বিএসএফের সাংবাদিক বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর নতুন ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আনল সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার প্রতিবাদে গত ৭ মে গভীর রাতে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করেছিল ভারত। তার পর থেকে একে একে হামলা চালানো হয় সীমান্ত-লাগোয়া পাক সেনাঘাঁটিগুলিতেও। মঙ্গলবার প্রকাশ্যে এসেছে সেই ভিডিয়োই।
বিএসএফের প্রকাশ্যে আনা ওই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, ভারতের গুলিবর্ষণের মুখে প্রাণভয়ে পালাচ্ছেন পাক রেঞ্জারেরা। মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই ভিডিয়োয় পাকিস্তানের সীমান্তের প্রায় ২.২ কিলোমিটার অভ্যন্তরে অবস্থিত তিনটি জঙ্গিঘাঁটিতে ভারতের সশস্ত্রবাহিনীর ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’-এর মুহূর্ত দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি, সীমান্তের ও পারে অবস্থিত পাক সেনার ঘাঁটিগুলিতেও আক্রমণের দৃশ্য প্রকাশ্যে এনেছে বিএসএফ।
বিএসএফের জম্মু ফ্রন্টিয়ারের ইন্সপেক্টর জেনারেল শশাঙ্ক আনন্দ বলেন, ‘‘পহেলগাঁও কাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় শত্রুদের একাধিক ঘাঁটি ধ্বংস করেছে ভারত। আন্তর্জাতিক সীমান্তে এবং নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর একাধিক অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টাও প্রতিহত করা হয়েছে। ভারতের আক্রমণের মুখে পাক রেঞ্জারেরা তাঁদের ঘাঁটি থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। অথচ, বিএসএফের পুরুষ ও মহিলা উভয় দলই তাদের অবস্থানে অনড় থেকেছে। এমনকি, কাঁটাতারের ও পারের পোস্টগুলিতেও পাহারা দিয়েছেন আমাদের জওয়ানেরা।’’
বিএসএফ জানিয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর ৮ মে থেকেই সীমান্তে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। তৎপরতার সঙ্গে মাঠে নামে বিএসএফ-ও। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ধারাবাহিক ভাবে আগাম হামলা চালায় বিএসএফ। আইজি শশাঙ্কের কথায়, ‘‘আমরা ৯ এবং ১০ মে রাতে সীমান্তের কাছে লশকরের লুনি লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করেছি। আরএস পুরা সেক্টরের কাছে মাস্তপুর নামে আর একটি লঞ্চপ্যাডেও হামলা হয়। অভিযানের সময় পাকিস্তানি রেঞ্জারেরা প্রাণভয়ে পালাচ্ছিলেন। ক্যামেরায় সেই দৃশ্য ধরা পড়েছে।’’
৮ মে পাক হামলার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন বিএসএফের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল এসএস মান্ড। তিনি জানান, ওই দিন ৪০-৫০ জন জঙ্গির একটি বিশাল দলকে সীমান্তের দিকে অগ্রসর হতে দেখা যায়। এর পরেই দ্রুত পদক্ষেপ করে বিএসএফ। ডিআইজি মান্ডের কথায়, ‘‘এর পরেই বিএসএফের ঘাঁটি লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে পাকিস্তান, যার যোগ্য জবাব আমরা দিয়েছি। আমাদের হামলায় অনেক জঙ্গি ও তাদের সমর্থকদের পাশাপাশি পাক রেঞ্জার এবং অফিসারেরাও আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের হামলায় প্রাথমিক ভাবে বিএসএফের কোনও ক্ষতি না হলেও পরে ১০ মে-র ড্রোন হামলায় দুই বিএসএফ জওয়ান এবং এক সেনা নিহত হয়েছেন। বিএসএফ জানিয়েছে, ‘শহিদ’দের সম্মান জানাতে তাদের দু’টি ঘাঁটির নাম দুই জওয়ানের নামে করবে বিএসএফ। আর একটি পৃথক ঘাঁটির নাম রাখা হবে ‘সিঁদুর ঘাঁটি’। এ বিষয়ে শীঘ্রই সরকারের কাছে প্রস্তাবও পাঠাবে তারা।