Delhi Assembly Election Results 2025

বিধানসভার শুরুতেই ক্যাগ রিপোর্ট পেশ হবে, এত দিনে দুঃখ ঘুচল অণ্ণার! দিল্লি জিতে মোদীর বচন

২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে জিতে প্রধানমন্ত্রী হন নরেন্দ্র মোদী। তবে ১৯৯৮ সালের পর দিল্লি বিধানসভা ভোটে জেতেনি তাঁর দল। এ বার সেই জয় হাসিল হল। জিতেই দিল্লিবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মোদী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৫৯
Share:

দিল্লির ভোটে জয়ের পর শনিবার বিজেপির প্রধান কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

দিল্লি বিধানসভার প্রথম অধিবেশনেই ক্যাগ (সিএজি) রিপোর্ট পেশ করবে বিজেপি সরকার। দিল্লি জয়ের পর বিজয়ী বক্তৃতায় এমনটাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুধু তা-ই নয়, দিল্লিকে ‘দুর্নীতিমুক্ত’ করা এবং উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে দেওয়ার ‘গ্যারান্টি’ দিলেন তিনি। একই সঙ্গে মোদী তাঁর বিজয়ী ভাষণে টেনে এনেছেন সমাজকর্মী অণ্ণা হজারের প্রসঙ্গও। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এত দিনে দুঃখ ঘুচল অণ্ণার।’’ মোদীর আক্রমণ থেকে বাদ পড়ল না কংগ্রেসও।

Advertisement

২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে জিতে প্রধানমন্ত্রী হন মোদী। ১৯৯৮ সালের পর দিল্লি বিধানসভা ভোটে জেতেনি তাঁর দল। এ বার সেই জয় হাসিল হল। দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে একক দল হিসাবেই জয় পেয়েছে বিজেপি। নির্বাচনের ফল নিয়ে শনিবার বিকেলেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন মোদী। বলেছিলেন, ‘‘দিল্লির উন্নয়নে আমরা কোনও রকম ফাঁক রাখব না।’’ ‘বিকশিত ভারত’-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে দিল্লি। এমনটাই জানান মোদী। শনিবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে বিজেপির প্রধান কার্যালয় থেকে ভাষণ দেওয়ার মুহূর্তেও মোদীর গলায় ছিল একই সুর। তিনি বলেন, ‘‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার ডাবল গতিতে দিল্লিবাসীর ঋণ শোধ করবে।’’

শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিট নাগাদ বিজেপির প্রধান কার্যালয়ে বিজয়ী ভাষণ শুরু করেন মোদী। শেষ করেন ৭টা ৩৫ মিনিট নাগাদ। প্রায় ৫০ মিনিটের ভাষণের শুরুতেই মোদীর মুখে শোনা যায় যমুনা শব্দটি। শেষও করেন যমুনা দিয়েই। এ বারের বিধানসভা ভোটে সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয়ই ছিল যমুনা নদীর দূষণ। ভোটপ্রচারেও প্রধানমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ)-কে যমুনা নিয়ে খোঁটা দিয়েছিলেন। মনে করিয়ে দিয়েছেন, কেজরীর যমুনা-প্রতিশ্রুতির কথা। দিল্লি জয়ের পর মোদী সেই যমুনা পরিষ্কারেরই প্রতিশ্রুতি দিলেন। তিনি বলেন, ‘‘যমুনা দিল্লির পরিচয়। সেই যমুনার কী অবস্থা? দিল্লির মানুষ ভরসা রেখেছিল, কিন্তু আপ-দ আস্থা হারিয়েছে। উল্টে হরিয়ানার উপর দোষারোপ করেছে। আমরা যমুনা পরিষ্কার করব। কাজটা কঠিন। কিন্তু হবেই।’’

Advertisement

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

একটা সময় দিল্লিতে ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন কেজরীওয়াল। সেই লড়াইয়ে পাশে ছিলেন অণ্ণা। সেই মঞ্চেই আপের জন্ম। তার পর ভোটে লড়ে দিল্লির কুর্সি দখল। শনিবারের ভাষণে সেই প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘দুর্নীতিমুক্ত করার কথা বলেছিল যে দল, সেই দলেরই মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রীরা দুর্নীতির দায়ে জেল খেটেছেন। দুর্নীতি লুকোতে তাঁরা নতুন নতুন ষড়যন্ত্র করেছেন। দুর্নীতি করে যাঁরা লুটেছেন, তাঁদের সব ফেরত দিতেই হবে। এটাও মোদীর গ্যারান্টি।’’

দিল্লি ভোটের ফল স্পষ্ট হতেই মুখ খুলেছিলেন কেজরীর এক সময়কার সহযোদ্ধা অণ্ণা। জানান, নির্বাচনে সাফল্য পেতে কী কী করণীয়, সে বিষয়ে তিনি অতীতে বার বার বুঝিয়েছেন কেজরীকে। কিন্তু তাঁর কথায় গুরুত্ব দেননি আপ প্রধান। উল্টে ধনদৌলতের মধ্যেই আচ্ছন্ন থেকেছেন। মোদী তাঁর ভাষণে অণ্ণার বক্তব্যের কথা বলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এত দিনে অণ্ণার দুঃখ ঘুচল।’’

দুর্নীতিমুক্ত দিল্লি গড়ার ডাক দিয়ে মোদী জাানান, বিধানসভার প্রথম অধিবেশনেই ক্যাগ রিপোর্ট পেশ করবে তাঁর দল। উল্লেখ্য, দিল্লি ভোটের সপ্তাহ তিন আগে আপ সরকারের জমানায় আবগারি লাইসেন্স বণ্টন সংক্রান্ত নীতিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠে এসেছিল ‘ফাঁস’ হওয়া ক্যাগ রিপোর্টে। সেই রিপোর্টই বিধানসভায় পেশ করার কথা বললেন মোদী।

আপ ছাড়াও মোদীর ছোড়া বাক্যবাণে বিদ্ধ হয়েছে কংগ্রেসও। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস নিজেও ডোবে, সঙ্গে সহযোগীদেরও ডোবায়।’’ কংগ্রেস ‘পরজীবী’ বলেও কটাক্ষ করেন মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেস তাঁর সহযোগীদের অ্যাজেন্ডা চুরি করে তাদের বিরুদ্ধেই প্রচার করে। কংগ্রেসের সহযোগীরা বুঝে গিয়েছে সেই কথা। কেউ যদি এক বার কংগ্রেসের হাত ধরে, তবে তার হার নিশ্চিত।’’

৭০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে শনিবার ৪৮টিতে জয়ী বিজেপি। মাত্র ২২টি আসন পেয়েছে আপ। রাজধানীতে শেষ বার বিজেপি জিতেছিল ১৯৯৮ সালে। দিল্লির প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হন সুষমা স্বরাজ। ২০২৫ সালে দীর্ঘ ২৭ বছর পরে আবার রাজধানীর মসনদের দখল নিল পদ্মশিবির।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement