Plane Crash in Ahmedabad

অহমদাবাদ দুর্ঘটনার চার দিন পরে এয়ার ইন্ডিয়ার ১১২ জন পাইলট ছুটি নেন, কেন? সংসদে জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী

মুরলীধর সংসদে জানান, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিমান সংস্থাগুলিকে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছিল। তাতে জানানো হয়, কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করাতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫ ১৭:০০
Share:

অহমদাবাদের মেঘানিনগরে ভেঙে পড়েছিল সেই বিমান। — ফাইল চিত্র।

গত ১২ জুন অহমদাবাদের লোকালয়ে ভেঙে পড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং বিমান। তার চার দিন পরে, ১৬ জুন ‘সিক লিভ’ (অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটি) নিয়েছিলেন শতাধিক পাইলট। বৃহস্পতিবার সংসদে এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকে প্রতিমন্ত্রী মুরলীধর মহল।

Advertisement

এয়ার ইন্ডিয়া বিমানের পাইলট, কর্মীদের অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটির পরিমাণ কি বৃদ্ধি পেয়েছে? লোকসভায় এই প্রশ্ন করেছিলেন এক সাংসদ। লিখিত জবাব দিয়ে মুরলীধর বৃহস্পতিবার সংসদে জানিয়েছেন, অহমদাবাদ দুর্ঘটনার পরে এয়ার ইন্ডিয়া বিমান কর্মীদের ছুটি নেওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১৬ জুন ৬১ জন সিনিয়র পাইলট এবং ৫১ জন ফ্লাইট অফিসার, মোট ১১২ জন ছুটি নিয়েছিলেন বলে রিপোর্ট রয়েছে। মন্ত্রী জানান, বিমান দুর্ঘটনার পরে পাইলটদের মানসিক স্বাস্থ্যে নজর দেওয়া কতটা জরুরি, সেই বিষয়টিই তুলে ধরে এই ছুটি নেওয়ার ঘটনা। পাইলট, বিমানকর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যে জন্য কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা-ও জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী।

মুরলীধর সংসদে বৃহস্পতিবার আরও জানান, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিমান সংস্থাগুলিকে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছিল। তাতে জানানো হয়, কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময়ে মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করাতে হবে। বিমান কর্মী এবং এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলারদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ‘বিশেষ প্রশিক্ষণ’ দেওয়ার কথাও বলা হয় বিমান সংস্থা এবং বিমানবন্দরগুলিকে। পাশাপাশি, বিমান কর্মী এবং এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলারদের সাহায্যের জন্য একটি ‘জুড়ি দলকে’ প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিমান সংস্থাকে। তিনি অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে জানান, বিমান দুর্ঘটনায় ডাঙায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হলে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে কোনও নীতি নেই।

Advertisement

এয়ার ইন্ডিয়ার সেই বিমান অহমদাবাদের মেঘানিনগরে ভেঙে পড়েছিল। প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৬০ জন। তাঁদের মধ্যে বিমানে সওয়ার ছিলেন ২৪১ জন। এই ঘটনার তদন্ত করছে বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারী সংস্থা এএআইবি। তাদের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, বিমানের জ্বালানির সুইচ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ‘রান’ থেকে ‘কাটঅফ’ মোডে চলে গিয়েছিল। দুর্ঘটনার মুহূর্তে ককপিটে দুই পাইলটের কথোপকথনও প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে শোনা যায়, এক পাইলট অন্য জনকে জিজ্ঞেস করেন, ‘‘তুমি কি (জ্বালানির সুইচ) বন্ধ করলে?’’ অন্য জন বলেন, ‘‘না’’। তার পরেই কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয় যে, এক পাইলট বিমানের সুইচ বন্ধ করে দেন। সেই রিপোর্ট খারিজ করেন তদন্তকারীরা। এই আবহে বৃহস্পতিবার সংসদে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পাইলটদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি তুলে ধরলেন একটি ঘটনার মাধ্যমে।

অন্য দিকে, এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, কর্মীদের ক্লান্তি এবং প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যে সুরক্ষানীতি রয়েছে, তা লঙ্ঘন করার জন্য বিমান নিয়ামক সংস্থা ডিজিসিএ-র থেকে চারটি কারণ দর্শানোর নোটিস পেয়েছে তারা। বিমান সংস্থার তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, গত এক বছরের ঘটনায় তারা এই নোটিস পেয়েছে। এই নোটিসের জবাব দেওয়া হবে। তারা যাত্রী এবং কর্মীদের সুরক্ষা দিতে বদ্ধপরিকর বলেও জানিয়েছে। গত ছ’মাসে সুরক্ষাবিধি লঙ্ঘন এবং ওই সংক্রান্ত অভিযোগে এয়ার ইন্ডিয়া মোট ১৩টি নোটিস পেয়েছে। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই হংকং থেকে দিল্লিতে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান অবতরণ করার পরে তার অক্সিলিয়ারি পাওয়ার ইউনিটে আগুন ধরে যায়। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। যাত্রী এবং কর্মীরা নিরাপদে বিমান থেকে নেমে যান। এই ঘটনাতেও বিমান সংস্থাকে নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে খবর। তার ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে, গত সোমবার দিল্লি-কলকাতা বিমান রানওয়েতে দৌড় শুরু করার পরে উড়ান বাতিল করে। প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে উড়ান বাতিল হয় বলে জানা যায়। বৃহস্পতিবার একই কারণে বাতিল হয় একটি দিল্লি-মুম্বই এয়ার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বিমান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement