Citizenship Amendment Bill

‘সজ্জন মুসলিমরা এলেও ভাবা হবে’

দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদী সংখ্যালঘুদের আস্থা অর্জনের প্রয়োজনের কথা বলেছিলেন। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর সঙ্গে তাঁর নতুন মন্ত্র ছিল ‘সবকা বিশ্বাস’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:২৪
Share:

অমিত শাহ।

বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্তান থেকে আসা ‘সজ্জন মুসলিম’-রা চাইলে এ দেশে নাগরিকত্বর জন্য আবেদন করতে পারেন। তা ‘খোলা মনে বিচার করা হবে’ বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

Advertisement

দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদী সংখ্যালঘুদের আস্থা অর্জনের প্রয়োজনের কথা বলেছিলেন। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর সঙ্গে তাঁর নতুন মন্ত্র ছিল ‘সবকা বিশ্বাস’। কিন্তু নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী বিলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্তান থেকে আসা মুসলিমদের সরাসরি নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব নেই।

কেন মুসলিমদের সঙ্গে ভেদাভেদ করা হচ্ছে, তা নিয়ে অমিতের যুক্তি, ‘‘ এই বিলে কোনও মুসলিমেরই অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে না। আইন অনুযায়ী, কেউ নাগরিকত্বর জন্য আবেদন করতেই পারেন। অনেক লোককে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও অনেককে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এই বিলের ০.০০১ শতাংশও মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয়।’’

Advertisement

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল কী?

আরও পড়ুন: অসাংবিধানিক! মানছেনই না শাহ

১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা ছিল, অন্য দেশ থেকে আসা কেউ এ দেশে ১১ বছর থাকলে তিনি এ দেশের নাগরিকত্বর জন্য আবেদন জানাতে পারেন। আবেদনের পর ওই ব্যক্তিকে ১ বছর নজরদারিতে রাখা হবে। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে এই ১১ বছরের শর্ত কমিয়ে ৫ বছর করা হয়েছে। কিন্তু তা শুধু বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্তান থেকে আসা অ-মুসলিমদের ক্ষেত্রে।

মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যা, মুসলিমরা চাইলে আগেকার আইন মেনেই আবেদন করতে পারেন। তাদের এ দেশে ১১ বছর থাকার শর্ত পূরণ করতে হবে। অমিত বলেন, ‘‘যদি কোনও সজ্জন মুসলিম আমাদের আইন অনুযায়ী আবেদন করেন, তা এ দেশ খোলা মনে বিচার করবে।’’

আরও পড়ুন: এনআরসি-র বিরুদ্ধে জোট বাঁধার ডাক দিলেন মমতা

কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈর প্রশ্ন, ‘‘ মোদীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এত বার বৈঠক হয়েছে। কখনও শুনিনি, প্রধানমন্ত্রী মোদী বাংলাদেশে ধর্মীয় নিপীড়নের প্রসঙ্গ তুলেছেন।’’ বিরোধীদের প্রশ্ন, পাকিস্তানের আহমদিয়া, বাংলাদেশে শিয়ারা সংখ্যালঘু। তা হলে সেই মুসলিমদের কথা কেন ভাবা হচ্ছে না? নাস্তিকদের উপরেও ইসলামিক রাষ্ট্রে অত্যাচার হয়। তারাও কেন সুবিধা পাবেন না, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

অমিত এ দিন কিন্তু মুসলিমদের বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও সরকারের নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট করেন। সুপ্রিম কোর্টে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া, আলিগড় ইউনিভার্সিটির সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের তকমা খারিজ করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে মোদী সরকার। বিরোধীরা আজ সংবিধানের ১৪-তম অনুচ্ছেদকে হাতিয়ার করে অভিযোগ তুলেছিলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র ধর্ম, জাত, বর্ণ, লিঙ্গের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করতে পারে না। সংবিধানে সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে। বিরোধীদের দাবি খারিজ করতে আজ অমিত শাহ বলেন, ‘‘একটা কথা বললে ভাল লাগবে না। ১৪-তম অনুচ্ছেদের যেমন ব্যাখ্যা হচ্ছে, তেমন হলে সংখ্যালঘুদের বিশেষ অধিকার কেন থাকে? কেন সমানাধিকারের নিয়ম খাটে না? ওদের সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে অধিকার মেলে, সেটা ১৪-তম অনুচ্ছেদে বলা অধিকারের বিরোধী নয়?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন