‘ব্লু হোয়েল’ খেলেই কি গলায় দড়ি পড়ুয়ার

শুক্রবার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে একটি গাছ থেকে গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় তাঁকে ঝুলতে দেখা যায়। দেহ উদ্ধারের পর শরীরে কাটা দাগ এবং অন্য সব তথ্য-প্রমাণের সাপেক্ষে পুলিশের অনুমান শশী ‘ব্লু হোয়েল’ খেলে আত্মঘাতী হয়েছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পুদুচেরি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫৮
Share:

—প্রতীকী ছবি।

অনলাইনে মারণখেলা ‘ব্লু হোয়েল’এর শিকার এ বার পুদুচেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শশীকান্ত বরি। হোস্টেলেই থাকতেন শশী। শুক্রবার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে একটি গাছ থেকে গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় তাঁকে ঝুলতে দেখা যায়। দেহ উদ্ধারের পর শরীরে কাটা দাগ এবং অন্য সব তথ্য-প্রমাণের সাপেক্ষে পুলিশের অনুমান শশী ‘ব্লু হোয়েল’ খেলে আত্মঘাতী হয়েছেন।

Advertisement

অসমের বাসিন্দা ১৯ বছরের শশীকান্ত মাস খানেক আগে এমবিএ পড়তে পুদুচেরি পাড়ি দিয়েছিলেন। পরিবার সূত্রের খবর, আগের দিন রাত ১১টা নাগাদ শেষ বারের মতো বাড়িতে ফোন করেছিলেন শশী। তাঁর বাবা রাম বরি জানান, ছেলের কথায় ঘুণাক্ষরেও কিছু টের পাননি তাঁরা। পরিবার এখনও মানতে পারছে না যে ছেলে আত্মঘাতী হয়েছে। পুলিশ অবশ্য ওই পড়ুয়ার ল্যাপটপ মোবাইল ঘেঁটে, বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে, অসমে থাকাকালীনই ‘নীল তিমি’র খপ্পরে পড়েছিলেন শশী। সহপাঠীরা জানিয়েছেন, ইদানীং তেমন কারোওর সঙ্গে মিশতেন না বা কথা বলতেন না ওই পড়ুয়া‌। দিন রাত মোবাইলেই বুঁদ হয়ে থাকতেন। মৃত্যুর আগে ফেসবুকে তাঁর শেষ বার্তা ছিল, ‘‘এই পৃথিবী খুব সুন্দর। কিন্তু তা আমার জন্য নয়। আমিও কারও জন্য জন্মাইনি।’’

আরও পড়ুন: নারদ ‘অপারেশন’-এর যাবতীয় খরচ তাঁরই দেওয়া

Advertisement

দেশ জুড়ে এখন আতঙ্কের নতুন নাম ‘ব্লু হোয়েল’! পর পর পঞ্চাশটি ধাপ পেরিয়ে শেষ ধাপে আত্মহত্যা— মারণখেলা ‘ব্লু হোয়েল’এর খপ্পরে পড়ে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু তাজা প্রাণ ঝরেছে। রোজই প্রায় দেশের কোনও না কোনও জায়গা থেকে আসছে আত্মঘাতী বা জখম হওয়ার খবর। পরিস্থিতি এখন এতটাই জটিল যে বিভিন্ন রাজ্যের নেতা থেকে প্রশাসন— উদ্বিগ্ন সকলেই। এই খেলার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে মাদ্রাজ হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেছে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর তার শুনানি। কয়েক দিন আগে মাদুরাইয়ে এক কিশোর আত্মঘাতী হওয়ার পরে এই বিষয়ে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চেয়ে পিটিশন দাখিল করেন এক আইনজীবী। তার পরেই আদালতের এই পদক্ষেপ।

পর পর মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন। শুক্রবার তিনি জানান, ‘‘ব্লু হোয়েল বন্ধ করতে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। গুগল, ফেসবুক, হোয়াট্সঅ্যাপ, ইন্সটাগ্রাম, মাইক্রোসফ্‌ট, ইয়াহুর মতো জনপ্রিয় সাইট ইতিমধ্যেই তা নিষিদ্ধ করেছে।’’

রাজ্যে সতর্কতা জারি করেছে ওডিশা প্রশাসন। পুলিশ জানিয়েছে, স্কুল বা কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে ‘ব্লু হোয়েল’ খেলার প্রবণতা ছড়াচ্ছে। জেলায় জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অভিভাবকদের সচেতনতা বাড়াতে তাই প্রচার চালানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন