—প্রতীকী চিত্র।
‘আইভিএফ’ এবং ‘সারোগেসি’র মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিতে চেয়েছিলেন এক দম্পতি। ব্যায়বহুল এই পদ্ধতিতে সন্তানধারণের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা খরচও করেছিলেন। কিন্তু সন্তানের ডিএনএ-তে ‘গরমিল’ পেয়ে খটকা লাগে দম্পতির। প্রকাশ্যে আসে হায়দরাবাদে আইভিএফ-এর নামে প্রতারণার আসল কারবার। সেই ঘটনারই তদন্তে নেমে এ বার আরও নানা তথ্য পেল পুলিশ। জানা গেল, এক জন নয়, আরও কয়েক দম্পতিকে একই ভাবে ঠকিয়েছিল হায়দরাবাদের ওই ক্লিনিক। এঁদের মধ্যে কারও কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল ৪৪ লক্ষ টাকা, আবার কারও থেকে ২৫ লক্ষ।
এখনও পর্যন্ত হায়দরাবাদের ইউনিভার্সাল সৃষ্টি ফার্টিলিটি সেন্টারের ওই ঘটনায় নতুন করে চারটি এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। সবক’টি অভিযোগই দায়ের হয়েছে গোপালপুরম থানায়। তাতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতারণা, চিকিৎসায় অবহেলা এবং টাকা নয়ছয়ের মতো একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। শুধু রাজ্যেই নয়, সারা বিশ্বেই জাল বিছিয়েছিল ওই সংস্থা। সেই ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেন অনাবাসী ভারতীয় এক দম্পতি। ২৫ লক্ষ টাকা খোয়াতে হয় তাঁদের।
নালগোন্ডা জেলার আর এক দম্পতির দাবি, একই ভাবে তাঁদের কাছ থেকেও ৪৪ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন ওই ক্লিনিকের চিকিৎসকেরা। এতে জড়িত ছিলেন ‘ফার্টিলিটি ম্যানেজার’ তথা প্রধান চিকিৎসক আথালুরি নম্রথা, সদানন্দম, চেন্না রাও, অর্চনা এবং সুরেখা। আর একটি পৃথক মামলায় হায়দরাবাদের এক মহিলা নম্রতার বিরুদ্ধে ফার্টিলিটি চিকিৎসার নামে হরমোন ইনজেকশন দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন। তাঁর দাবি, চিকিৎসার নামে তাঁর কাছ থেকেও অনেক টাকা নিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা।
সম্প্রতি সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান নেওয়া রাজস্থানের এক দম্পতি ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হন। ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা যায়, সন্তানটি আদৌ তাঁদের নয়। বাবা-মায়ের সঙ্গে ডিএনএ-র কোনও মিল নেই তার। অথচ চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ এর জন্য তাঁদের কাছ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। তদন্তে নেমে আট জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা যায়, এক গরিব পরিযায়ী দম্পতির থেকে শিশু কিনে এনে সন্তানকামী ওই দম্পতিকে দিয়েছিলেন নম্রতা। ক্লিনিকের বিরুদ্ধে শিশু কেনাবেচা, বেআইনি ভাবে ভিন্রাজ্যে শুক্রাণু, ডিম্বাণু পাচারের অভিযোগ ওঠে। সেই মামলার তদন্তে এ বার প্রকাশ্যে এল আরও নানা অভিযোগ।