সাপ্লিমেন্ট বেশি খেলে কোন বিপদ হতে পারে?
শরীর সুস্থ রাখতে ভিটামিন এবং খনিজ খুব জরুরি, সে কথা জানেন অনেকেই। সে কারণেই দোকানে গিয়ে মাল্টি ভিটামিন কিনছেন? বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে শরীরে ভিটামিন এবং খনিজের মাত্রাও কমতে যায় অনেকেরই। ভিটামিনের অভাব হলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে, ক্লান্তি-দুর্বলতার মতোও লক্ষণ দেখা দিতে পারে। কমে যেতে পারে দৃষ্টিশক্তি। বয়সের এই সমস্যা সমাধানেই দোকানে গিয়ে ইচ্ছামতো সাপ্লিমেন্ট কিনছেন? চিকিৎসকেরা এ নিয়েই উদ্বিগ্ন। ভিটামিন এবং খনিজ যেমন স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী, তেমনই তা ক্ষতিকরও হতে পারে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত মাত্রায় সাপ্লিমেন্ট শরীরে গেলে হিতে বিপরীত হতে সময় লাগবে না। কোন সাপ্লিমেন্ট চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত নয়?
ভিটামিন এ: দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে ভিটামিন এ। কিন্তু এই ভিটামিনই যদি মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায়, তখন তা ক্ষতির কারণ হতে পারে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ-এর নির্দেশিকা বলছে ১৯ বছরের উপরের পুরুষদের জন্য দিনে ৯০০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ যথেষ্ট। মহিলাদের জন্য দরকার ৭০০মাইক্রোগ্রাম। ডিম, দুধ, কুমড়ো, গাজর, পালংশাক-সহ বিভিন্ন খাবারেই এই ভিটামিন মেলে। আদৌ এই ভিটামিনের ঘাটতি হচ্ছে কি না, না জেনেই নিয়মিত সাপ্লিমেন্ট খাওয়া শুরু করলে সমস্যা হতে পারে। বমিভাব, মাথাব্যথা, অস্বস্তির মতো লক্ষণ হতে পারে, এমনকী লিভারের ক্ষতির আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
ভিটামিন ডি: হাড়ের ব্যথা, ক্ষয় হয় ভিটামিন ডি-এর কারণে। সে কারণে কাঁধে, কোমরে, হাঁটুতে ব্যথা হলেই অনেকে কোনও কিছু না ভেবে ভিটামিন ডি খাওয়া শুরু করেন। কিন্তু আদৌ ভিটামিন ডি-র ঘাটতি রয়েছে কি না, বোঝা দরকার। নিয়মিত সাপ্লিমেন্ট খেলে, শরীরে ক্যালশিয়াম জমতে পারে। তা থেকেই হতে পারে হাইপার ক্যালশেমিয়ার মতো সমস্যা। এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে প্রতি মিলিলিটারে ২০ ন্যানোগ্রাম ভিটামিন ডি থাকা দরকার। কিন্তু তা যদি মাত্রার চেয়ে অনেকটা বেড়ে যায়, শরীরে ক্যালসিয়াম জমা হতে থাকে। তা থেকেই হতে পারে হাইপারক্যালসেমিয়া। এর ফলে ধমনীতে সেই ক্যালসিয়াম জমে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়। এর ফলে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসের মতো হার্টের অসুখ হতে পারে। এতে শরীরের প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।প্রভাব পড়তে পারে কিডনিতেও।
আয়রন: আয়রনের ঘাটতি হলে রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে। তখন আয়রন ট্যাবলেট দেন চিকিৎসকেরা। আবার দৈনন্দিন নানা খাবারেও এই খনিজ মেলে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের নির্দেশিকা বলছে, ঊনিশোর্ধ্ব পুরুষের দৈনিক ৮ মিলিগ্রাম এবং মহিলাদের ১৮ মিলিগ্রাম আয়রনের দরকার পড়ে। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের দরকার হয় আরও একটু বেশি। ২৭ মিলিগ্রাম। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দিনের পর দিন আয়রন সাপ্লিমেন্ট খেলেও কিন্তু শরীরে তার খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। আয়রন শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উপায় থাকে না। ফলে অতিরিক্ত পরিমাণে আয়রন ট্যাবলেট খেলে তা জমতে পারে। তার ফলে বিকল হতে পারে প্রত্যঙ্গ।