(বাঁদিকে) আইবি প্রধান তপনকুমার ডেকা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (ডানদিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের দু’দিন সর্বদল বৈঠকে গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা কবুল করেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। কিন্তু কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগ (ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো বা আইবি)-এর ডিরেক্টর তপনকুমার ডেকার কার্যকালের মেয়াদ আবার এক বছর বাড়িয়ে দিল কেন্দ্র!
১৯৮৮ ব্যাচের আইপিএস ডেকার ২০২৪ সালের ৩০ জুন অবসর নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত ২৪ জুন তাঁর কার্যকালের মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিল। সেই হিসেবে চলতি বছরের ৩০ জুন তাঁর কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় কর্মী ও কর্মিবর্গ মন্ত্রক মঙ্গলবার আরও এক বছরের জন্য ডেকার মেয়াদ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই প্রকাশিত রিপোর্ট জানাচ্ছে।
হিমাচল প্রদেশ ক্যাডারের আইপিএস ডেকা ২০২২ সালের ১ জুলাই পরবর্তী দু’বছরের জন্য আইবির প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ‘সন্ত্রাস দমন বিশেষজ্ঞ’ হিসাবে পরিচিত এই অফিসারের নেতৃত্বেই গত তিন বছরে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন এবং সিপিআই (মাওবাদী) নেটওয়ার্ক অনেকাংশে ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর। সে কারণেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটি তাঁর কার্যকালের মেয়াদ বাড়াল বলে সরকারের একটি সূত্র জানাচ্ছে।
যদিও কাশ্মীরে সন্ত্রাস দমনে আইবির ভূমিকা নিয়ে পহেলগাঁও কাণ্ডের পর বিরোধীরা প্রকাশ্যেই সরব হয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগে ‘দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট (১৯৪৬)’ এবং ‘সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন অ্যাক্ট (২০০৩)’ অনুযায়ী আইবি প্রধানের কার্যকালের মেয়াদ ছিল দু’বছর। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর সরকারের আমলের নতুন আইন অনুযায়ী তিন দফায় আরও এক বছর করে মেয়াদ বাড়ানো যাবে দেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা শীর্ষ আধিকারিকদের। আইবি প্রধান পদে ডেকার পূর্বসূরি অরবিন্দ কুমারের কার্যকালের মেয়াদও এক বছর বাড়িয়েছিল মোদী সরকার। ডেকা প্রথম দ্বিতীয় বারের ‘এক্সটেনশন’ পেলেন।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকার সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৫ জন পর্যটক আর কাশ্মীরের ভূমিপুত্র এক টাট্টুওয়ালার খুনের পরে গোটা দেশ যখন ক্ষোভে ফুটছে, তখন সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল মোদী সরকার। যদিও প্রধানমন্ত্রী হাজির ছিলেন না ওই বৈঠকে। প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি, সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা মেনে নিয়ে বলেছিলেন, “যদি কিছু ভুল না-ই হয়ে থাকে, তা হলে আমরা এখানে বসে আছি কেন? কোথাও না কোথাও ব্যর্থতা রয়েছে, সেটিই খুঁজে বার করতে হবে।” সূত্রের দাবি, জঙ্গিরা আগেই পহেলগাঁওয়ের জায়গাটি দেখে গিয়েছিল। গোপনে সহযোগিতা নিয়ে অস্ত্র জোগাড় করেছিল। হামলা চালানোর সময় জঙ্গিদের ভেস্টে লাগানো ছিল ক্যামেরা। হামলার সময়ের ছবি তুলেছিল তারা। অর্থাৎ গোটাটাই সুপরিকল্পিত! এখানেই প্রশ্ন উঠছে, জঙ্গিদের এত পরিকল্পনার বিন্দুমাত্র খোঁজই কেন পেল না আইবি এবং গুপ্তচর সংস্থা ‘র’।