(বাঁ দিকে) অ্যাপ্লের সিইও টিম কুক এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
আমেরিকার বাজারে আইফোন বিক্রিতে চিনকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ভারত। ভারতে তৈরি আইফোন ছেয়ে গিয়েছে মার্কিন বাজারে। ভারত থেকে রাজস্ব আদায়ে প্রচুর আয় হচ্ছে অ্যাপ্লের। তাই এখানেই উৎপাদন বৃদ্ধিতে জোর দিতে চাইছে তারা। এমনটাই জানিয়েছেন অ্যাপ্লের সিইও টিম কুক। এ বিষয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়েছিল। কিন্তু তাঁর আপত্তি উড়িয়েই অ্যাপ্ল ভারতে ব্যবসা বৃদ্ধির কথা ভাবছে।
সম্প্রতি অ্যাপ্লের সিইও জানান, আমেরিকায় গত কয়েক মাসে যত আইফোন বিক্রি হয়েছে, তার অধিকাংশই ভারতে তৈরি (মেড ইন ইন্ডিয়া)। সার্বিক ভাবে চিনে আইফোনের উৎপাদন ভারতের চেয়ে বেশি। তবে আমেরিকায় বিক্রির ক্ষেত্রে ভারত ছাপিয়ে গিয়েছে চিনকেও। আপাতত আমেরিকায় বিক্রির তালিকায় চিন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। আমেরিকার বাইরের বাজারে অবশ্য আইফোন বিক্রিতে চিনের (মেড ইন চায়না) আধিপত্য বজায় রয়েছে।
আমেরিকার বাজারে শুধু আইফোন নয়, ম্যাকবুক, আইপ্যাড, হাতঘড়ির মতো নানাবিধ পণ্য বিক্রি করে অ্যাপ্ল। সেই সমস্ত পণ্য অধিকাংশই তৈরি হয় ভিয়েতনামে, জানিয়েছেন কুক। তাঁর কথায়, ‘‘আমেরিকায় বিক্রি হওয়া আইফোনের উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় ভারতই প্রথমে রয়েছে। অন্যান্য দেশে বিক্রিত পণ্য বেশির ভাগ উৎপাদিত হচ্ছে চিনে।’’
অ্যাপ্লের সিইও-র সঙ্গে ভারতে আইফোন তৈরি নিয়ে ট্রাম্পের যে মনোমালিন্য হয়েছিল, তা কারও অজানা নয়। গত মে মাসে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘টিম কুকের সঙ্গে আমার একটু সমস্যা হয়েছে। আমি ওঁকে বলেছি, তুমি ভারতে অনেক কিছু তৈরি করছ। আমি চাই না ভারতে উৎপাদন করো।’’ পাশাপাশি, ভারত-সহ অন্য দেশে পণ্য তৈরি করলে অ্যাপ্লকে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। কিন্তু ট্রাম্পের আপত্তিতে অ্যাপ্ল পিছিয়ে যায়নি। ভারত সম্পর্কে অবস্থানও বদল করেনি। ভারত থেকে আয়ের বিষয়ে তাঁরা আশাবাদী। কুক জানিয়েছেন, ভারত থেকে যে রাজস্ব মিলছে, তার পরিমাণ আরও বাড়ছে। গত কয়েক মাসে সারা বিশ্বে অ্যাপ্লের রাজস্ব বৃদ্ধি হয়েছে ১০ শতাংশ, যার একটা বড় অংশ এসেছে ভারত থেকে। ভারতে আরও কিছু স্টোর খুলে খুচরো বাজারে অ্যাপ্লের উপস্থিতি আরও জোরদার করতে আগ্রহী কুক।
সম্প্রতি ট্রাম্প ভারতের পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। কিন্তু এই শুল্কের প্রভাব ভারতের আইফোন রফতানিতে পড়বে না। কারণ, পারস্পরিক শুল্কের তালিকা থেকে স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিন পণ্য বাদ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এই ধরনের বৈদ্যুতিন পণ্যগুলি আমেরিকার বাজারে উৎপন্ন হয় না। বাইরে থেকে এই পণ্য তাদের কিনতে হয়।