মহারাষ্ট্রের সব স্কুলে গাইতে হবে পুরো ‘বন্দে মাতরম’। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
রাজ্যের সব স্কুলের পড়ুয়াদের জাতীয় স্তোত্র ‘বন্দে মাতরম’ পুরোটা গাইতে হবে। জানিয়ে দিল মহারাষ্ট্র সরকার। ৩১ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সব স্কুলে এই গান গাইতে বলে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে মহারাষ্ট্রের স্কুল শিক্ষা দফতর। যদিও এই নির্দেশের বিরোধিতা করেছেন সমাজবাদী পার্টি নেতা আবু আজ়মি। তিনি জানিয়েছেন, সকলের ধর্মীয় বিশ্বাস ভিন্ন। তাই এই গান গাওয়া বাধ্যতামূলক করা ঠিক নয়। বিজেপি পাল্টা কটাক্ষ করে জানিয়েছে, জাতীয় স্তোত্রকে সম্মান করতে না পারলে বিধায়ক আবুর পাকিস্তানে চলে যাওয়া উচিত।
মহারাষ্ট্রে বিজেপি সরকারের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ৩১ অক্টোবর ‘বন্দে মাতরম’ রচনার ১৫০ বছর পূরণ হতে চলেছে। তাই ৩১ অক্টোবর, শুক্রবার থেকে ৭ নভেম্বর, পরের শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যে সব মাধ্যমের স্কুলে ‘বন্দে মাতরম’ গান গাওয়ার কথা বলেছে শিক্ষা দফতর। নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, ‘বন্দে মাতরম’-এর ইতিহাস নিয়ে স্কুলে স্কুলে প্রদর্শনীও করতে হবে।
এসপি বিধায়ক আবু জানিয়েছেন, সব ধর্মের মানুষের বিশ্বাস ভিন্ন। ইসলামও ধর্মাবলম্বীদের মাকে সম্মান জানাতে বলে। তবে মায়ের সামনে প্রণত হতে বলে না। বিজেপির নাম না করেই তিনি কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘ ওঁরা কিছু করেন না। কোনও উন্নয়ন করেন না। হিন্দু-মুসলিম (রাজনীতি) প্ররোচনা দেন। ভোটে জয়ী হন। বাঘ একবার রক্তের স্বাদ পেলে শিকার করতেই থাকে। ওঁরাও তেমনই মুসলিমদের আঘাত করতে পারে এমন বিষয় খুঁজতে থাকেন।’’
মহারাষ্ট্র বিজেপির সংবাদমাধ্যম বিভাগের প্রধান নবনাথ বান বলেন, ‘‘বন্দে মাতরম নিয়ে আবু আজ়মির সমস্যা থাকলে তাঁর পাকিস্তান বা পছন্দের কোনও দেশে চলে যাওয়া উচিত। এ দেশে থাকতে হলে বন্দে মাতরম গাইতে হবে, সম্মান করতে হবে।’’
‘বন্দে মাতরম’ রচনার সার্ধশতবর্ষ পালনের ঘোষণা আগেই করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সেই বিষয়টি উল্লেখ করে দেশবাসীকে ‘বন্দে মাতরম’ রচনার সার্ধশতবর্ষ পালনে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত রবিবার ‘মন কী বাত’ অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘‘বন্দে মাতরমের ঐতিহ্য এবং গৌরবকে সম্মান জানাতে সকলের অবদান থাকা উচিত।’’ প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘বন্দে মাতরম ভারতের জাতীয় স্তোত্র। এমন একটি গান, যার প্রথম শব্দই আমাদের মন উদ্বেলিত করে। বন্দে মাতরম— এই শব্দে অনেক আবেগ রয়েছে, অনেক শক্তি রয়েছে।’’
মোদীর কথায়, ‘‘কঠিন সময়ে ভারতের ১৪০ কোটি ভারতবাসীকে একত্রিত করার ক্ষমতা রাখে এই বন্দে মাতরম ধ্বনিটি।’’ তার পরেই স্বাধীনতা সংগ্রামে ‘বন্দে মাতরম’-এর রচয়িতা বঙ্কিমচন্দ্রের অবদানের কথা তুলে ধরেন মোদী। তিনি মনে করেন, ব্রিটিশ সরকারের শাসনকালে দুর্বল হয়ে পড়া ভারতে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছিল ‘বন্দে মাতরম’। উল্লেখ্য, বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসের অংশ হিসাবে ‘বন্দে মাতরম’ গানের প্রকাশকাল ১৮৮২ সাল। কিন্তু উপন্যাস লেখার আগেই গানটি রচিত হয়েছিল।