(বাঁ দিকে) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময়ে পাকিস্তানকে সাহায্য করেছিল চিন! ভারতীয় সেনার ডেপুটি চিফ অফ আর্মি স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর সিংহের এই দাবি নস্যাৎ করল বেজিং। ইসলামাবাদকে তাদের ‘ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী’ বলে দাবি করে বেজিং জানাল, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা স্বাভাবিক, কিন্তু কোনও ‘তৃতীয় পক্ষকে লক্ষ্য’ করা তাদের উদ্দেশ্য নয়!
দিন তিনেক আগে ভারতীয় সেনার ডেপুটি চিফ অফ আর্মি স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল দাবি করেন, ভারতের সঙ্গে সংঘাতের সময়ে দু’টি দেশ পাকিস্তানকে সহায়তা করছিল। ভারতের প্রতিবন্ধকতা আরও বেড়ে গিয়েছিল তার জন্য। সাহায্যকারী দেশগুলির মধ্যে প্রথমেই ছিল চিনের নাম। রাহুলের এই দাবি প্রসঙ্গে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, ‘‘আপনার সঙ্গে আমরা একমত নই। চিন এবং পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী। প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক। তবে তা কখনই কোনও তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে নয়।’’
শুধু তা-ই নয়, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংলাপ এবং পরামর্শের মাধ্যমে দুই দেশের মতপার্থক্য দূর করে মৌলিক সমাধান খোঁজার বিষয়টিকে চিন সর্বদা সমর্থন করে বলে দাবি করেন মাও। তাঁর কথায়, ‘‘এই বিষয়ে চিন গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে আগ্রহী। এটাই চিনের নীতি।’’
উল্লেখ্য, এক সাক্ষাৎকারে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ভারতীয় সেনার ডেপুটি চিফ অফ আর্মি স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল বলেন, ‘‘আমাদের সামনে একটা সীমানা ছিল। প্রতিপক্ষ ছিল দু’জন, আসলে তিন জন। পাকিস্তানই সামনে ছিল। তাদের সব রকম সাহায্য করছিল চিন। পাকিস্তানের ৮১ শতাংশ মিলিটারি হার্ডঅয়্যার চিন থেকে আসে। অস্ত্রও চিনের। আসলে পাকিস্তানের মাধ্যমে নিজেদের অস্ত্রের শক্তিপরীক্ষা করে নেয় চিন। পাকিস্তানকে ওরা লাইভ ল্যাব (গবেষণাগার) হিসাবে ব্যবহার করে।’’ সেই দাবি উড়িয়ে দিলেন চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৫ সাল থেকে পাকিস্তানে ৮০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে চিন। ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে অস্ত্র রফতানিকারক দেশ হিসাবে সারা বিশ্বে চতুর্থ স্থানে ছিল তারা। এই রফতানির ৬৩ শতাংশই গিয়েছিল পাকিস্তানে। পাকিস্তানই চিনের অস্ত্রের সবচেয়ে বড় খরিদ্দার। পাকিস্তান যে যুদ্ধবিমানগুলি ব্যবহার করে, ভারতের সঙ্গে সংঘাতের সময়ে যেগুলি ব্যবহার করা হয়েছে, তার অধিকাংশও চিন থেকে এসেছে। এমনকি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পরোক্ষ ভাবে স্বীকার করে নিয়েছিলেন ভারত-পাক সংঘাতের সময় চিন ‘গোয়েন্দা তথ্য’ সরবরাহ করে সাহায্য করেছিল! তবে পাক দাবির পরেও চিন নিজেদের অবস্থানে অনড়।