ভারতীয় নভশ্চর শুভাংশু শুক্ল। — ফাইল চিত্র।
শুভাংশু শুক্ল এবং তাঁর তিন সঙ্গীর মহাকাশ অভিযানের দিন ফের পিছোল। এর আগেও পাঁচ বার বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে গিয়েছে শুভাংশুদের অভিযান ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’। শেষমেশ স্থির হয়েছিল, সব ঠিকঠাক থাকলে বৃহস্পতিবার ওই অভিযান হতে পারে। কিন্তু তার আগের দিন নাসা জানাল, বৃহস্পতিবারও অভিযান হচ্ছে না।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। সে কারণেই বৃহস্পতিবার যাচ্ছেন না শুভাংশুরা। পরিবর্তে আগামী ২২ জুন, শনিবার ওই অভিযান হবে। অ্যাক্সিয়মের তরফেও বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের এভেজ়দা সার্ভিস মডিউলে মেরামতি হয়েছে সদ্য। সব আগের মতো ঠিকঠাক চলছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য আরও কিছুটা সময় দরকার নাসার বিজ্ঞানীদের। সব কিছু ভাল করে পর্যালোচনার পরেই শুভাংশুদের সেখানে পাঠানো হবে।
প্রথমে ২০২৫ সালের ২৯ মে শুভাংশুদের অভিযান শুরু হওয়ার কথা ছিল। পরে তা পিছিয়ে ৮ জুন করা হয়। ‘ড্রাগন’-এ ইলেক্ট্রিক্যাল হারনেসের সমস্যার কারণে সে বার পিছিয়ে গিয়েছিল অভিযান। ৮ জুন খারাপ আবহাওয়ার কারণে অভিযান বাতিল করতে হয়। পর দিন, অর্থাৎ ৯ জুন অভিযানের দিন ঠিক করা হয়। সে দিনও ফ্যালকন-৯ রকেটের প্রস্তুতি শেষ না হওয়ার পিছিয়ে গিয়েছিল অভিযান। খারাপ আবহাওয়া এবং প্রযুক্তিগত গোলযোগের কারণে ১০ জুনও অভিযান হয়নি। এর পরে অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযানের দিন পিছিয়ে ১১ জুন করা হয়। কিন্তু উৎক্ষেপণের ঠিক আগে মহাকাশযানের ‘ফায়ার বুস্টার’ পরিদর্শনের সময় দেখা যায় যে রকেটে ‘এলওএক্স’ লিক করছে। অর্থাৎ রকেটে তরল অক্সিজেন লিক করছে। সে কারণে পিছিয়ে যায় মহাকাশযাত্রা।
অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযানে পাইলটের ভূমিকায় রয়েছেন লখনউয়ের ছেলে শুভাংশু। শুভাংশু ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন। রাকেশ শর্মার চার দশক পরে দ্বিতীয় ভারতীয় হিসাবে মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছেন তিনি। মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে ‘অ্যাক্সিয়ম-৪’-কে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ, এই অভিযানেই প্রথম বার উড়তে চলেছে ‘ড্রাগন’। চার সদস্যের এই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শুভাংশু। তিনিই মহাকাশযানটি পরিচালনা করবেন। পূর্বে এএন-৩২, জাগুয়ার, হক, মিগ-২১, সু-৩০-সহ নানা ধরনের যুদ্ধবিমান চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে শুভাংশুর। কিন্তু মহাকাশযান এই প্রথম! এ জন্য দীর্ঘ দিন ধরে স্পেসএক্স এবং ‘অ্যাক্সিয়ম স্পেস ইনকর্পোরেশন’-এর কাছে প্রশিক্ষণও নিতে হয়েছে তাঁকে। ১৪ দিন ধরে শুভাংশুরা আইএসএসে থাকবেন, বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন। নাসা এবং ইসরোর যৌথ উদ্যোগে দলটি এই কাজ করবে।