ঘটনাস্থলে পুলিশ আধিকারিকেরা। ছবি: সংগৃহীত।
সকাল ৯টা। সবে ব্যাঙ্ক খুলেছে। ঠিক সেই সময়েই এক দল দুষ্কৃতী ব্যাঙ্কে প্রবেশ করে। প্রত্যেকের হাতে দেশি পিস্তল। মাথায় হেলমেট। মুখ কাপড়ে ঢাকা। ঠিক ৯টা ৮ মিনিটে আবার ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়েও এল তারা। মাঝে ঠিক আট মিনিট। এই আট মিনিটেই ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় ১৪ কোটি টাকার সোনা এবং নগদ লুট করে পালাল দুষ্কৃতীরা। মধ্যপ্রদেশের ওই ঘটনায় তাজ্জব বনে গিয়েছেন ব্যাঙ্ককর্মীরাও।
জব্বলপুর জেলা সদর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে সিহোরার খিতোলা গ্রামে এক স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্কের শাখায় হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। যে ভাবে ব্যাঙ্ক লুট হয়েছে, তাতে সন্দেহ করা হচ্ছে দুষ্কৃতীরা আগে থেকেই ব্যাঙ্কটিকে ‘রেকি’ করেছিল। ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বেশ কিছু খামতি রয়েছে। ওই শাখায় কোনও নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না। ব্যাঙ্কে প্রবেশের দরজাও খুলে রাখা ছিল। সাধারণত ব্যাঙ্কের প্রবেশপথে কোলপস্বল গেট থাকে। মধ্যপ্রদেশের এই গ্রামীণ শাখায় সেই ব্যবস্থাও ছিল না। ফলে দুষ্কৃতীরা একপ্রকার বিনা বাধায় ব্যাঙ্কে প্রবেশ করেছিল বলে জানিয়েছেন জব্বলপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সূর্যকান্ত শর্মা।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুষ্কৃতীরা তিন জন ছিল। তারা বাইকে চেপে ব্যাঙ্কে এসেছিল। ব্যাঙ্কে সেই সময় ছ’জন কর্মী ছিলেন। তাঁরা তখন সবে কর্মক্ষেত্রে দৈনন্দিন কাজ শুরু করেছেন। ঠিক সেই সময়েই অতর্কিতে ব্যাঙ্কের ভিতরে প্রবেশ করে দুষ্কৃতীরা। ঢুকেই ব্যাঙ্ককর্মীদের দিকে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি চালানোর হুমকি দেয় তারা। বলা হয়, কেউ চিৎকার করলে বা পুলিশকে ফোন করার চেষ্টা করলেই গুলি করে দেওয়া হবে। এর পরে দুষ্কৃতীদের দাবি মতো ব্যাঙ্কে যেখানে সোনা গচ্ছিত রাখা হয়, সেই জায়গার তথ্য দিয়ে দেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। পরে অবশ্য তিনি বিপদঘণ্টা বাজিয়ে দেন। তবে তত ক্ষণে দুষ্কৃতীরা নিজেদের কাজ হাসিল করে নেয়। সব মিলিয়ে প্রায় ১০-১৫ কেজি সোনা এবং নগদ ৫-৬ লক্ষ টাকা লুট করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
ব্যাঙ্কের ওই শাখায় কোনও নিরাপত্তাকর্মী না থাকার জেরেই অনায়াসে দুষ্কৃতীরা এই কাণ্ড ঘটাতে পেরেছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। সোমবার ওই ঘটনার খবর পেয়েই জব্বলপুরের পুলিশ সুপার সম্পত উপাধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছোন। আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) বিশেষজ্ঞদের একটি দলও ঘটনাস্থলে যায়। ব্যাঙ্ক এবং আশপাশের চত্বরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করে সেগুলি বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে।