Delhi Election Results 2025

মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় ০-৭ থেকে ১-৬ করল বিজেপি! ‘খাতা খোলানোর কৃতিত্ব’ মুসলিম দলেরই

দিল্লির সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সাতটি আসনের মধ্যে ছ’টিতেই জিতেছে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল আম আদমি পার্টি (আপ)। ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ভাবে একটি আসন দখল করেছে বিজেপি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৩২
Share:

মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় গত বারের তুলনায় ভাল ফল করেছে বিজেপি। ছবি: সংগৃহীত।

দিল্লির মসনদ হারালেও অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দিকেই এখনও ঝুঁকে মুসলিম মন। রাজধানী দিল্লির সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সাতটি আসনের মধ্যে ছ’টিতেই জিতল তাঁর দল আম আদমি পার্টি (আপ)। ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ভাবে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত একটি আসন দখল করেছে বিজেপি। যে ফলাফল বলছে, এ বারেও মুসলিম মন জিততে ব্যর্থ কংগ্রেস। গত বারের মতো এ বারও প্রায় সব ক’টি আসনেই তাদের ঠাঁই তিন নম্বরে। তবে আপের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসিয়েছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)। এর জেরেই যে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত একটি আসন পদ্মশিবিরের ঝুলিতে গিয়েছে, তা ভোটের ফলাফলেই স্পষ্ট।

Advertisement

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী দিল্লির মুসলিম জনসংখ্যা ১২ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে চাঁদনি চক (২৯.৭ শতাংশ), মুস্তফাবাদ (৩৯.৫ শতাংশ), মাটিয়া মহল (৬০ শতাংশ), বাবরপুর (৪১.১ শতাংশ), সীলমপুর (৫৭ শতাংশ), ওখলা (৫২.৫ শতাংশ), বল্লিমারান (৪৯.৮ শতাংশ)-এর মতো সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র মুসলিম জনসংখ্যাবহুল। ২০২০ সালের বিধানসভা ভোটে ওই সাতটি আসনেই বিপুল ভোটে জিতেছিল আপ। কিন্তু এ বার মুস্তফাবাদ আসনটি বিজেপির কাছে খুইয়েছে কেজরীর দল। ওই আসনে পদ্মপ্রার্থী মোহন সিংহ বিস্ত জিতেছেন ১৭ হাজারের বেশি ভোটে। ওই আসনেই ওয়েইসির দল পেয়েছে ৩৩ হাজারেরও বেশি ভোট। প্রায় ১২ হাজার ভোট পেয়েছে কংগ্রেস। ফলে এটা স্পষ্ট যে, ভোট কাটাকাটি না হলে মুস্তফাবাদ আসনটিও আপের দখলেই যেত।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

বিজেপি অবশ্য ওই সাত আসনেই গত বারের তুলনায় ভাল ফল করেছে। মুস্তফাবাদে জেতা ছাড়াও পাঁচটি আসন— চাঁদনি চক, মাটিয়া মহল, বাবরপুর, ওখলা এবং বল্লিমারানেগত বারের তুলনায় বেশি ভোট পেয়েছে তারা। চাঁদনি চকে আপের ব্যবধান ৩০ হাজার থেকে কমে ১৬ হাজারে এসে ঠেকেছে। বাবরপুরেও আপের জয়ের ব্যবধান ৩৩ হাজার থেকে কমে হয়েছে ১৯ হাজার।

Advertisement

এ বারের নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোটকে ‘পাখির চোখ’ করেই লড়াইয়ে নেমেছিল কংগ্রেস। নয়া নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ-র বিরুদ্ধে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ২০২০ সালে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতেই সাম্প্রদায়িক হিংসায় বহু মানুষ হতাহত হন। সেই সময় কেজরীর দল সংখ্যালঘুদের পাশে থাকেনি বলে অভিযোগ তুলে তার ফয়দা তোলার চেষ্টা করেছিলেন রাহুল গান্ধীরা। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। উত্তর-পূর্ব দিল্লির সীলমপুরে গত বারের চেয়েও বেশি, প্রায় ৪২ হাজার ভোটে জিতেছেন আপ প্রার্থী জুবের আহমেদ চৌধুরী। বাবরপুরেও আপের গোপাল রাই জিতেছেন প্রায় ১৯ হাজার ভোটে।

শাহিনবাগ যে বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত, সেই ওখলাতেও প্রায় ৩০ হাজার ভোটে জিতেছেন আপের আমানাতুল্লা খান। ওই আসনে ওয়েইসির দলও প্রার্থী দিয়েছিল। তার জন্য যে আপের ব্যবধান কমেছে, তা ফলাফলেই স্পষ্ট। গত বার আমানাতুল্লা প্রায় ৭০ হাজার ভোটে জিতেছিলেন ওখলা থেকে। প্রসঙ্গত, ওখলার শাহিনবাগ এখন কারও কাছেই অচেনা নয়। অচেনা নয় রেহানা খাতুনের ২৩ দিনের কন্যাসন্তানকে নিয়ে দিল্লির ঠান্ডায় খোলা আকাশের নীচে প্রতিবাদ বা ৯১ বছরের বিলকিসের বলিরেখা-চিহ্নিত কাহিনি। সিএএ-র বিরুদ্ধে টানা ৫৫ দিন ধরে রাস্তায় অবস্থান-বিক্ষোভ হয়েছিল সেখানে।

অনেকের মতে, মুসলিম ভোটারেরা মনে করেছেন, কংগ্রেস সে ভাবে ভরসা করার মতো কিছু করেনি। প্রচারে পাশে থাকার বার্তা দিলেও ‘হাত’ শিবিরের নেতারা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। গত ভোটে সীলমপুরের কংগ্রেস প্রার্থীই দল ছেড়ে দিয়েছিলেন। ফলে বিজেপির বিরুদ্ধে আপই একমাত্র বিকল্প হয়ে উঠছে। দিল্লির এক কংগ্রেস নেতার কথায়, ‘‘আমরা যে বিজেপিকে হারাতে পারি, এই কথাটাই সংখ্যালঘুদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি। এর কারণ মূলত আগের দুই নির্বাচনে আমাদের শোচনীয় পরাজয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement