Budget session

মির জাফরের জবাবে জয়চাঁদ! কংগ্রেস-বিজেপি তরজার জেরে আবার মুলতুবি হয়ে গেল সংসদ

সোমবার (১৩ মার্চঃ বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের শুরু থেকেই কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৩ ২২:০৩
Share:

আদানিকাণ্ডে জেপিসি তদন্তের দাবিতে সংসদ ভবনে বিরোধীদের বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।

বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বের সপ্তম দিনেও কার্যত কোনও কাজই হল না সংসদে। ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে শেয়ার বাজারে জালিয়াতির অভিযোগে জেপিসি তদন্তের দাবি এবং লন্ডনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর মন্তব্য ঘিরে সরকার এবং বিরোধী পক্ষের গন্ডগোলের জেরে মঙ্গলবার মুলতুবি হয়ে গেল লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন।

Advertisement

লন্ডন সফরে গিয়ে রাহুলের ‘মাইক বন্ধের’ মন্তব্য নিয়ে মঙ্গলবার ফের সরব হন বিজেপি সাংসদেরা। তাঁরা পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার বিশ্বাসঘাতক সেনাপতির মির জাফরের নাম তুলে নিশানা করেন রাহুলকে। ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদকে ‘ভারতীয় রাজনীতির মির জাফর’ বলা হয়। পাল্টা কংগ্রেস সাংসদেরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তুলনা করেন জয়চাঁদের (তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে পৃথ্বীরাজ চৌহানের বিরুদ্ধে আক্রমণকারী মহম্মদ ঘোরিকে মদত দেওয়া কনৌজের রাজা) সঙ্গে।

ঘটনাচক্রে, গত বছর সাংসদদের মুখে লাগাম পরানোর জন্য কিছু শব্দের প্রয়োগ বন্ধ করার নির্দেশ জারি করা হয়েছিল সংসদ সচিবালয়ের তরফে। তার মধ্যে ছিল ‘মির জাফর’ এবং ‘জয়চাঁদ’। সরকার এবং‌ বিরোধী পক্ষের সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে রাজ্যসভার অধ্যক্ষ জগদীপ ধনখড় এবং লোকসভার স্পিকার বুধবার (২৩ মার্চ) বেলা ১০টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি ঘোষণা করেন। এর পরে কংগ্রেস-সহ বিরোধী কয়েকটি দলের সাংসদরা আদানিকাণ্ডে জেপিসি গড়ার দাবিতে সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ দেখান।

Advertisement

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে, এক দশক ধরে আদানি গোষ্ঠী তাদের সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়ে গিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান গৌতম আদানির ১২,০০০ কোটি ডলার (প্রায় ৯,৭৯,৮০০ কোটি টাকা) নিট সম্পদের ১০,০০০ কোটিই এসেছে গত তিন বছরে, দামে কারচুপির মাধ্যমে শেয়ার সম্পদ চড়িয়ে। গড় বৃদ্ধি ৮১৯ শতাংশ! ওই রিপোর্ট সামনে আসার পরেই জেপিসি তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন বিরোধীরা।

হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে হিসাবে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে মরিশাস, আরব আমিরশাহির মতো আয়কর ছাড়ের সুবিধা মেলে এমন কিছু দেশে আদানি পরিবারের মালিকানাধীন কিছু ভুয়ো সংস্থার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সেগুলির মাধ্যমে বেআইনি লেনদেন, কর ফাঁকি ও আইন ভেঙে নথিভুক্ত সংস্থা থেকে অন্যত্র টাকা সরানোয় লিপ্ত ছিল তারা। ফলে ঘটনাটি ইডি তদন্তের আওতায় পড়ছে বলেও বিরোধী দলগুলির দাবি।

অন্য দিকে, বিজেপির অভিযোগ ব্রিটেনের আলোচনাসভায় দেশকে অপমান করেছেন রাহুল। চলতি মাসে ব্রিটেন সফরের সময় ওই আলোচনা সভায় বলতে গিয়ে রাহুল দেখেন মাইক খারাপ। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘‘ভারতীয় সংসদে কিন্তু মাইক খারাপ হয়নি। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিতর্কের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে।’’ বিদেশের মাটিতে তাঁর এই বক্তব্যকে ‘দেশের অপমান’ বলে চিহ্নিত করেছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার সংসদে এসে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘আমি দেশবিরোধী কোনও মন্তব্য করিনি।’’ সুযোগ পেলে সংসদের অন্দরে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কে অংশ নেওয়ার কথাও জানান তিনি। কিন্তু বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, ক্ষমা না চাইলে লোকসভায় রাহুলকে কথা বলতে দেওয়া হবে না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন