Military Sleep Method

যত চিন্তাই থাক, ২ মিনিটে ঘুম নামবে চোখে! কী এই ‘মিলিটারি স্লিপ মেথড’? সত্যিই কাজ করে?

অপর্যাপ্ত ঘুমই হাজারো রোগের আসল কারণ। গবেষণা বলছে, যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৭-৮ ঘণ্টা ভাল ভাবে ঘুমনো যায়, তা হলেই হাজার রোগ দূরে থাকে। কিন্তু চোখে ঘুমই যদি না আসে তা হলে কী করবেন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৫৮
Share:

ঘুমের জন্য আর সাধ্যসাধনা নয়! ছবি: সংগৃহীত।

রাতে ভাল ঘুম চাই। জানেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেই ঘুম আর হয় না। মোবাইল না দেখার প্রতিজ্ঞা করে চোখ বন্ধ করে পড়ে থেকেও ঘুম নামে না চোখে। হাজারো চিন্তা আসা-যাওয়া শুরু হয়। কিংবা কোনও কিছু না ভেবেও চোখ বন্ধ করে শুনতে থাকেন ঘড়ির কাঁটার ‘অসহ্য’ হয়ে ওঠা টিক টিক আওয়াজ।

Advertisement

দুনিয়া জুড়ে এখন এই নিদ্রাহীনতার সমস্যা এতটাই বেড়েছে যে শুধু ঘুমনোর জন্যা চালু হয়েছে স্লিপ ট্যুরিজ়ম। যাঁদের সেই সময় নেই তাঁদের জন্য রয়েছে মোবাইলে হোয়াই নয়েজ়, অথবা ঘুম আনানো ভেষজ চা কিংবা ঘরে সুগন্ধ ছড়িয়ে মনোরম পরিবেশ তৈরি করা ল্যাভেন্ডার স্প্রে। চোখে স্লিপ মাস্ক পরেও ঘুমোতে যান কেউ কেউ। নিদ্রাদেবীর রাগ ভাঙে না তবু। তবে ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়া সাম্প্রতিক কিছু ভিডিয়ো ক্লিপে দাবি, ‘মিলিটারি স্লিপ মেথড’ ঘুমের অব্যর্থ ওষুধ। এ পদ্ধতিতে ঘুমের না এসে উপায় নেই।

মিলিটারি স্লিপ মেথড আসলে কী?

Advertisement

সেনাবাহিনীদের জন্য এই প্রক্রিয়াটি তৈরি করা হয়েছিল, যাতে সারা দিনের পরিশ্রমের পরে সেনাদের ঘুমোনোর অসুবিধা না হয়। বিশ্রামহীন শরীরে লড়াই করার তাকত থাকবে না। আবার যুদ্ধ পরিস্থিতিতে স্নায়ু টানটান থাকলে ঘুমও হবে না। ১৯৮১ সালে লেখা একটি বইয়ে ঘুমোনোর এই প্রক্রিয়ার কথা সবিস্তার লেখা হয়েছিল। বইটির নাম ‘রিল্যাক্স অ্যান্ড উইন’। ব্যস্ত জীবনে যখন ঘুমের জন্য হত্যে দিচ্ছেন মানুষ, তখন সেই পুরনো প্রক্রিয়ারই শরণাপন্ন হচ্ছেন মানুষ।

সম্প্রতি বেশ কিছু যাপন প্রশিক্ষক ইন্টারনেটে, সমাজ মাধ্যমে এই ঘুমোনোর পদ্ধতির পক্ষে কথা বলেছেন। তাঁরা এ-ও বলেছেন যে, ওই পদ্ধতি মেনে তাঁরা সহজেই ঘুমোতে পেরেছেন।

কী ভাবে এই প্রক্রিয়ায় ঘুম আসে?

১। স্বাচ্ছন্দ্য থাকে এমন ভাবে শুয়ে পড়ুন। তার পরে চোখ বন্ধ করে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিন আপনার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে। গভীর ভাবে শ্বাস নিতে থাকুন।

২। মুখের সমস্ত পেশি শিথিল করে দিন ধীরে ধীরে। প্রথমে কপাল, তার পরে গাল , কানের নীচ থেকে থুতনি অবধি, জিভও শিথিল হতে দিন।

৩। এ বার কাঁধ শিথিল করুন। যেন মনে হয় কাঁধের পেশি, হাড় আপনার ঘাড় থেকে আলগা হয়ে বিছানায় সমস্ত ভার ফেলে দিচ্ছে। তার পরে হাতের উপরের অংশ, কনুই থেকে কব্জি এবং শেষে আঙুল গুলিকে শিথিল হতে দিন।

৪। এ বার মন দিন শরীরের অন্য অংশ, অর্থাৎ বুক-পেট কোমর, ঊরু, পায়ের পেশি শিথিল করতে থাকুন। অস্থিসন্ধি যতটা সম্ভব আলগা রাখার চেষ্টা করুন, শিথিল করুন পায়ের আঙুলও। শরীরটা পুরোপুরি ছেড়ে দিন।

৫। শরীর শিথিল করা হলে মনকে চিন্তামুক্ত করার পালা। এমন কিছু ভাবুন, যাতে মনে শান্তি আসে। কোনও দৃশ্য, কোনও স্মৃতি যা মন ভাল করবে। অথবা ১০ সেকেন্ড কিচ্ছুটি না ভেবে শুয়ে থাকুন।

এটি কি আদৌ কার্যকর?

মনে হতেই পারে এ ভাবে ঘুম আসবে না। কিন্তু ‘মিলিটারি স্লিপ মেথড’-এর সঙ্গে মিল রয়েছে ভারতীয় চিকিৎসা শাস্ত্রের যোগনিদ্রার। যা বহু শতক আগে আবিষ্কার হয়েছিল। এর কার্যকারিতার বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও আছে। সেই বিজ্ঞান বলছে, গোটা শরীরের স্নায়ুতন্ত্রকে ধীরে ধীরে বিশ্রাম নেওয়ার অবস্থায় পাঠানো হয় এই পদ্ধতিতে। যা ঘুমের জন্য জরুরি।


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement