UP Wedding Dowry Rejection

ওর বাবার পরিশ্রমের টাকা নিতে পারব না! পণের ৩১ লক্ষ নগদ ফেরালেন বর, উত্তরপ্রদেশে বিয়ের আসরে বিস্ময়

সাজানো থালায় ভর্তি টাকা। নগদ ৩১ লক্ষ! বিয়ের আসরে বরের সামনে তা নিয়ে এসেছিল কনেপক্ষ। হাত জোড় করে টাকার সামনে মাথা নিচু করেন পাত্র। বিনয়ের সঙ্গে পণ প্রত্যাখ্যান করেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:০৪
Share:

উত্তরপ্রদেশে বিয়ের আসরে অদিতি এবং অবধেশ রানা। ছবি: সংগৃহীত।

বিয়ের আসরে বিশেষ থালায় ফুল-মালা দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছিল নগদ ৩১ লক্ষ টাকা! কনের বাবার পরিশ্রমের অর্থ। তিল তিল করে জমানো অর্থ। মেয়ের বিয়ে দেবেন বলেই এই টাকা তিনি রেখেছিলেন। কিন্তু পণ গ্রহণ করলেন না বর! হাতজোড় করে ফিরিয়ে দিলেন নগদভর্তি থালা। ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে দেখলেন উপস্থিত অতিথিরা।

Advertisement

ঘটনা উত্তরপ্রদেশের মুজ়ফ্‌ফরনগরের। সেখানেই ২৪ বছরের অদিতির সঙ্গে চার হাত এক হয় ২৬ বছর বয়সি অবধেশ রানার। কিছু দিন আগে বসেছিল বিয়ের আসর। অদিতির বাবা দীর্ঘ দিন ধরে কন্যার বিয়ের যৌতুকের জন্য টাকা জমিয়েছিলেন। ইচ্ছা ছিল, বিয়ের দিন বরের হাতে ওই টাকা তুলে দেবেন। কিন্তু কন্যার বিয়ে তিনি দেখে যেতে পারেননি। কয়েক বছর আগে কোভিড অতিমারিতে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে এক টাকা গ্রহণ করেছেন অবধেশ। বাকি টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। বিয়ের আসরে তাঁর সামনে যখন টাকার থালা রাখা হয়, মাথা নিচু করে হাত জোড় করে তা প্রত্যাখ্যান করেন অবধেশ। বলেন, ‘‘এটা নেওয়ার কোনও অধিকার নেই আমার। কারণ, এটা কনের বাবার পরিশ্রমের টাকা। আমি এটা নিতে পারব না।’’

বরের ঘোষণা শুনে বাক্‌রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল বিয়ের আসর। কিছু ক্ষণ পর অতিথিরা হাততালিতে ফেটে পড়েন। অবধেশের বাবা-মাও ছেলের সিদ্ধান্তকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। পণ প্রত্যাখ্যানের পর যথাযথ রীতি মেনেই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। পরে অবধেশ টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘‘২২ নভেম্বর আমাদের বিয়ের সময় আমার স্ত্রীর পরিবার পণ হিসাবে ৩১ লক্ষ টাকা আমাকে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা তা নিইনি। কারণ, আমরা পণপ্রথার বিরোধী।’’

Advertisement

মুজ়ফ্‌ফরনগরের নাগওয়া গ্রামের বাসিন্দা অবধেশ। নিজে রূপচর্চার সামগ্রীর ব্যবসা করেন। তাঁর স্ত্রী অদিতি বিয়ের আগে মা এবং ভাইয়ের সঙ্গে মামাবাড়িতে থাকতেন। এমএসসি সম্পূর্ণ করে তিনি বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। বরের এই সিদ্ধান্তকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। জানিয়েছেন, এই ঘটনা মুজ়ফ্‌ফরনগরের অন্য বিয়েগুলিতেও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

ভারতে পণপ্রথা আইনত নিষিদ্ধ হলেও বিয়েতে যৌতুক বা পণের টাকা চেয়ে কনেপক্ষকে হেনস্থার নজির ভূরি ভূরি। পণের জন্য বিয়ের পরেও বধূকে হেনস্থা করা হয়। উত্তরপ্রদেশ থেকে একাধিক বার এই ধরনের খবর শিরোনামে উঠে এসেছে। তাই অবধেশ যেন স্রোতের বিপরীতে হেঁটে নজির গড়লেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement