(বাঁ দিকে) মৃত যুবক কর্ণ দেব। (ডান দিকে) করণের স্ত্রী এবং তুতো ভাই। ছবি: সংগৃহীত।
কতগুলি ঘুমের ওষুধ খেলে মৃত্যু হতে পারে? কত ক্ষণ পর মৃত্যু হতে পারে? ইন্টারনেটে সার্চ করেছিলেন স্ত্রী। কী ভাবে স্বামীকে ঘুমের ওষুধ দেওয়া যায়, সেই পরিকল্পনাও করেন। পরিকল্পনা মতো রাতের খাওয়াদাওয়াও সারেন দু’জনে মিলে। কিন্তু যুবক বুঝতেই পারেননি যে, তাঁর খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছেন স্ত্রী। খাওয়াদাওয়া শেষে ঘুমোতে যান দু’জনে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই অচৈতন্য হয়ে পড়েন যুবক।
তার পরই প্রেমিক তথা দেওরকে ফোন করেন মহিলা। বিষয়টি জানান। তার পর দু’জনে মিলে অপেক্ষা করতে থাকেন কত ক্ষণে মৃত্যু হবে যুবকের। তাঁর খাবারে ১৫টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্বামী কি মরে গিয়েছেন, বার বার পরীক্ষা করে দেখছিলেন মহিলা। অচৈতন্য অবস্থাতেই পড়ে ছিলেন যুবক। ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পরেও যখন স্বামীর মৃত্যু হয়নি, তাঁর শ্বাস রোধ করে দেওয়ার জন্য অন্য পরিকল্পনা করেন স্ত্রী। অচৈতন্য অবস্থাতেই যুবককে বিদ্যুতের শক দেওয়া শুরু করেন মহিলা। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যান স্ত্রী। চিকিৎসকেরা যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
যুবকের পরিবারকেও মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। তাদের কাছেও জানানো হয়, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু যুবকের ভাইয়ের সন্দেহ হয়। তিনি পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যুবকের দ্রুত শেষকৃত্যের জন্য তাঁর স্ত্রী ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই পুলিশ এসে বাধা দেয়। জানিয়ে দেয়, দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। কিন্তু যুবকের স্ত্রী তাতে রাজি হচ্ছিলেন না। আর তাতেই আরও সন্দেহ বাড়ে পুলিশের। মহিলাকে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই আসল ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।
ঘটনাটি দিল্লির। মৃত যুবকের নাম কর্ণ দেব। তাঁর স্ত্রী সুস্মিতা এবং কর্ণের তুতো ভাই রাহুলের বিরুদ্ধে কর্ণকে খুনের অভিযোগ উঠেছে। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, কর্ণকে খুনের জন্য ইন্টারনেটে সার্চ করেছিলেন সুস্মিতা এবং রাহুল। কোন পদ্ধতিতে সহজে খুন করা যায় এবং সেটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চালিয়ে দেওয়া যায়, সে বিষয়েও সার্চ করেন। তার পরই কর্ণকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে খুন করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর পরেও যখন কর্ণের মৃত্যু হয়নি, তখন তাঁকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে খুন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছে পুলিশ।
সুস্মিতার পাল্টা অভিযোগ, কর্ণ তাঁর উপর প্রতিনিয়ত অত্যাচার চালাতেন। টাকার জন্য শারীরিক এবং মানসিক ভাবে নির্যাতন করতেন। যদিও তাঁর দাবির সত্যতা কতটা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে সুস্মিতার প্রেমিক রাহুলকেও।