সময়ের আগেই বৃদ্ধ হচ্ছে হার্ট, কোন ৫ কারণে? ছবি: ফ্রিপিক।
শরীরের বয়স যতই হোক না কেন, হার্টের বয়স কিন্তু বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিক নানা গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, শরীরের বয়সের চেয়েও হার্টের বয়স দ্রুত হারে বাড়ছে। সময়ের আগেই বৃদ্ধ হচ্ছে হার্ট। এর নেপথ্যে রয়েছে রোজের কিছু ভুল।
হার্টের বয়স বৃদ্ধি পাওয়া মানেই তার কর্মক্ষমতা কমবে। আসলে বিষয়টি হল, স্থূলত্ব যত বাড়বে, ততই রক্তে কোলেস্টেরল-এর মাত্রা ছাড়াবে। রক্তে শর্করা যত বাড়বে, ততই প্রবীণ থেকে প্রবীণতর হয়ে পড়বে হার্ট। কমে যাবে তার রক্ত সঞ্চালনের ক্ষমতা। একদিন হঠাৎ করেই ধুকপুকানি বন্ধ হবে আগাম কোনও লক্ষণ ছাড়াই। ফলে নিঃশব্দেই আসবে হার্ট অ্যাটাক। বাঁচানোর সময়টুকুও দেবে না।
রোজের কোন কোন ভুলেই বৃদ্ধ হচ্ছে হার্ট?
একটানা বসে কাজে বিপদ
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থের গবেষণা বলছে, ডেস্কে বসে একটানা যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের হৃদ্রোগের ঝুঁকি বেশি। কেবল হার্ট নয়, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে লিভারও। বেশি ভুগছেন ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সিরাই। ডেস্কে বসে কাজে শারীরিক কসরত যেমন কম হয়, তেমনই চাপ পড়ে মস্তিষ্কের উপরেও। একটানা ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে থাকা, কাজ শেষ করার তাড়ায় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি এবং শারীরিক কসরত কম হওয়া, সব মিলিয়ে হরমোন ক্ষরণে তারতম্য ঘটে। ফলে বিপদ ঘনাতে দেরি হয় না।
স্ক্রিন টাইম
মোবাইলে আটকে চোখ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে স্ক্রল করা চলছে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে হোক, খেতে বসে বা সফরের সময়ে, ‘রিল’ বা ভিডিয়ো দেখার অভ্যাস আজকাল অধিকাংশেরই। শিশুরাও তার বাইরে নয়। অত্যধিক ‘স্ক্রিন টাইম’ যে কেবল স্থূলত্বের সমস্যা বৃদ্ধি করছে তা নয়, শিশু ও কমবয়সিদের হার্টের রোগের কারণও হয়ে উঠছে, এমনই দাবি গবেষণায়।
প্রক্রিয়াজাত খাবারে আসক্তি
অত্যধিক জাঙ্ক ফুড, প্রক্রিয়াজাত মাংস, কার্বোনেটেড পানীয় খাওয়ার অভ্যাস মেটাবলিক সিনড্রোমের ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। বিপাকক্রিয়ার হারে বদল আসছে, শরীরে মেদ জমার প্রবণতা বাড়ছে। আর এর হাত ধরেই ‘কার্ডিয়োমেটাবলিক’ বদল আসছে শরীরে।
কম ঘুম
অনিয়মিত ঘুম বা অনিদ্রার সমস্যা থাকলে, হৃদ্পেশির সঙ্কোচন এবং প্রসারণ অনিয়মিত হয়, ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। আবার স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা থাকলে ঘুমের মধ্যে হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে। স্লিপ অ্যাপনিয়া এমন একটি অবস্থা, যেখানে ঘুমের সময় বারবার শ্বাসপ্রশ্বাস সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়। প্রতি বার অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে হৃৎপিণ্ডের উপর চাপ বাড়ে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।
অতিরিক্ত ধূমপান
অতিরিক্ত ধূমপানের কারণে নানা ভাবে ক্ষতি হয় শরীরের। ধূমপানের কারণে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। যে কারণে ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এর ফলে হৃৎপিণ্ড আর মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হয়। সঙ্গে রক্তনালিতে চর্বি, খারাপ কোলেস্টেরল এবং ক্যালশিয়াম জমতে থাকে। যে কারণে রক্তনালির দেওয়াল পুরু হতে থাকে যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।