সাধারন ষষ্ঠভাব থেকে আমরা বা জ্যোতিষরা যে যে বিষয়ে আলোচনা করি, তার মধ্যে প্রথমেই যেটা আসে তা হল স্বাস্থ্য বা রোগ, শোক ও ভোগ। এরপর আসে রিপু মানে ষড় রিপু বা শত্রুতা। মোটামুটি স্বাস্থ্য বা রোগ এবং শত্রু এই ভাব থেকে এই দু’টি প্রধান বিচার। আরও আছে যেমন, সেবা শুশ্রুষা।
এরপর যে যে বিচার আমরা করি, ঋনের বিচার অর্থাৎ ধার পাব কিনা! এই ভাব থেকে আর একটা প্রধাণ বিচার করি, চাকুরীর বিচার। এই ভাব শুভ না থাকলে কোনও দিন চাকুরী পাওয়া যাবে না। এই ভাব থেকে চাকুরীর স্থান বা পরিবেশ কেমন হবে সেটা বোঝা যায়। পদোন্নতির বিচার ও এইভাব থেকে করা হয়।
এই ভাব থেকে আরও যে সব বিচার হয় যেমন, কর্মচারী, চাকর-চাকরানী, খাদ্যভাস মানে কি খাব, কেন খাব, সময়ে খাব না অসময়ে খাব, না উপবাসে থাকব, একদশী করব কি না, কিংবা মাসে কটা রোজা রাখব ইত্যাদি।
যে কোনও রকম বাধা, ভিক্ষা করা বা ভিক্ষা পাওয়া, বাড়িতে পোষ্য প্রানী আছে কিনা, ভাড়াটে, বিমাতা, খেলাধূলো, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি এই সব ষষ্ট ভাব থেকে বিচার করা হয়।
এইভাব থেকে আরও জানা যায় যেমন, ঝাড়ফুঁক, ওঝা, মন্ত্র, বশীকরণ, উচ্চাটন, মারনসহ ষটকর্ম, যাদু, টোনা, ব্ল্যাক আর্ট, সাইকিক সক্রান্ত সমস্ত কিছু প্ল্যানচেট, ইন্দ্রিয়জাল,পরলোকত্তত্ব ইত্যাদি। এক কথায়, এইভাবে রয়েছে সব ধরণের ম্যজিক্যাল ফেনোমেনা। সমস্ত রকম আধিভৌতিক ক্রিয়াকলাপ।
এইভাব থেকে আমরা আর একটা অদ্ভুত শক্তির বিচার করি, যা আমরা এড়িয়েও চলি, সেটি হচ্ছে আমাদের ভিতর যে সুপ্ত শক্তি তার কতটা এ জীবনে উদ্ঘাটন করতে পারব কিনা তার হদিশ জানা।
এই ভাব থেকে আমরা জানতে পারি আমাদের অন্তরে ছ’টা শক্তি সুপ্তভাবে খুব গভীরে বিরাজ করছে, প্রকৃতি অনুযায়ী ও জন্মান্তরের কর্মফল অনুসারে এক একজনের মধ্যে এক বা একাধিক শক্তির বিকাশ ঘটে। সেই ৬ টা শক্তি হলঃ
১) পরাশক্তি
২) জানাশক্তি
৩) ইচ্ছা শক্তি
৪) ক্রিয়া শক্তি
৫) কুন্ডলিনী শক্তি
৬) মাতৃশক্তি
১) পরা শক্তিঃ এই শক্তিও সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাপ ও আলো।
২) জানাশক্তিঃ বুদ্ধি বা মেধা শক্তি, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা। এটা যখন জাগতিক জীবনের সঙ্গে যুক্ত হয়, তখন এটা মনের শক্তি হিসেবে বিকাশ পায়, মানবিক অনুভূতি গুলিকেও বাখ্যা করে, অতীতের স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনে এবং ভবিষ্যতের আশাকে তুলে ধরে। নানা বিণ্যাসের মাধ্যমে আমদের ব্যক্তি স্বাতন্ত্রকে প্রত্যেকের মত করে রূপ দেয়।
৩) ইচ্ছাশক্তিঃ এর অতি পরিচিত রূপ দৃঢ় সংকল্প। আমদের স্নায়ুশক্তি বিশেষ দিকে চালিত করা। ফলে মন তখন পেশী শক্তিকে বিশেষ গঠনে গঠিত করে তোলে যেমন, জুড বা মার্শল আর্ট।
৪) ক্রিয়াশক্তিঃ এটা চিন্তার রহস্যময় শক্তি যা আমরা ভাববো সেটা বাস্তবে রূপ পাবে।
৫) কুন্ডলিনী শক্তিঃ আমদের ভিতর সাইকিক্যাল পাওয়ার সুপ্ত আছে বা আড়ালে থেকে কাজ করে চলেছে।
৬) মাতৃশক্তিঃ প্রত্যেকের মধ্যে একটা ঈষ্ট শক্তি আছে সে জানুক বা না জানুক। প্রত্যেক জন্মান্তরে তাকে জাগিয়ে তোলা।