ওজন বৃদ্ধিতে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শে কী খেয়েছিলেন অভিনেতা হর্ষ লিম্বাচিয়া? ছবি: সংগৃহীত।
অতিরিক্ত মেদবহুল চেহারা নিয়ে যেমন লোকজনকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, তেমন কেউ প্রচণ্ড রোগা হলেও তা নিয়েও সমস্যার শেষ থাকে না। কারও লক্ষ্য যেমন হয় মেদ ঝরানো, তেমনই কেউ চান ওজন বৃদ্ধি করতে। মুম্বইয়ের প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, সঞ্চালক হর্ষ লম্বাচিয়ার সমস্যাও ছিল এমনই।, ‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’, ‘মালাং’-সহ একাধিক ছবিতে সংলাপ এবং গান লিখেছেন তিনি। টেলিভিশনের জনপ্রিয় শো ‘বিগ বস’, ‘ফিয়ার ফ্যাক্টর: খাতরোঁ কে খিলাড়ি’-তেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। একাধিক শো সঞ্চালনা করেছেন তিনি। কৌতুক শিল্পী ভারতী সিংহের স্বামী হর্ষ একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ওজন বৃদ্ধির জন্য আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ ঘি এবং ছাতু খেতেন তিনি। তাঁকে বলা হয়েছিল সকালে উঠে খালি পেটে ২ টেবিল চামচ ঘি খেতে। তার পর উষ্ণ জলে ছাতু গুলে চায়ের মতো পান করতে। কারণ এই দুই খাবারেই ৩০০-৩৫০ ক্যালোরি শক্তি মেলে।
অনেকের যেমন ওজন বৃদ্ধি নিয়ে সমস্যা হয়, কম ওজনও কারও কারও ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। কেউ কেউ যথেষ্ট খাবার খেলেও ওজন বাড়ে না। মেদ জমে না। কারও আবার ওজন কমেও যায়। আমরা যে খাবার খাই, তা হজম হয় বিপাকক্রিয়ার মাধ্যমে। কারও ক্ষেত্রে বিপাক হার বা মেটাবলিক রেট হয় খুব বেশি। তার ফলে দেখা যায়, দ্রুত ওজন কমছে। এমনই সমস্যা ছিল হর্ষের।
পুষ্টিবিদ কণিকা মলহোত্র জানাচ্ছেন, কারও কারও বিপাকহার দ্রুত হয় জন্ম থেকেই। জিনগত সমস্যা, অতিরিক্ত পরিশ্রম, কারও আবার বিশেষ শারীরিক কারণে বিপাকহারের গতি বেশি থাকে। তাঁরা যদি ঠিকমতো খাবার না খান, ওজন কমেও যেতে পারে। এই ব্যাপারে নজর না দিলে ক্লান্তি নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠতে পারে। এমনকি, পুষ্টির ঘাটতিও হতে পারে।
কণিকা জানাচ্ছেন, ঘিয়ে যথেষ্ট ক্যালোরি এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে, যা শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি জোগায়। ক্ষেত্র বিশেষে হজমেও তা সহায়ক হয়। ঘিয়ে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন এবং বিউটেরিক অ্যাসিড, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। ছাতুতে রয়েছে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন এবং ফাইবার। ঘি এবং ছাতু সকালে খেলে শরীরে অন্তত ৩০০-৩৫০ ক্যালোরি শক্তি যায়। ছাতু ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তা ছাড়া রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতেও তা সহায়ক।
ওজন বৃদ্ধি করতে চাইলে বা যাঁর ওজন কমছে, তিনি কি ঘি এবং ছাতু খেতে পারেন হর্ষের মতোই? পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক বলছেন, ‘‘ছাতু খাওয়া নিয়ে সমস্যা না থাকলেও, ঘি খাওয়া নিয়ে হতে পারে। আমরা সকলকে ঘি খেতে বলি না। বিশেষত লিভারের সমস্যা, কারও গলব্লাডার বাদ দেওয়া হলে, লিপিড-প্রোফাইল বেশি থাকলে ঘি খাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ থাকে। ফলে নিয়মিত ঘি খেতে হলে, পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভাল।’’
কণিকা বলছেন, ‘‘ওজন বৃদ্ধি করতে পুষ্টিকর খাবার, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ আহার জরুরি। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত ঘুম, শরীরচর্চা এবং পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখাও প্রয়োজন।’’