মমতাকে চাই, তিন তালাক নিয়ে ফোন মন্ত্রীর

বিজেপি সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এই বিষয়ে কথা বলেছেন খোদ মমতার সঙ্গে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০৫
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

সংসদে তিন তালাক বিল পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement

বিজেপি সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এই বিষয়ে কথা বলেছেন খোদ মমতার সঙ্গে। কিন্তু বিলটিকে সমর্থনের ব্যাপারে সরাসরি সমর্থনের কোনও আশ্বাস পাননি তিনি। কেন্দ্র প্রথমে ঠিক করেছিল, আগামী কালই লোকসভায় তিন তালাকের বিলটিকে নিয়ে আসবে। কিন্তুটু-জি মামলায় যে ভাবে দুর্নীতিমুক্ত হয়ে কংগ্রেস হাঙ্গামার তীব্রতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে, সে কারণে আপাতত আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত সেটি পিছিয়ে দিয়েছে সরকার। যদিও সংসদীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমারের যুক্তি, সাংসদরা যাতে বিলটি পুরোদস্তুর পড়ে নিতে পারেন, তার জন্যই বাড়তি সময় দেওয়া হল।

কিন্তু ঘটনা হল, সরকার যে বিলটি নিয়ে আসছে, তাতে আপত্তি রয়েছে বিরোধীদের অনেকের। এক দফায় বা অন্য কোনও অবৈধ ভাবে তিন তালাক দিলে তিন বছরের জেলের কথা বলা থাকছে বিলে। সুপ্রিম কোর্ট এই ধরনের তালাককে আগেই অবৈধ ও অসাংবিধানিক অ্যাখ্যা দিয়েছে। কিন্তু আইনে যাতে কোনও ফাঁকফোকর না থাকে, তারজন্য একটি পাকাপোক্ত ব্যবস্থারই পক্ষপাতী মোদী সরকার।

Advertisement

কিন্তু এই বিলটি সংসদে নিয়ে আসার আগে সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গেই আলোচনা করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকালই সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছেন, মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের সঙ্গে এই নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। ল’ বোর্ড সেটি নিয়েই আপত্তি তুলে বলছে, যাঁদের নিয়ে এই আইন হচ্ছে, সরকার তাঁদের সঙ্গেই কোনও কথা বলছে না।

তিন তালাক বিল সংসদে পেশ হওয়ার আগে তৃণমূলের তরফে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। তবে কলকাতায় আজ জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সমাবেশের অবসরে ওই সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যের তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী জানিয়েছেন, ওই বিল নিয়ে আগামী ২৭ ডিসেম্বর উত্তরপ্রদেশে পার্সোনাল ল’ বোর্ডের বৈঠক রয়েছে। বিল নিয়ে কী করণীয়, তার রূপরেখা সেখানেই ঠিক হবে।

যদিও সরকারের পক্ষ থেকে আজ দাবি করা হয়েছে, প্রতিটি রাজ্য সরকার ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৭-৮ টি রাজ্য সায়ও দিয়েছে। সরকারের আশা, মমতা যদি এই বিলের বিরোধিতাও করেন, তা হলে তার মাত্রা এমন পর্যায়ে নিয়ে যাবেন না, যাতে বিলটির ভবিষ্যৎই প্রশ্নের মুখে পড়ে। কংগ্রেসের বক্তব্য, তিন তালাক নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় আসার পরে দল সেটিকে স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু যখন মানুষের কোনও কাজকে ফৌজদারি অপরাধের তালিকায় ফেলা হচ্ছে, তখন শীর্ষ আদালতের রায়ের সঙ্গে বিলের সামঞ্জস্য আছে কি না, তা খতিয়ে দেখেই সমর্থনের বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগেই তিন তালাক নিয়ে ভোট প্রচারে সরব হন নরেন্দ্র মোদী। গুজরাতের ভোট প্রচারে গিয়ে মোদী নিজেই বলেন, অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন উত্তরপ্রদেশে তিন তালাক নিয়ে বললে বিরূপ পরিণাম হবে। কিন্তু মহিলাদের অধিকারের বিষয়ে সরকার পিছু হঠবে না। বিজেপি সূত্রের মতে, আসলে তিন তালাক নিয়ে সরব হওয়ায় মুসলিম মহিলাদের একটি অংশের সমর্থনও পাচ্ছে বিজেপি। সমাজের যে অংশের ভোট বিজেপি সচরাচর প্রত্যাশা করত না। পরের ভোটে হিন্দুত্বের পাশাপাশি এই বিষয়টিকেই প্রচারের হাতিয়ার করে এগোতে চাইছে বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন