Taliban Leader warns Pakistan

শান্তিপূর্ণ পথে কাজ না-হলে অন্য রাস্তাও খোলা রয়েছে! দিল্লিতে বসে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি তালিবান মন্ত্রীর

গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি সেনা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে আকাশপথে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সেখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। শনিবার প্রত্যাঘাত করে তালিবান বাহিনীও।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:১৮
Share:

রবিবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। ছবি: পিটিআই।

শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ না হলে অন্য পথও খোলা রয়েছে। ভারতে বসে এই ভাষাতেই পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন তালিবান নেতা আমির খান মুত্তাকি। শনিবার রাতে পাকিস্তান সীমান্তে একাধিক জায়গায় হামলা চালায় তালিবান বাহিনী। তাতে ৫৮ জন পাক জওয়ান নিহত হয়েছেন বলে দাবি করে কাবুল। ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই দিল্লি থেকে ইসলামাবাদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়ে রাখলেন আফগানিস্তানের তালিবান নেতা।

Advertisement

পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষের বিষয়ে রবিবার বিকেলে তালিবান বিদেশমন্ত্রী জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। একই সঙ্গে তিনি এ-ও বলেন, “আমরা (পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্যার) শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। কিন্তু যদি শান্তিপূর্ণ পথে কাজ না-হয়, তবে অন্য পথও খোলা রয়েছে।” আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পর থেকে এই প্রথম বার ভারত সফরে এসেছেন তালিবান বিদেশমন্ত্রী। আগামী ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতেই আছেন তিনি। রবিবার দিল্লি থেকে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুত্তাকি বলেন, “আলোচনা এবং বোঝাপড়ার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করার নীতিতেই চলে আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরশাহি। আমরা কোনও উত্তেজনা চাই না। যদি তারা (পাকিস্তান), তা তেমন কিছু চায়, তবে আফগানিস্তানের কাছে অন্য উপায়ও আছে।”

গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি সেনা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে আকাশপথে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সেখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। কাবুলের দক্ষিণ-পূর্বে পর পর দু’টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছিল। এই ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগান সার্বভৌমত্বে আঘাতের অভিযোগ আনে তালিবান সরকার। কাবুলের দাবি, ওই হামলারই প্রত্যাঘাত করা হয়েছে শনিবারের হামলায়। দিল্লি থেকে রবিবারের সাংবাদিক বৈঠকে মুত্তাকির বক্তব্য, পাকিস্তানের ‘নির্দিষ্ট একটি অংশ’ এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

Advertisement

আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “পাকিস্তানের জনতা এবং সরকারের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্কই রয়েছে। কিন্তু সে দেশের (পাকিস্তানের) কিছু লোক সমস্যা তৈরির চেষ্টা করছে।” তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তানের জনতা এবং সরকারের বেশির ভাগই শান্তিপ্রিয় মানুষ। তারা আফগানিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়। পাকিস্তানের জনতা বা রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। পাকিস্তানে একটি নির্দিষ্ট অংশ রয়েছে যারা পরিস্থিতি আরও খারাপ করার চেষ্টা করছে।” সরাসরি নামোল্লেখ না-করলেও পাকিস্তানের ‘নির্দিষ্ট একটি অংশ’ বলতে সে দেশের সেনাবাহিনীকেই বোঝাতে চেয়েছেন মুত্তাকি।

শনিবার পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষ প্রসঙ্গে ইতিমধ্যে একটি বিবৃতি জারি করেছে কাবুল। আফগান তালিবানের মুখপাত্র জ়াবিহুল্লা মুজাহিদ ওই বিবৃতিতে বলেন, “আইএসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যেরা পাকিস্তানের মাটিতে লুকিয়ে আছে। পাকিস্তানের উচিত তাদের দেশ থেকে বার করে আমাদের হাতে তুলে দেওয়া। এই আইএস গোষ্ঠী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য আশঙ্কার কারণ। আফগানিস্তানের জন্যেও তাই। যারা অশান্তি করে, তাদের সকলকে আমরা বার করে দিয়েছি। কিন্তু তাদের জন্য পাখতুনখোয়ায় নতুন ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। করাচি ও ইসলামাবাদ বিমানবন্দর দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের জন্য পাকিস্তানে ঢোকানো হচ্ছে।’’

এক দিকে যখন কাবুল থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে, তখন ভারতে বসে পাকিস্তানকে, বিশেষত পাকিস্তান সেনাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন আফগান বিদেশমন্ত্রী। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “আফগানিস্তান নিজের সীমান্ত এবং নিজেদের মানুষকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। আমরা ওদের (পাকিস্তানের) কাজের বদলা নিয়েছি। কাতার এবং সৌদি আরব যুদ্ধ থামানোর জন্য বলেছে। তাই আমরা আমাদের দিক থেকে হামলা বন্ধ করেছি। আমরা সকলের সঙ্গেই সুসম্পর্ক চাই। আমরা আফগানিস্তানে শান্তি এনেছি। আমরা চাই প্রতিটি বিষয় আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হোক। কিন্তু কেউ যদি সেই পথে এগোতে না চায়, তবে নিজের সীমান্ত এবং নিজেদের মানুষকে রক্ষা করার আফগানিস্তানের অধিকারের মধ্যে পড়ে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement