গোটা দেশের মানুষের প্রার্থনা যেন সফল হল!
টানা দু’মাস কোমায় থাকার পর জ্ঞান ফিরেছে সিআরপিএফ কম্যান্ড্যান্ট চেতন কুমার চিতার। তিনি কথাও বলেছেন বলে এইমস সূত্রে খবর। তাঁর কোমা থেকে ফিরে আসাটা ‘অলৌকিক’ ঘটনা ছাড়া আর কিছু নয় বলেই মনে করছেন চিকিত্সকরা। ট্রমা সার্জারি অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ার সেন্টার-এর অধ্যাপক চিকিত্সক অমিত গুপ্ত বলেন, “আমরা বুধবারই চিতাকে বাড়ি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
চিতার স্ত্রী উমা সিংহ বলেন, “আমার স্বামী খুব দৃঢ় মনের মানুষ এবং যথেষ্ট ফিট। জানতাম ও সুস্থ হয়ে উঠবে।”
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭। কাশ্মীরের বান্দিপোরায় জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকার খবর পেয়ে সিআরপিএফ জওয়ানরা অভিযান চালায়। দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলির লড়াই চলে। তিন সেনা নিহত হন। এক জঙ্গিকে খতম করে জওয়ানরা। সে দিন জঙ্গিরা চেতন চিতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পর পর ৯টা বুলেট চেতনের শরীরের বিভিন্ন জায়গা ভেদ করে ঢুকে যায়। সেই অবস্থাতেও তিনি হার মানেননি।
পরে তাঁকে উদ্ধার করে হেলিকপ্টারে শ্রীনগরের সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর রক্তক্ষরণ বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হয় সেখানে। কিন্তু তত ক্ষণে চিতা কোমায় চলে যান। তাঁকে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয় দিল্লির এইমস-এ। ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর অস্ত্রোপচার শুরু হয়। তাঁর মাথা, চোখ এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে বুলেট বের করা হয়। খুব জটিল অস্ত্রোপচার হয় তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায়। তাঁকে আইসিইউ থেকে সর্ব ক্ষণের নজরে রাখা হয়। টানা দু’মাস কোমায় আচ্ছ্ন্ন থাকার পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেন চিতা। তাঁর শারীরিক অবস্থা যা ছিল, সেই জায়গা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসায় চিকিত্সকরাও অবাক হয়েছেন।
প্রতি দিনই নিয়ম করে দিল্লির বাড়িতে ফোন করতেন চিতা। কিন্তু যে দিন এই ঘটনা ঘটে, চিতা বাড়িতে ফোন না করায় বেশ চিন্তায় পড়েন তাঁর স্ত্রী উমা। তিনি বলেন, “যখন উদ্বিগ্ন হয়ে কন্ট্রোল রুমে ফোন করি, তখন তাঁরা আমাকে চিতার অবস্থার কথা জানান।”
চিতার দুই সন্তান। তারা এখন অপেক্ষায় বাবা কখন বাড়িতে ফিরবে।
আরও পড়ুন: বিতর্ক সরিয়ে গুজরাতে পুলিশের শীর্ষে গীতা