Ahmedabad Plane Crash

অহমদাবাদ দুর্ঘটনার ছ’মাস পরেও পোড়ো বাড়ি হয়ে দাঁড়িয়ে মেঘানিনগরের সেই ছাত্রাবাস! আর আকাশে তাকান না বাসিন্দারা

ছাত্রাবাসের ঘরে দুমড়ে মুচড়ে পড়ে রয়েছে পুড়ে যাওয়া সার সার শয্যা, আসবাব। এদিক-ওদিক জমে রয়েছে কালো ছাইয়ের ঢিবি। কোনও ঘরে পড়ুয়াদের টেবিলে পড়ে রয়েছে ডাক্তারির অর্ধদগ্ধ পাঠ্যবই।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৭:১৭
Share:

অহমদাবাদের মেঘানিনগরে ভেঙে পড়া সেই বিমান। ছবি: এএফপি।

দিন-রাত গমগম করত ছাত্রাবাস। মেঘানিনগরের সেই ছাত্রাবাস এখন শুধুই ধ্বংসস্তূপ। দিনের বেলা কয়েকটা কাক, পাখির ডাক শোনা যায় মাত্র। রাতে পিন পড়লেও আঁতকে ওঠেন রক্ষী। অহমদাবাদের মেঘানিনগরে গ্যাটউইকগামী এয়ার ইন্ডিয়ার সেই বিমান ভেঙে পড়ার পরে কেটে গিয়েছে ছ’মাস। আজও হানাবাড়ি হয়েই দাঁড়িয়ে রয়েছে বিজে মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের ছাত্রাবাসের একাংশ। মেঘানিনগরের মানুষ আজও বিমান উড়লে আকাশের দিকে তাকাতে ভয় পান।

Advertisement

গত ১২ জুন অহমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই পটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওড়ার কয়েক মুহূর্ত পরেই মুখ থুবড়ে মেঘানিনগরের এই ছাত্রাবাসের আছড়ে পড়েছিল বোয়িং বিমান। সে সময় ক্যান্টিনে খেতে বসেছিলেন বহু পড়ুয়া। খাওয়ার টেবিলেই ঝলসে গিয়েছিলেন কয়েক জন। কয়েক জনকে উদ্ধার করা হয়। অতুল্যম-৪ হস্টেল ভবন, সংলগ্ন ক্যান্টিন আজও সে ভাবেই পড়ে রয়েছে।

ছাত্রাবাসের ঘরে দুমড়ে মুচড়ে পড়ে রয়েছে পুড়ে যাওয়া সার সার শয্যা, আসবাব। এদিক-ওদিক জমে রয়েছে কালো ছাইয়ের ঢিবি। কোনও ঘরে পড়ুয়াদের টেবিলে পড়ে রয়েছে ডাক্তারির অর্ধদগ্ধ পাঠ্যবই, আধপোড়া ছেঁড়া অ্যাপ্রন, জামাকাপড়। ভবনের সামনে রাখা গাড়ি, স্কুটারগুলিও জ্বলে পুড়ে খাঁক। ছ’মাস পরেও সেখানেই পড়ে রয়েছে তাদের দেহ, দেহাংশ। সেই ধ্বংসস্তূপে যাতে অনুমতি ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে না পারেন, সে জন্য দিন-রাত মোতায়েন রয়েছেন এক রক্ষী। সেই সঞ্জয়ভাই বলেন, ‘‘গোটা এলাকা এখন সব সময় নিস্তব্ধ থাকে। শুধু মাঝেমধ্যে পাখি ডাকে।’’

Advertisement

মেঘানিনগরের বাসিন্দারা আজও চোখ বুজলে দেখতে পান গ্রীষ্মের দুপুরের সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য। কান পাতলে শুনতে পান, একটা আস্ত বিমান ভেঙে পড়ার শব্দ। ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৬০ জন। হস্টেল থেকে ৫০ মিটার দূরে রয়েছে মহেন্দ্রসিংহ জাডেজার দোকান। ৬০ বছরের প্রৌঢ় বলেন, ‘‘নিজের জীবনে এ রকম ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখিনি। সে দিন দুপুরে খুব গরম ছিল। রাস্তায় লোকজন তেমন ছিলেন না। হঠাৎই শুনলাম সেই ভয়ঙ্কর শব্দ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এখনও আকাশ দিয়ে কোনও বিমান উড়লে তাকাতে পারি না।’’

ওই হস্টেল থেকে ২০০ মিটার দূরে থাকেন মনুভাই রাজপুত। তাঁর কথায়, ‘‘ওই বিমানটি বেশ নীচ দিয়ে চলছিল। আচমকাই বিকট শব্দের পরে চারদিক ঢেকে গেল ধোঁয়ায়।’’ স্থানীয় বাসিন্দা টিনাবেন জানালেন, বিমানবন্দরের কাছে বাড়ি হলেও কোনও দিন নিজেদের অসুরক্ষিত মনে হয়নি। এখন তা-ই লাগে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement