National news

কাশ্মীরে গতকালের ঘাতক জঙ্গি পুলিশের ছেলে

বছরের শেষ দিনে ভোর রাতে পুলওয়ামায় সশস্ত্র বাহিনীর উপর অতর্কিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেই জঙ্গি দলে এমন এক জন ছিল, যে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশে কর্মরত এক কর্মীর ছেলে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৮ ১২:৩০
Share:

মৃত জঙ্গি ফরদিন আহমেদ খান্ডে। ছবি: টুইটার।

দেশের নিরাপত্তারক্ষার দায়িত্বে নিযুক্ত বাবা। আর সেই নিরাপত্তারক্ষীদেরই মারতে উদ্যত ছেলে!

Advertisement

বছরের শেষ দিনে ভোর রাতে পুলওয়ামায় সশস্ত্র বাহিনীর উপর অতর্কিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেই জঙ্গি দলে এমন এক জন ছিল, যে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশে কর্মরত এক কর্মীর ছেলে।

সিআরপিএফের গুলিতে ১৬ বছরের ফরদিন আহমেদ খান্ডে নামে ওই জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। তার বাবা শ্রীনগরে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কনস্টেবল পদে কর্মরত। রবিবার সিআরপিএফ-জঙ্গি সংঘর্ষে তিন জঙ্গির মৃত্যু হয়। তাদের দেহ শনাক্তকরণের সময়ই এই তথ্য সামনে আসে।

Advertisement

সিআরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির হোমল্যান্ড ত্রালের বাসিন্দা খান্ডে। তিন মাস আগে খান্ডে জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে। তখন সে দশম শ্রেণিতে পড়ত। গুলিতে মৃত আর এক জঙ্গি ২২ বছরের মনজুর বাবা দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা ছিল। তৃতীয় জঙ্গির দেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি।

আরও পড়ুন: বর্ষশেষেও জঙ্গি হামলা কাশ্মীরে

হামলার আগে খান্ডে এক ভিডিও বার্তায় হামলার পরিকল্পনার কথা জানায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ৮ মিনিটের সেই ভিডিও-র শুরুতেই তাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘যখন এই বার্তা তোমাদের কাছে পৌঁছবে আমি হয়তো বেঁচে থাকব না।’’ এই ভিডিও বার্তার মাধ্যমে কাশ্মীরি তরুণদের জইশ ই মহম্মদ গোষ্ঠীতে যোগদানের অনুরোধ জানাতে শোনা যায় তাকে।

হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীতে নাম লেখানোটা কাশ্মীরি তরুণদের কাছে নতুন কোনও নয়। এ নিয়ে বহু বছর ধরেই উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। গত বছরের মার্চে এই বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করা হয়। যত দিন যাচ্ছে কাশ্মীরি তরুণদের জঙ্গি গোষ্ঠীতে যোগদানের সংখ্যাটা ক্রমশ বাড়ছে— জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এক সিনিয়র অফিসার। টেকনিক্যাল অ্যান্ড হিউম্যান ইনটেলিজেন্স-র রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০১৭-তে শতাধিক তরুণ পাক মদতপুষ্ট বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীতে যোগ দেয়। ২০১৬-য় যে সংখ্যাটা ছিল তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই কম, ৮৮। আর কাশ্মীরি তরুণদের মধ্যে এই প্রবণতা অনেক বেশি চোখে পড়ে হিজবুল মুজাহিদিন কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির জন্মস্থান দক্ষিণ কাশ্মীরে।

বুরহান পুলওয়ামার ত্রালের বাসিন্দা ছিল। ২০১৬ জুলাইয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকেই এই প্রবনতা বেড়েছে। বুরহানের মৃত্যুকে হাতিয়ার করেই তরুণদের মগজধোলাই করছে জইশ ই মহম্মদ, লস্কর ই তৈবার মতো বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো, মনে করছেন টেকনিক্যাল অ্যান্ড হিউম্যান ইনটেলিজেন্স-এর কর্তারা।

রবিবার ভোরের আলো ফোটার আগেই দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামার লেথপোরায় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলা চালায় তিন সশস্ত্র জঙ্গি। তারা প্রত্যেকে জইশ ই মহম্মদ গোষ্ঠীর সদস্য। মৃত্যু হয় পাঁচ সিআরপিএফের। জখম হন অনেকে। সিআরপিএফের এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লেথপোরা সিআরপিএফ ক্যাম্পে তিন জন জইশ ই মহম্মদ জঙ্গি হামলা চালাতে পারে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ শনিবার বেলা ১টা নাগাদ সিআরপিএফকে সতর্ক করে। তার ১৩ ঘণ্টার মধ্যেই এই হামলা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ওই ক্যাম্পের মধ্যে কর্মরত কোনও ব্যক্তি এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। কারণ ক্যাম্পের যে অংশে পাহারা অপেক্ষাকৃত দুর্বল ছিল, সেখান দিয়েই হামলা হয়। কারও মদত ছাড়া তা সম্ভব নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন