জেহানাবাদের স্কুলে গণধর্ষণ!
মায়ের সঙ্গে রোজ স্কুল আসত ১২ বছরের মেয়েটি। স্কুল ছুটির পর মায়ের সঙ্গেই রোজ বাড়ি ফিরে যেত।
মা জেহানাবাদের কাকো উর্দু মধ্য বিদ্যালয় স্কুল শিক্ষিকা। মেয়ের সামান্য মানসিক ভারসাম্যহীনতা থাকায় রোজ তাকে নিয়েই কর্মক্ষেত্রে আসতেন তিনি। কিন্তু, রবিবার টিফিনের আগে ক্লাস থেকে ফিরে মেয়েকে না দেখে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন মা। এমনটা তো হওয়ার কথা নয়!
টিচার্স রুম, স্কুলের মাঠ, অন্য ক্লাসরুম, শৌচাগার— স্কুলের আনাচ-কানাচ খোঁজা হয়। কিন্তু, কোথাও মেয়েটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। সেই সময় নবম শ্রেণির তিন ছাত্রী এসে তাঁকে বলে, ‘‘দিদিমণি, আপনার মেয়ে শুয়ে কাঁদছে।’’ এর পরে ওই শিক্ষিকা স্কুলবাড়ির দোতলার ছাদে গিয়ে দেখেন, ছিন্নভিন্ন এবং অবিন্যস্ত অবস্থায় পড়ে কাতরাচ্ছে তাঁর মেয়ে। মা-কে দেখেও উঠে বসার ক্ষমতা নেই। তিনি ছুটে যেতেই কঁকিয়ে কেঁদে ওঠে সে। ধীরে ধারে সব কথা জানায় মা-কে— প্রিন্সিপাল এবং অন্য তিন শিক্ষক তাকে গণধর্ষণ করেছেন।
আরও পড়ুন- ১২ বছরে ৫০০! নিজেই কবুল করল ধর্ষক
এর পর কাকো থানায় ফোন করা হয়। পুলিশ কর্মীরা ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার ভয়ঙ্কর ট্রমা এখনও সে কাটিয়ে উঠতে পারেনি বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকেরা। গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় তার শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষাও করা হবে। এর পরে জেহানাবাদ মহিলা থানায় স্কুলের প্রিন্সিপাল-সহ ওই চার সহকর্মী শিক্ষকের বিরুদ্ধে মেয়েকে গণধর্ষণের অভিযোগ করেছেন শিক্ষিকা।
জেহানাবাদের এসডিপিও প্রশান্ত শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ওই শিক্ষিকার করা অভিযোগের ভিত্তিতে একটি গণধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে। সেখানে প্রিন্সিপাল অজু আহমেদ এবং অন্য তিন শিক্ষক অতুল রহমান, আব্দুল বারি এবং মহম্মদ শকোয়াতের নাম রয়েছে। পুলিশের দাবি, চার শিক্ষকই পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশের কাছে করা অভিযোগে ওই শিক্ষিকা জানিয়েছেন, এমনিতে রবিবার স্কুল ছুটি থাকে। কিন্তু প্রিন্সিপাল মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলেন, এ বার থেকে শুক্রবার স্কুল বন্ধ থাকবে। তাই, রবিবার খোলা ছিল স্কুল। সেই মতো সকলে স্কুলে আসেন। মেয়েকে নিয়ে অন্য দিনের মতো স্কুলে এসেছিলেন ওই শিক্ষিকা। এর পর টিফিনের আগে ওই কিশোরীকে ছাদে ডেকে নিয়ে যান এক শিক্ষক। সঙ্গে বাকি তিন জনও ছিলেন। এর পর ছাদেই তাকে গণধর্ষণ করা হয়।
বিহারের শিক্ষামন্ত্রী অশোক চৌধুরী মঙ্গলবার বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। কী ভাবে এমনটা ঘটল বুঝতে পারছি না! চার অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন- ‘দঙ্গল’-এর গীতাকে ফেসবুকে ট্রোল, মেহবুবার সঙ্গে দেখা করাই কি ‘অপরাধ’?