—প্রতীকী ছবি।
গ্রহ কখনওই গতি পাল্টায় না। জ্যোতির্বিদ্যা এবং জ্যোতিষশাস্ত্রের অধিকাংশ হিসাব পৃথিবীর সাপেক্ষে। কক্ষপথে ঘূর্ণনকালে পৃথিবী থেকে নির্দিষ্ট গ্রহের কৌণিক দূরত্বের পার্থক্যের সঙ্গে সাধারণ দূরত্বেরও পার্থক্য হয়। পৃথিবীর বহির্ভাগের গ্রহ যখন পৃথিবীর কাছাকাছি আসে, তখন নির্দিষ্ট গ্রহকে বক্রগতি প্রাপ্ত বলে মনে হয়। কাছে আসার ফলে গ্রহের ফলদানের ক্ষমতাও বেড়ে যায়। এই কারণে জ্যোতিষশাস্ত্রে বলা হয়, গ্রহ বক্রগতি প্রাপ্ত হলে গ্রহের চেষ্টাবল বৃদ্ধি পায়।
জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, শনি গ্রহের সপ্তম দৃষ্টি ছাড়াও তৃতীয় এবং দশম, দু’টি বিশেষ দৃষ্টি আছে। শনি যে স্থানে অবস্থান করে সেই স্থান ছাড়াও তিনটি স্থানকে প্রভাবিত করে। অর্থাৎ, শনি নিজের অবস্থান-সহ মোট চারটি স্থান বা রাশিকে প্রভাবিত করে।
বক্রগতি প্রাপ্ত গ্রহ যে ঘরে অবস্থান করে, সেই ঘর এবং তার আগের ঘরকে ফল দান করে। অর্থাৎ, বক্রগতি প্রাপ্ত গ্রহ যে ঘরে অবস্থান করে সেই ঘর এবং তার আগের ঘর থেকে তৃতীয়, সপ্তম এবং দশম স্থানের উপরও প্রভাব ফেলে। স্বাভাবিক গতিতে চারটি স্থানকে প্রভাবিত করলেও, বক্রগতিতে অবস্থান কালে আটটি স্থান বা আট রাশিকে প্রভাবিত করে। শনি গ্রহ লগ্ন বা রাশির সাপেক্ষে অবস্থান করে বা দৃষ্টিসম্পর্ক স্থাপন করে অধিকাংশ স্থানেই অশুভ ফল দেয়।
শাস্ত্রমতে, গ্রহদের দুই ভাগে ভাগ করা হয়। নৈসর্গিক শুভ গ্রহ এবং অশুভ গ্রহ। বক্রগতিতে নৈসর্গিক শুভ এবং অশুভ, উভয় গ্রহেরই ফলদানের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যে কারণে শুভ গ্রহ যেমন অধিক শুভ ফল দান করে, তেমনই অশুভ গ্রহের অশুভ ফল দানের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। শাস্ত্রমতে, শনি অশুভ গ্রহ। শুভগ্রহ দৈবিক, দৈহিক এবং ভৌতিক, সকল ক্ষেত্রে শুভ ফল দান করলেও, অশুভ গ্রহ ভৌতিক বিষয়েই বেশি শুভ ফল দান করে। দৈবিক এবং দৈহিক বিষয়ে শুভ ফল খুব একটা দান করে না।
শনি আগামী ১৩ জুলাই ২০২৫, ভারতীয় সময় সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে বক্রগতি প্রাপ্ত হবে। বক্রগতিতে অবস্থান করবে আগামী ২৮ নভেম্বর ২০২৫, সকাল ৯টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত।
শনি মীন রাশিতে ৭ ডিগ্রি ৪৩ মিনিট থেকে ০ ডিগ্রি ৫৬ মিনিট পর্যন্ত বক্রগতি কালে পশ্চাৎগামী হবে এবং উত্তরভাদ্রপদ এবং পূর্বভাদ্রপদ নক্ষত্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবে।