দুর্নীতি-নালিশে আয়কর নোটিস পেল কংগ্রেস

তাৎপর্যপূর্ণ হল, হায়দরাবাদের যে সংস্থার থেকে কংগ্রেস কালো টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ, সেই সংস্থার মালিক তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-এর ঘনিষ্ঠ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৫৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

আয়কর দফতর, ইডি-র হেনস্থায় শিল্পমহল আতঙ্কিত বলে অভিযোগ তুলেছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তার পরে এ বার কংগ্রেসকেই নোটিস ধরাল আয়কর দফতর। হায়দরাবাদের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ও পরিকাঠামো সংস্থার কাছ থেকে হাওয়ালা লেনদেনের মাধ্যমে কং‌গ্রেস ১৭০ কোটি টাকা নিয়েছে, এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই সোমবার রাতের এই ‘শো-কজ’ নোটিস। কংগ্রেসের কাছে এই অভিযোগের ব্যাখ্যা চেয়েছে আয়কর দফতর।

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণ হল, হায়দরাবাদের যে সংস্থার থেকে কংগ্রেস কালো টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ, সেই সংস্থার মালিক তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-এর ঘনিষ্ঠ। অন্ধ্র বা তেলঙ্গানায় এই মুহূর্তে কংগ্রেস তেমন কোনও রাজনৈতিক শক্তি নয়। কেন্দ্রেও তারা সরকারে নেই। তা হলে সেখানকার একটি সংস্থা কংগ্রেসকে কেন এত টাকা চাঁদা দেবে, সে প্রশ্ন উঠেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে এ নিয়ে হইচই হলেও কংগ্রেসের তরফে কোনও জবাব মেলেনি। কংগ্রেস নেতৃত্ব কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছে।

রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, আয়কর দফতরের নিশানা আসলে কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ আহমেদ পটেল। রাহুল গাঁধীর পরে কংগ্রেস সভাপতি পদে সনিয়া গাঁধীর প্রত্যাবর্তনে যিনি এখন দলের যে কোনও সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছেন। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, অক্টোবর মাসে এআইসিসি-র দীর্ঘদিনের কোষাধ্যক্ষ ম্যাথু ভার্গিসের কোচির বাড়িতে গিয়েও আয়কর দফতরের কর্তারা তল্লাশি চালিয়েছে। দিল্লি থেকে একটি বিশেষ দলকে এর জন্য কোচিতে পাঠানো হয়েছিল। বৃদ্ধ ম্যাথুকে মূলত কোষাধ্যক্ষ আহমেদ পটেলের আর্থিক লেনদেন নিয়ে জেরা করে দলটি। আজ রাজ্যসভায় বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এসপিজি বিল নিয়ে আলোচনার সময় মন্তব্য করেন, ‘‘আমি চাই, গাঁধী পরিবারের সকলে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকুন। কারণ আমি ওঁদের জেল যাত্রা দেখতে চাই।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘নাগরিকত্ব বিল কী, বুঝুন’

আয়কর দফতর সূত্রের বক্তব্য, অক্টোবর মাসে দিল্লি, মুম্বই ও হায়দরাবাদে কালো টাকা ও ৩,৩০০ কোটি টাকার হাওয়ালা চক্রের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হয়। সে সময়েই হায়দরাবাদের মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার-এর দফতরে তল্লাশি চালিয়ে দেখা যায়, কর ফাঁকির কালো টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের কোষাগারে গিয়েছে। মূলত গরিবদের জন্য সরকারি প্রকল্পের বরাত পাওয়ার পরে ভুয়ো বিল তৈরি করে কালো টাকা আয় করেছে সংস্থাটি। তার পরে সে টাকার একাংশ রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দেওয়া হয়েছে। আয়কর কর্তাদের বক্তব্য, এ বিষয়ে কংগ্রেসের পদস্থ নেতাদের ৪ নভেম্বর সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসের কোনও নেতাই হাজির হননি। তার পরেই নোটিস পাঠানো হয়। শুধু কংগ্রেস নয়। ওই সংস্থাটি অন্ধ্রপ্রদেশের এক জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নগদে ১৫০ কোটি টাকা দিয়েছিল বলে আয়কর দফতর সূত্রের বক্তব্য। ইনি তেলুগু দেশম পার্টির এক জন শীর্ষ স্তরের নেতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন