—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দেশজুড়ে তখন করোনার ঢেউ। প্রতিদিন শয়ে শয়ে মানুষ মারা যাচ্ছেন। ওই সময়ে খুন হন ২৫ বছর বয়সি এক অন্তঃসত্ত্বা বধূ। তাঁর স্বামী কাঁদতে কাঁদতে পরিবারের সকলকে জানিয়েছিলেন, করোনা কেড়ে নিল স্ত্রীকে। ময়নাতদন্ত না-করেই কবর দিয়ে দেওয়া হয় তবস্সুমের দেহ। ওই ঘটনার পাঁচ বছর পর স্ত্রীকে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলেন মহম্মদ আলি। উত্তর প্রদেশের আদালত মহম্মদ তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।
আদালত সূত্রে খবর, ২০২০ সালের ৫ জুন মারা যান তবস্সুম। তখন তিনি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। করোনায় স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে বাড়ির কাউকে দেহের কাছে ঘেঁষতে দেননি স্বামী। কবর দিয়ে দেন দেহ।
কিন্তু এক জনের সন্দেহ হয়েছিল। তিনিু তবস্সুমের কাকা মোর্তাজা আহমেদ। ভাইঝির মৃত্যুসংবাদ পেয়ে তিনি তবস্সুমের শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন। দেহ দেখার পর বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু কিছুতেই ওই মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে মানতে চাইছিলেন না তিনি। ভাইঝির গলায় ওই দাগগুলো কিসের? নিজের মনকেই প্রশ্ন করেছিলেন প্রৌঢ়। শেষমেশ মনস্থির করেন থানায় অভিযোগ করবেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে যুবতীর মৃত্যুর তিন দিন পর কবর থেকে দেহ তোলে উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগরের পুলিশ। দেহের ময়নাতদন্ত হয়। মোর্তাজার সন্দেহই সত্যি!
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা যায়, শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে বধূকে। গ্রেফতার হন স্বামী। তবস্সুমের বাপের বাড়ির অভিযোগ, পণের জন্য খুন করা হয়েছে তাদের মেয়েকে।
আদালতে তবস্সুমের বাপের বাড়ির লোকেরা জানান, বছর পাঁচেকের দাম্পত্যে অনেক বার স্বামীর হাতে অত্যাচারিত হয়েছিলেন মেয়ে। পুলিশ স্বামী ছাড়াও তবস্সুমের শাশুড়ি, পিসিশাশুড়ি এবং দেওরের বিরুদ্ধে খুন-সহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। চার্জশিট পেশ করা হয় আদালতে।
সকল তথ্যপ্রমাণ এবং সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আদালতে প্রমাণ হয়েছে, গলা টিপে বধূকে হত্যা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার এই মামলায় হত্যার দায়ে মৃতার স্বামীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে ৫৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় তাঁকে।
এর মধ্যে তবস্সুমের পিসিশাশুড়ি মারা গিয়েছেন। প্রমাণের অভাবে তাঁর শাশুড়ি এবং দেওরকে বেকসুর খালাস করেছে আদালত।