(বাঁ দিকে) মুস্কান রস্তোগী। (ডান দিকে) সৌরভ রাজপুত। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
উত্তরপ্রদেশের মেরঠে মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতের খুনের ঘটনা গোটা দেশে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুনের পর দেহ টুকরো করে নীল ড্রামে ভরে সিমেন্ট দিয়ে আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল মুস্কান রস্তোগীর বিরুদ্ধে। সেই মুস্কানের পরিবারই এখন মেরঠ ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মুস্কানের বাবা প্রমোদ রস্তোগী সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ‘‘এই শহরে যন্ত্রণার অনেক স্মৃতি রয়েছে। সেই স্মৃতি ভুলে নতুন করে আবার জীবন শুরু করতে চাই।’’
প্রমোদের দাবি, সৌরভ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সামাজিক এবং মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত গোটা পরিবার। তাঁর গয়নার ব্যবসাও বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তাঁদের কন্যা মুস্কানের নাম হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে যাওয়ার পর থেকে দোকানে খদ্দেরও আসে না। যাঁদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছিলেন, তাঁরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। মুস্কানের বোন বাড়িতে পড়াতেন। কিন্তু যাঁরা পড়ত তারা কেউ আর আসে না। এমনকি নতুন কোনও ছাত্রছাত্রীও পড়ার জন্য আসছে না। ফলে তাঁর উপার্জনও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
প্রমোদ জানিয়েছেন, সৌরভ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তাঁদের গোটা পরিবার একঘরে হয়ে পড়েছে। আর্থিক, সামাজিক সব দিক থেকে একটা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। ফলে মেরঠ থেকে বেরিয়ে অন্যত্র নতুন করে জীবন শুরু করতে চাইছেন তিনি। পরিবারের বাকি সদস্যেরাও তাই চাইছেন বলে দাবি প্রমোদের। প্রতিবেশীদের দাবি, মুস্কানদের বাড়িটি সৌরভের টাকায় তৈরি হয়েছিল। এটা কখনওই স্বীকার করে না রস্তোগী পরিবার।
সৌরভ হত্যাকাণ্ডে গত মার্চ থেকে জেলবন্দি মুস্কান এবং তাঁর প্রেমিক সাহিল শুক্ল। তাঁরা দু’জনেই মেরঠ জেলে বন্দি। মুস্কান অন্তঃসত্ত্বা। সৌরভের পরিবারের দাবি, ওই সন্তান সৌরভের কি না, ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে। তা না হলে ওই শিশুকে তাঁরা গ্রহণ করবেন না। অন্য দিকে, মুস্কানের প্রেমিক সাহিল এখন জেলে চাষের কাজ করেন। তাঁর ঠাকুমা এবং ভাই মাঝেমধ্যে দেখা করতে আসেন। কিন্তু মুস্কানের সঙ্গে তাঁর পরিবার সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।