প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। -ফাইল ছবি।
‘গাঁধী’ না ‘বঢরা’— হামলা কোন পথে? কতটাই বা?
প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে নিয়ে প্যাঁচে পড়া বিজেপি এখন কৌশল ঠিক করতেই হিমশিম খাচ্ছে।
বুধবার দুপুরে প্রিয়ঙ্কাকে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের জন্য এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ করে এক অস্ত্রেই নরেন্দ্র মোদীর একাধিক হাতিয়ারকে ভোঁতা করে দিয়েছেন রাহুল গাঁধী। প্রবাসী ভারতীয় দিবস নিয়ে ধুমধাম, প্রয়াগরাজের কুম্ভ, রামমন্দির— সব ছাপিয়ে গিয়েছে প্রিয়ঙ্কার অভিষেক। ফেব্রুয়ারির গোড়ায় উত্তরপ্রদেশে প্রিয়ঙ্কা পা রাখার আগেই বিজেপিকে ভাবতে হচ্ছে, কোন পথে আক্রমণ করা হবে তাঁকে। ‘গাঁধী’ পরিবারের সূত্র ধরে? না কি স্বামী রবার্ট বঢরার দুর্নীতির অভিযোগ ফের উস্কে দিয়ে?
বিজেপির ভয়ের জায়গা অন্য। অতীতে প্রিয়ঙ্কাকে যত বার আক্রমণ করা হয়েছে, ইটের বদলে পাটকেল খেতে হয়েছে বিজেপিকে। এ বারে তাই সমঝে চলছে তারা। আজই দিল্লি, গুরুগ্রাম, রোহতক, মোহালি, চণ্ডীগড়ের মতো তিরিশটি জায়গায় সিবিআই হানা হয়েছে হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার বিরুদ্ধে। ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ১৪১৭ একর জমি বেআইনি ভাবে নিয়ে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগে। সিবিআইয়ের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই হানা। কিন্তু কংগ্রেসের বক্তব্য, প্রিয়ঙ্কা আসার পরেই বার্তা দিচ্ছেন মোদী-অমিত শাহ। অচিরেই এই মামলায় রবার্টের নামও জড়াবে সিবিআই।
দিল্লি থেকে এখনই না হলেও বিভিন্ন রাজ্যের নেতাদের দিয়ে রবার্টের নাম জড়িয়ে প্রিয়ঙ্কাকে আক্রমণ করিয়ে জল মাপছেন বিজেপি নেতৃত্ব। যেমন, বিহারের বিজেপি নেতা সুশীল কুমার মোদী আজ বলেন, ‘‘প্রিয়ঙ্কা তো বঢরার প্রতিনিধি হয়ে এসেছেন! ভালই হল, এর ফলে রবার্ট বঢরার বিষয়টি আরও বেশি করে সামনে আসবে। আসলে কংগ্রেস তো উত্তরপ্রদেশে কোণঠাসা হয়ে এসপি-বিএসপিকে হুমকি দিতে চাইছে।’’
আবার বিহারেরই আর এক মন্ত্রী বিনোদ নারায়ণ ঝা বলে বসলেন, ‘‘জমি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত রবার্ট বঢরার স্ত্রী প্রিয়ঙ্কা সুন্দরী। এ ছাড়া রাজনীতিতে আর কোনও সাফল্য নেই।’’ বিজেপি বুঝতে পারছে, প্রিয়ঙ্কা আসরে নামলেই এ সবের জবাবদিহি চাইবেন মোদীর কাছে।
কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা আজই বলে রেখেছেন, ‘‘এমন নিকৃষ্ট মানসিকতা বিজেপিরই আছে। প্রধানমন্ত্রীকে এর জবাব দিতে হবে। আর মোদী-অমিত শাহের বদলার রাজনীতির হাত ধরে সিবিআইয়ের যে অফিসারেরা আইনের ঊর্ধ্বে গিয়ে কাজ করছেন, তাঁরা যেন মনে রাখেন, এই সরকার ক্ষণস্থায়ী। কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরে সব কিছুর বদল হবে।’’ বিজেপি আনন্দ শর্মার মন্তব্যের শুধু এই অংশের সমালোচনা করে বলেছে, কংগ্রেস কী করে সিবিআই অফিসারদের হুমকি দিতে পারে?