রোজ ২ কাপ করে ২ মাস খেলেই ওজন, উচ্চ রক্তচাপ কমে যাবে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ফলের রস খেলে জিনের বিন্যাসেও বদল আসবে? এমনও কি সম্ভব? নতুন গবেষণায় এমনটাই দাবি করা হয়েছে। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালোফোর্নিয়া, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি ব্রাজ়িলের সাও পাওলো ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা দাবি করেছেন, কমলালেবুর মধ্যে রয়েছে সেই গুণ। এই ফলের রস নিয়মিত খেলে উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতার সমস্যা কমবে। তেমনই শরীরের কিছু বিশেষ জিনের বিন্যাসে বদল আসবে। ফলে প্রদাহজনিত রোগগুলি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
কমলালেবুর রসে কী খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা?
‘মলিকিউলার নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড রিসার্চ’ জার্নালে গবেষণাটির খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে গবেষকেরা লিখেছেন, কমলালেবুর রসে রয়েছে সিট্রাস ফ্ল্যাভোনয়েড, যা একই সঙ্গে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান হিসেবে কাজ করে। এটি শরীরে প্রদাহ কমায়, রক্তসঞ্চালনে সাহায্য করে। স্ট্যানফোর্ডের গবেষকেরা দফায় দফায় পরীক্ষা করে দেখেছেন, দিনে ২ কাপ করে কমলালেবুর রস টানা ২ মাস খেয়ে গেলে শরীরে অনেক বদল আসে। যাঁদের উপর পরীক্ষাটি করা হয়েছিল, তাঁদের উচ্চ রক্তচাপ মাস দুয়েকের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। সেই সঙ্গে তাঁদের শরীরের প্রায় ১৭০০ জিনে বদল আসে। ওই বদলের কারণে প্রদাহজনিত সমস্যা কমে এবং রোগ প্রতিরোধ শক্তি অনেকটাই বেড়ে যায়।
২০১৯ সালের একটি গবেষণাতেও কমলালেবুর রসের বহু প্রকার গুণের কথা বলেছিলেন গবেষকেরা। সেই গবেষণাটির খবর প্রকাশিত হয়েছিল ‘জার্নাল অফ নিউট্রিশন অ্যান্ড ইন্ট্রামেডিয়ারি মেটাবলিজ়ম’ জার্নালে। সেখানে গবেষকেরা লেখেন, কমলালেবুতে ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, কোলিন থাকে। এগুলি হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে বিশেষ উপকারে আসে। হৃদ্যন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে, হৃৎস্পন্দনের গতি ঠিক রাখতে এই উপাদানগুলির ভূমিকা অনেক। কমলালেবুর গ্লাইসেমিক সূচক প্রায় ৪৩, তাই এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় না। সাধারণত গ্লাইসেমিক সূচক ৫৫ বা তার বেশি হলে, সেই সব ফল বা খাবার ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কিন্তু কমলায় সেই ভয় নেই। তবে কমলালেবুর রস খেতে হলে তা বাড়িতে বানিয়েই খেতে হবে। দোকান থেকে কেনা প্যাকেটজাত ফলের রসে এত বেশি পরিমাণে কৃত্রিম চিনি ও প্রিজ়ারভেটিভ থাকে যে, তা খেলে কোনও লাভ হবে না। উল্টে ক্ষতি হবে।