সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে হোর্ডিং কেরল-হাউসের সামনে। শনিবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
শবরীমালা নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডবের মধ্যেই আয়াপ্পা দর্শনের জন্য অনলাইনে আবেদনপত্র গ্রহণের কাজ শুরু করেছে কেরল সরকার। ইতিমধ্যেই প্রায় সাড়ে পাঁচশো মহিলা ভক্ত সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হবে ‘মান্ডলা মকরভিলাক্কু’ যাত্রা। সেই সময় আয়াপ্পা দর্শনের জন্য এখনও পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ সরকারের ওই অনলাইন পোর্টালে আবেদন করেছেন। আবেদনকারীদের মধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচশো মহিলার বয়স ১০ থেকে ৫০-এর মধ্যে।
সু্প্রিম কোর্ট গত সেপ্টেম্বরে রায় দেওয়ার পরেও শবরীমালায় ১০-৫০ বছর বয়সী মহিলাদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা চলছেই। হিন্দুত্ববাদীদের বাধায় এখনও পর্যন্ত ১০-৫০ বছর বয়সী একজন মহিলা ভক্তও মন্দিরে ঢুকতে পারেননি। তার মধ্যেই ৩০ অক্টোবর থেকে আয়াপ্পা-দর্শনের অনলাইন আবেদন নেওয়া শুরু করেছে কেরল সরকার। শনিবার এক পুলিশ কর্তা জানান, শুক্রবার পর্যন্ত জমা পড়া আবেদন খতিয়ে দেখে আগ্রহী মহিলাদের বয়স জানা গিয়েছে।
সরকারি ওই সাইটে বলা হয়েছে, নীলাক্কল থেকে পাম্বা যাওয়ার জন্য কেএসআরটিসি-র বাসের টিকিট ছাড়া ওই ডিজিটাল টিকিট বৈধ নয়। পুলিশ সূত্রের খবর, সাড়ে তিন লক্ষ আবেদনকারীর মধ্যে মাত্র ৪০ হাজার বাসের টিকিট কেটেছেন। প্রসঙ্গত, ওই মহিলারা কিন্তু কেউই বাসের টিকিট কেনেননি এখনও। ওই পুলিশ-কর্তার কথায়, ‘‘কেউ পায়ে হেঁটে যেতে চাইলে আমরা জোর করতে পারি না। যদিও আমাদের উপদেশ, কেএসআরটিসি-র বাসে চেপেই মন্দিরে যান দর্শনার্থীরা।’’
বিজেপি-বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পাশাপাশি একাধিক হিন্দু সংগঠন আয়াপ্পা নিয়ে এখনও তাদের সিদ্ধান্তেই অনড়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেও তারা মাথা নোয়াতে নারাজ। হিন্দুত্ববাদী আয়াপ্পা ধর্ম রক্ষা সমিতি জানিয়েছে, তীর্থযাত্রার ওই ৪১ দিন তারা আয়াপ্পার উদ্দেশে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করবে। পুলিশ জানিয়েছে, কোনও রকম অশান্তির চেষ্টা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অশান্তি বাধানোর অভিযোগে ইতিমধ্যেই কেরল পুলিশ প্রায় হাজার তিনেক হিন্দুত্ববাদীকে গ্রেফতার করেছে। তা নিয়ে কেরল সরকারকে হুমকিও দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই চলতে চান।