দুবাই এয়ার শো-এ তেজস যুদ্ধবিমান (ইনসেটে) দুর্ঘটনায় মৃত নমন স্যাল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
দুবাইয়ে এয়ার শো চলাকালীন ভেঙে পড়ে ভারতের তৈরি যুদ্ধবিমান তেজস। সেই ঘটনায় পাইলট তথা বায়ুসেনার উইং কমান্ডার নমন স্যালের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ছিল এয়ার শো-এর শেষ দিন। তেজস উড়িয়ে নানা কলাকৌশল দেখাচ্ছিলেন উইং কমান্ডার নমন। কিন্তু আচমকাই যুদ্ধবিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। তার পর সেটি গোত্তা খেয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ে আগুন ধরে যায়।
চার দিন ধরে এয়ার শো চলছিল দুবাইয়ে। সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, এয়ার শো-এ কেমন পারফরম্যান্স করছেন, বাড়িতে বাবার কাছে জানতে চেয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, এয়ার শো-ও দেখতে বলেছিলেন। পুত্রের কথামতো গত দু’দিন ধরে ইউটিউবে সেই ভিডিয়োগুলি দেখছিলেন জগন্নাথ স্যাল। তিনি হিমাচল প্রদেশের একটি স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, এয়ার শো-এ পুত্র নমনের পারফরম্যান্স দেখছিলেন জগন্নাথ। ইউটিউবে সেই ভিডিয়ো স্ক্রল করে দেখছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ইউটিউবে এয়ার শো-এর ভিডিয়ো দেখতে দেখতেই সেখান থেকে জানতে পারেন ওই এয়ার শো-এ একটি তেজস দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে। এক সংবাদসংস্থাকে জগন্নাথ বলেন, ‘‘ইউটিউবে এয়ার শো-এর ভিডিয়ো দেখছিলাম। তখনই দুর্ঘটনার খবর সম্পর্কে জানতে পারি।’’
জগন্নাথ জানিয়েছেন, ঘটনাটি সত্যি কি না তা জানতে পুত্রবধূকে ফোন করেন তিনি। নমনের স্ত্রীও বায়ুসেনার অফিসার। পুত্রবধূকে ফোন করার কিছু ক্ষণের মধ্যেই তাঁদের বাড়িতে বায়ুসেনার কয়েক জন আধিকারিক হাজির হন। জগন্নাথ বলেন, ‘‘বায়ুসেনার ওই অফিসারদের দেখে খটকা লেগেছিল, তা হলে কি ছেলের কিছু হল? পরে জানতে পারলাম, নমনের মৃত্যু হয়েছে।’’ এ কথা বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন জগন্নাথ।
তিনি বলেন, ‘‘পড়াশোনায় দুর্দান্ত ছিল নমন। অনেক বড় স্বপ্ন ছিল ওর।’’ হিমাচলের আর্মি পাবলিক স্কুল এবং সৈনিক স্কুল থেকে পড়াশোনা নমনের। ২০০৯ সালে এনডিএ পরীক্ষায় পাশ করে বায়ুসেনায় যোগ দেন। তাঁর স্ত্রীও একজন উইং কমান্ডার। কলকাতায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। নমনেরা তামিলানাড়ুর কোয়েম্বত্তূরে থাকেন। তাঁর বাবা এবং মা সপ্তাহ দুয়েক আগে কোয়েম্বত্তূরে আসেন। তাঁদের একমাত্র নাতনির দেখাশোনা করছিলেন। সেই সময়েই তাঁদের কাছে নমনের মৃত্যুর খবর আসে।