বার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, এই শরীরচর্চা নিয়মিত করলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে, ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। মনও ভাল থাকে।