Parasomnia sleep Disorder

ঘুমের মধ্যে কথা বলেন, কখনও আঁতকে ওঠেন, মাথায় দুশ্চিন্তার ভিড়, কী সমস্যা এটি? ভুগছেন অনেকেই

নিশ্চিন্তের ঘুম আর হয় না। ঘুমোতে গেলেই হাজার চিন্তা। চোখ লাগলেই নানা শব্দ শুনতে পানে, ঘুমের মধ্যেই অজানা ভয় চেপে বসে। কেন হচ্ছে এমন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৫ ১৫:০৩
Share:

ঘুমের মধ্যে কথা বলেন, ভয় পান, জানেন কেন হচ্ছে এমন? ফাইল চিত্র।

মাঝেমধ্যেই দু’চোখের পাতা এক হয় না, মনে হয় এই বুঝি অনিদ্রার সমস্যা ধরল— এমন দুশ্চিন্তাতেই কত মানুষের রাতের ঘুম উড়েছে! ঠিক ঘুমের সময় এলেই এই সব চিন্তা ঘিরে ধরে। আর তাতেই ঘুমের দফারফা হয়ে যায়। সারা দিনের যত উদ্বেগ, সবই এসে হানা দেয় ঘুমের সময়টাতেই। নেতিবাচক ভাবনাগুলিও জট পাকিয়ে থাকে। আর এ সবের চক্করেই কেউ ঘুমের মধ্যে কথা বলেন, কেউ আঁতকে ওঠেন, আবার কারও মনে চেপে বসে অজানা ভয়। ঠিক কী কারণে হয় এই সমস্যা?

Advertisement

ঘুমোনোর সময়ে দুশ্চিন্তা বা ঘুমের মধ্যে ভয়— স্লিপ ডিজ়অর্ডারেরই লক্ষণ। এই ডিজ়অর্ডার নানা ধরনের হয়। অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া যেমন এর একটি ধরন, তেমনই প্যারাসমনিয়াও। অনেকেই প্যারাসমনিয়াকে বলেন ঘুমের ব্যধি। ঘুমিয়ে কথা বলা, ঘুমের মধ্যে হাঁটা (স্লিপ ওয়াকিং), ঘুমের সময়ে দুশ্চিন্তা, ভয়— এই সবই প্যারাসমনিয়ার লক্ষণ। এই সমস্যা হলে অনেকে আবার ঘুমনোর সময়ে নানা রকম শব্দ শুনতে পান। হ্যালুসিনেশন বা দৃষ্টিবিভ্রমও হতে পারে।

প্যারাসমনিয়া নিয়ে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র রয়েছে। সেখানে বিজ্ঞানীরা লিখেছেন, ঘুম হল একটি পর্যায়বৃত্ত অর্থাৎ, পিরিয়ডিক বিষয়। সাময়িক ভাবে চেতনা হারিয়ে যায় সে সময়ে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, মস্তিষ্ক একেবারেই চেতনাশূন্য হচ্ছে। ঘুমোনোর সময়ে মস্তিষ্কের বিভিন্ন ‘কেন্দ্র’ একটানা কাজ করে নিদ্রা আর জাগরণের প্রক্রিয়াটি সঠিক ভাবে চালু রাখার জন্য। আর যে কেন্দ্রটি এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, তার নাম ‘হাইপোথ্যালামাস’। সেখানে বেশ কিছু স্নায়ু ঘুম ও জেগে থাকার কাজটি পর্যায়ক্রমে চালনা করে। সেই সব স্নায়ুকোষে যদি সমস্যা হয়, তা হলে সঙ্কেত আদানপ্রদানের বিষয়টি ঘেঁটে যায়। তখন ঘুমের নানা সমস্যা দেখা দেয়।

Advertisement

তা হলে নিশ্চিন্তে ঘুমের উপায় কী?

১) প্রতি দিন একটি নির্দিষ্ট সময়েই ঘুমোতে যান। যতই ব্যস্ততা থাকুক, সেই সময়ের আগেই কাজ সারতে হবে। ৭-৯ ঘণ্টা টানা ঘুম জরুরি। ঘুমোনো আর ঘুম থেকে ওঠার সময় একই রাখতে হবে। ছুটির দিনেও তাই।

২) ঘুমনোর অন্তত ঘণ্টা দুয়েক আগে মোবাইল দেখা বন্ধ করতে হবে। প্যারাসমনিয়া থাকলে এই অভ্যাস খুব জরুরি। নীল আলোয় যেন চোখ ক্লান্ত না হয়ে যায়।

৩) শুতে যাওয়ার আগে ‘ব্রিদিং এক্সারসাইজ়’ খুব জরুরি। ৪-৭-৮ পদ্ধতি মেনে চলতে হবে। নাক দিয়ে দিয়ে গভীর ভাবে শ্বাস নিতে হবে ৪ সেকেন্ড ধরে। শ্বাস ধরে রাখুন অন্তত ৭ সেকেন্ড। এর পর মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে ৮ সেকেন্ড ধরে। এই অভ্যাস রোজ করলে হৃৎস্পন্দন নিয়মিত হবে, স্নায়ুকোষগুলি সচল থাকবে।

৪) ঘুমোনোর পরিবেশ আরামদায়ক হতে হবে। অযথা বেশি আলো, হই-হট্টগোল যেন না থাকে।

৫) খাবার খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে শুতে যান। ঘুমের আগে ভারী খাবার খাওয়া চলবে না। চা-কফি বা অ্যালকোহলও ছাড়তে হবে। কারণ, ক্যাফিন ঘুমের সমস্যার জন্য দায়ী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement