সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণ হয় এই গাড়িটিতেই। সিসি ক্যামেরায় গাড়ি থেকে মাথা বার করতে দেখা গিয়েছে এক জনকে। ছবি: সংগৃহীত।
দিল্লিতে লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের পর আশপাশের এলাকার সব সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করতে শুরু করেছে পুলিশ। কী কারণে বিস্ফোরণ হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আত্মঘাতী হানা ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়া গাড়িটি লালকেল্লার অদূরে মসজিদের কাছে প্রায় তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিল। সেখান থেকে রওনা দেওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই বিস্ফোরণ হয়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করার সময় এমনটাই জানা গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
প্রকাশ্যে আসা একটি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়া ওই গাড়িটি সম্ভবত একটি টোলপ্লাজ়া বা পার্কিংয়ে প্রবেশ করছে। সিসি ক্যামেরার ওই ফুটেজে গাড়িটির মধ্যে এক জনকেই দেখা গিয়েছে। তিনি চালকের আসনে বসে ছিলেন। পরনে ছিল নীল এবং কালো রঙা একটি টি-শার্ট। গাড়ির চালকের আসনের পাশের জানালা দিয়ে ঈষৎ মাথা বার করতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে গাড়িতে ওই সময় আরও কেউ ছিলেন কি না, তা সিসি ক্যামেরার ওই ফুটেজে স্পষ্ট নয়।
পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে ‘ইন্ডিয়া টুডে’ জানাচ্ছে, সাদা রঙের ওই ‘হুন্ডাই আই২০’ গাড়িটি দুপুর ৩টে ১৯ মিনিটে লালকেল্লার অদূরে সুনহেরি মসজিদ কাছে একটি পার্কিংয়ে প্রবেশ করেছিল। সন্ধ্যা ৬টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত গাড়িটি সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল। তার পরে ওই পার্কিং থেকে বেরোয় গাড়িটি। পার্কিং থেকে বার হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে লালকেল্লার কাছে গাড়িটিতে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণস্থলের অদূরেই রয়েছে গৌরিশঙ্কর এবং জৈন মন্দির।
দিল্লি পুলিশের অপর একটি সূত্র সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ফুটেজ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে অনুমান করা হচ্ছে গাড়িতে এক জনই যাত্রী ছিলেন। ওই সূত্রের কথায়, “সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের সময়ে গাড়িটিকে পার্কিংয়ে প্রবেশ করতে এবং বার হতে দেখা গিয়েছে। ফুটেজ থেকে অনুমান করা হচ্ছে, ওই সময়ে গাড়িতে সন্দেহভাজন একাই ছিলেন। এখন তদন্তকারীরা দরিয়াগঞ্জের দিকের রাস্তাটি ‘ট্র্যাক’ করছেন। গাড়িটির সম্পূর্ণ গতিবিধি জানার জন্য আশপাশের এলাকার টোল প্লাজ়ার ফুটেজ-সহ শতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।”
সূত্রের খবর, বিস্ফোরণে উড়ে যাওয়া ওই আই২০ গাড়িটির নম্বরপ্লেট হরিয়ানার। গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন রয়েছে মহম্মদ সলমন নামে এক ব্যক্তির নামে। তাঁকে ইতিমধ্যে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় সলমন দাবি করেছেন, তিনি এখন আর ওই গাড়ির মালিক নন। গাড়িটি তিনি তারেক নামে পুলওয়ামার এক বাসিন্দার কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। তবে গাড়ির নথিপত্র নাম এখনও পরিবর্তন হয়নি। গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় ইতিমধ্যে ইউএপিএ-র ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। যুক্ত করা হয়েছে বিস্ফোরক আইনের যথাযথ ধারাও।