খুঁটিনাটি: হাতিসুমারিতে জিপিএস ব্যবহার শেখাচ্ছেন বনকর্তারা। —নিজস্ব চিত্র।
হাতিসুমারি শুরু হল মঙ্গলবার থেকে। পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড ও ছত্তীসগঢ়— এক সঙ্গে চার রাজ্যে হাতি গণনার কাজ হচ্ছে এ বার। যাঁরা এই গণনার কাজ করবেন, প্রথমদিনে তাঁদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। তাঁদের খুঁটিনাটি বুঝিয়ে দিয়েছেন বন দফতরের আধিকারিকেরা।
জঙ্গল ভাল চেনে, অভিজ্ঞ এমন চারজন করে লোক নিয়ে এক-একটি দল গড়া হয়েছে। প্রত্যেকটি দলে রয়েছেন এক-একজন নেতা। জঙ্গলে চারজনের এই দল হাতিসুমারির কাজ করবে। পিছেন হুলাপার্টি-সহ ‘ব্যাক আপ টিম’ তৈরি থাকবে। যদি হাতি গণনা চলাকালীন কোনও ধরনের বিপদ হয়, তাহলে এই দলের সদস্যরা জঙ্গলে গিয়ে গণনাকারী দলের লোকজনকে সাহায্য করবে।
হাতিসুমারির কাজে কোনও রকম ঝুঁকি নিতে নিষেধ করা হয়েছে। দলের সদস্যদের বন দফতরের আধিকারিকেরা ভাল করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সুমারি চলাকালীন জঙ্গলের ছবি মোবাইলে তুলে ফেসবুকে দেওয়া যাবে না, কোনও অবস্থাতেই সেলফি তোলা যাবে না।
এই মুহূর্তে হাতির সংখ্যা জানতেই ভারত সরকারের অধীন ‘প্রজেক্ট এলিফ্যান্ট’-এর উদ্যোগে হচ্ছে এই হাতিসুমারি। ২০১০ সালে সর্বশেষ হাতিসুমারি হয়েছিল। বন দফতর ছাড়াও বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘বন্ড’ দিয়ে গণনার কাজে যোগ দিয়েছে। হাতি গণনার দলে থাকা লোকজন খুব প্রয়োজন না হলে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। মোবাইল ‘সাইলেন্ট’ করে রাখতে হবে। ফেসবুকে হাতির ছবি বা তথ্য পোস্ট করা যাবে না।
মঙ্গলবার দুপুরে গণনাকারীরা নির্দিষ্ট এলাকায় পৌঁছে গিয়েছেন। গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস)-এর মাধ্যমে বিকেলে জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় মার্কিং চলেছে। আজ, বুধবার সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে চারজনের দল জঙ্গলে গিয়ে ‘এলিফ্যান্ট ডিস্ট্রিবিউশন ম্যাপিং’-এর কাজ করবে। জঙ্গলে গিয়ে হাতি দেখা, গণনা করা, পায়ের ছাপ নেওয়া প্রভৃতি হবে। বৃহস্পতিবার হবে ‘ফিক্সড্ স্পট সাইটিং’। হাতি যেখানে জল খেতে আসে সেখানে উঁচু মাচা বেঁধে হাতি গণনা করা, ছবি তোলা হবে।। শুক্রবার ‘ডাঙ্গ কাউন্টিং মেথড’-এ হাতির মলের নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
চার দিনে সংগৃহীত যাবতীয় তথ্য বন দফতরে জমা দেওয়া হবে। হাতিশুমারির মেদিনীপুর জেলার নোডাল অফিসার তথা ডিএফও মেদিনীপুর রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, ‘‘জঙ্গলে গণনার কাজে যাওয়া দলের সাথে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।’’ বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, হাতিসুমারির কাজ সরেজমিনে দেখতে আজ, বুধবার কলকাতা থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আসবেন চিফ কনজারভেটর অফ ফরেস্ট ( সি সি এফ) নীরজ সিঙ্ঘল।