ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তকে অন্তর্বর্তী জামিন দিল আদালত। —প্রতীকী চিত্র।
দু’জনের সম্মতিতে গড়ে ওঠা কোনও প্রেমের সম্পর্ক পরবর্তী সময়ে ভেঙে যেতেই পারে। শুধুমাত্র ওই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণে কখনওই ধর্ষণের মামলা রুজু করা যায় না। এমনটাই জানিয়েছে কেরল হাই কোর্ট। ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত তরুণকে অন্তর্বর্তী জামিনও দিয়েছে আদালত।
অভিযোগকারী তরুণী তৃতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া। তিনি বিবাহিতাও। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে হয় তাঁর। এখন স্বামীর সঙ্গে না থাকলেও বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি অভিযোগকারীর। এরই মধ্যে অভিযুক্ত তরুণের সঙ্গে সমাজমাধ্যমে আলাপ হয় তাঁর। তরুণীর অভিযোগ, গত বছরের ৩-৪ নভেম্বর হোটেলে নিয়ে গিয়ে ওই তরুণ তাঁকে ধর্ষণ করেছেন।
অভিযোগকারী নিজেই জানিয়েছেন, ইনস্টাগ্রামে অভিযুক্তের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। পরে স্ন্যাপচ্যাটেও তাঁদের কথা হত। ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার কথা বলে ট্রেনে উঠে কোঝিকোড়ে চলে যান তরুণী। সেখানে অভিযুক্তের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর সঙ্গে ওয়েনাড় যাওয়ার পথে দু’টি পৃথক শহরের দুই হোটেলে একসঙ্গে রাত্রিবাসও করেন তাঁরা। তরুণীর অভিযোগ, সেই সময়েই অভিযুক্ত তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। যদিও অভিযুক্তের আইনজীবীর দাবি, যা ঘটেছে দু’পক্ষের সম্মতিতেই ঘটেছে। এখন সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণে ধর্ষণের মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।
দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত জানিয়ে দিয়েছে, সম্মতিতে গড়ে ওঠা সম্পর্ক পরে ভেঙে যেতেই পারে। শুধুমাত্র এই কারণে ধর্ষণের মামলা রুজু করা যায় না। তাই অভিযুক্তের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। ঘটনার সময় অভিযোগকারী যেহেতু বিবাহিত ছিলেন, তাই এ ক্ষেত্রে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে সহবাসের অভিযোগও গ্রাহ্য নয় বলে মনে করছে আদালত।
কেরল হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, একজন বিবাহিত মহিলা স্বেচ্ছায় তিরুঅনন্তপুরম থেকে কোঝিকোড়ে যান। সেখানে স্বেচ্ছায় অভিযুক্তের সঙ্গে বিভিন্ন হোটেলে দু’রাত কাটান। এমন অবস্থায় উভয়ের সম্মতি ছাড়াই কোনও সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বলে ধরে নেওয়া যায় না। আদালত আরও জানিয়েছে, ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ। এই ধরনের কোনও অভিযোগ একজন তরুণের গোটা জীবন নষ্ট করে দিতে পারে। পরে ছাড়া পেলেও এই অভিযোগের ফলে সামাজিক কলঙ্ক জুড়ে যায়। এই বিষয়টি আদালত অবহেলা করতে পারে না বলেই মনে করছে আদালত।