Kanpur

বাড়ি ভাঙার সময় বুলডোজ়ারের সামনে পুড়ে মৃত্যু মা-মেয়ের! খুন না কি আত্মহত্যা? তরজা তুঙ্গে

প্রমীলা এবং নেহার মৃত্যুর পর গ্রামবাসীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসীরা সরকারি আধিকারিকদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে শুরু করলে তাঁরা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কানপুর শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:১৫
Share:

পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে ১৩ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।

বুলডোজ়ার নিয়ে সরকারি জায়গা দখল করে তৈরি বাড়ি উচ্ছেদ করতে এসেছিল প্রশাসন। সেই সময়ই ঘরে আগুন লেগে মৃত্যু হল মা-মেয়ের। সোমবার উত্তরপ্রদেশের কানপুর জেলার রুরা এলাকার মাদৌলি গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতদের নাম প্রমীলা দীক্ষিত (৪৫) এবং নেহা দীক্ষিত (২০)। পরিবারের অভিযোগ, মা এবং মেয়ে ভিতরে থাকার সময়ই পুলিশ ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। যদিও স্থানীয় পুলিশের দাবি, প্রমীলা এবং নেহা নিজেরাই গায়ে আগুন ধরিয়ে নেন।

Advertisement

প্রমীলা এবং নেহার মৃত্যুর পর গ্রামবাসীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামবাসীরা সরকারি আধিকারিকদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে শুরু করলে তাঁরা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে ১৩ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন মহকুমা শাসক, একাধিক পুলিশ আধিকারিক এবং বুলডোজ়ার চালক।

স্থানীয় সূত্রে খবর পুলিশ, জেলা প্রশাসন এবং রাজস্ব আধিকারিকরা সরকারি জমি জবরদখল করে রাখা বাড়িগুলিতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছিলেন। প্রমীলাদের বাড়ি সরকারি জমির উপর তৈরি হওয়ায় সেই বাড়ি গুঁড়িয়ে দিতে বুলডোজ়ার নিয়ে হাজির হন সরকারি আধিকারিকরা। গ্রামবাসীদের দাবি, উচ্ছেদের কোনও আগাম নোটিস না দিয়েই প্রশাসনের তরফে সোমবার সকালে বুলডোজ়ার নিয়ে ঘর ভাঙতে আসেন আধিকারিকরা।

Advertisement

মৃত মা-মেয়ে প্রমীলা দীক্ষিত (৪৫) এবং নেহা দীক্ষিত (২০)। ছবি: সংগৃহীত।

প্রমীলার ছেলে শিবম দীক্ষিত বলেন, ‘‘আমার মা এবং বোন যখন ঘরের ভেতরে ছিল তখন আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আমরা পালিয়ে বাঁচি। আমাদের মন্দির ভেঙে দেওয়া হয়। সবাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে। কেউ কিছু করেনি, এমনকি জেলাশাসকও কিছু করেননি। কেউ আমার মা-বোনকে বাঁচাতে যাননি।’’

অন্য দিকে, পুলিশ দাবি করেছে প্রমীলা এবং নেহা নিজেরাই গায়ে আগুন লাগিয়ে নেন। এক জন পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, মা-মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে স্টেশন হাউস অফিসার দীনেশ গৌতম এবং প্রমীলার স্বামী গেন্দন লালের শরীরের একাংশ পুড়ে গিয়েছে।

এসপি বিবিজিটিএস মূর্তির কথায়, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি, এক জন মহিলা এবং তাঁর মেয়ে কুঁড়েঘরের ভিতরে নিজেদের বন্ধ করে আগুন লাগিয়ে দেন। এর ফলে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আমরা তদন্ত করব এবং যদি কোনও অন্যায় হয়ে থাকে, তা হলে দোষীরা রেহাই পাবে না।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘উচ্ছেদ অভিযানে যাওয়ার সময় আধিকারিকরা একটি ভিডিয়ো শুট করেছিলেন। আমরা ওই ভিডিয়ো চেয়ে পাঠিয়েছি। সেই ভিডিয়ো দেখেও আমরা তদন্ত করব।’’

উত্তরপ্রদেশের বিরোধী সমাজবাদী দল এই ঘটনার জন্য প্রশাসনকে দায়ী করে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন