পেটের মাইগ্রেন কী? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, সঙ্গে বমি বমি ভাব কিংবা মাথার এক পাশ থেকে শুরু হয়ে গোটা মাথায় ছড়িয়ে পড়া অসম্ভব যন্ত্রণা, সঙ্গে জ্বর। এই উপসর্গগুলি মাইগ্রেনের রোগীদের কাছে বেশ পরিচিত। একটা গোটা দিন তো বটেই, টানা দুই থেকে তিন দিন ধরে মাথাব্যথা ভোগাতে থাকে। অথচ যদি এমন হয়, মাইগ্রেনের ব্যথা হচ্ছে তবে তা মাথায় নয়, পেটে, তা হলে?
মনে হতেই পারে, এমনও হয় না কি! ‘অ্যাবডমিনাল মাইগ্রেন’-এ এমনটাই হয়। এ ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা মাথায় হয় না, পরিবর্তে পেট ব্যথা, বমি ভাব, গা গোলানোর মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এমন ধরনের মাইগ্রেন কম জনেরই হতে দেখা যায়। শিশুরা সাধারণত বেশি ভোগে। দশ বছরের নীচে শিশুদের মাঝেমধ্যে অ্যাবডমিনাল মাইগ্রেন হতে দেখা যায়।
‘অ্যাবডমিনাল মাইগ্রেন’ কী?
পেটে ব্যথা হয় বলেই পরিপাক বা হজম সংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। সাধারণ মাইগ্রেনের মতোই কারণটা স্নায়বিক। স্নায়ুতন্ত্রে এমন কিছু রাসায়নিক বদল ঘটে যে কারণে সারা শরীরে প্রদাহ হয়। পেটের রক্তনালিগুলি মারাত্মক ভাবে সঙ্কুচিত ও প্রসারিত হতে থাকে। ফলে নাভির চারপাশে ব্যথা শুরু হয়। এই ব্যথা পেটের উপরের দিকেও ছড়িয়ে পড়ে। পেট ফাঁপা, খিদে কমে যাওয়া, বমি বমি ভাব, গা গোলানোর মতো উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। মাথায় কোনও রকম ব্যথা হয় না।
‘অ্যাবডমিনাল মাইগ্রেন’-কে হজমের গোলমাল ভেবে ভুল করেন অনেকেই। ফলে চিকিৎসা শুরু হতেও দেরি হয়। যদি দেখেন, পেটে যন্ত্রণা ৭২ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে হচ্ছে, নাভির চারপাশেই ব্যথা বেশি হচ্ছে, সেই সঙ্গে বমি ভাব রয়েছে, তা হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এই ধরনের মাইগ্রেন শরীরকে কাবু করে দেয়। ক্লান্তি ভাব বেড়ে যায়।
বংশগত কারণে এমন মাইগ্রেন বেশি হয়। পরিবারে কারও থাকলে, পরবর্তী প্রজন্মেরও হতে পারে। আবার কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও হতে পারে। এমন মাইগ্রেন থেকে বাঁচতে বাইরের খাবার খাওয়া একেবারে বন্ধ করতে হবে, ক্যাফেইন যতটা সম্ভব কম খেতে হবে। ঘন ঘন কফি খাওয়া, চকোলেট, নরম পানীয় খাওয়া বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গেই নিয়মিত শরীরচর্চা জরুরি। যোগাসন ও মেডিটেশনেই এমন মাইগ্রেনকে বশে রাখা সম্ভব।