কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও জাতীয় সড়ক মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। -ফাইল ছবি।
শুধুই সাফল্য নয়, পরাজয়ের দায় স্বীকার করাটাও রাজনীতিকদের শিখতে হবে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও জাতীয় সড়ক মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। শনিবার পুণেয় একটি অনুষ্ঠানে নিতিন বলেন, ‘‘সাফল্যের পর তার দাবিদার হওয়ার জন্য রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সাফল্যের জনক বহু। কিন্তু পরাজয়ের পর কেউই তার দায়িত্ব নিতে চান না। পরাজয় তাই আক্ষরিক অর্থেই অনাথ।’’
পাঁচ রাজ্যের সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ে বিজেপি-র ভরাডুবির পর শাসক দলের নানা মহলে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। চলছে একে অন্যের উপর দোষারোপের পালা। পরাজিত বিজেপি প্রার্থীদের কেউ আঙুল তুলছেন প্রচারের জন্য অপর্যাপ্ত তহবিলের দিকে। কেউবা আঙুল তুলছেন দলীয় কোন্দল, অন্তর্বিরোধের দিকে।
নিতিনের বক্তব্য, ‘‘ভোটে সাফল্য এলে তখন কে আগে তার কৃতিত্ব নেবেন, তার জন্য দৌড়োদৌড়ি শুরু হয়ে যায়। আর হারলেই একে অন্যের দিকে আঙুল তুলতে শুরু করে দেন। নেতৃত্বকে সাফল্য, অসাফল্য, দুইয়েরই দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। সেটা শিখতে হবে। তাতে রপ্ত হয়ে উঠতে হবে। পরাজয়ের দায় স্বীকার করতে না পারলে সংগঠনের প্রতি নেতৃত্ব দায়বদ্ধতা প্রমাণ করতে পারবেন না।’’
আরও পড়ুন- উপরে সড়কপথ, নীচে রেল! উদ্বোধনের অপেক্ষায় দেশের দীর্ঘতম দোতলা ব্রিজ
আরও পড়ুন- মাল্য সৎ, একবার ঋণখেলাপেই কেউ চোর হয়ে যায় না! বেফাঁস মন্তব্য গডকড়ীর
শনিবার পুণেয় ডিস্ট্রিক্ট আরবান কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশন লিমিটেডের একটি অনুষ্ঠানে নিতিন বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে দেখুন। কোনও কোনও সময় ব্যাঙ্ক খুব সফল হয়। আবার কখনও তার ব্যর্থতাও প্রকট হয়ে ওঠে। সাফল্য আর অসাফল্য, এই দু’টি জিনিস নিয়েই ব্যাঙ্কগুলিকে তাদের কাজকর্ম চালাতে হয়। রাজনীতিতে ব্যর্থতা এলে হই চই শুরু হয়। কারণ খুঁজতে সঙ্গে সঙ্গে কমিটি বানানো হয়। কিন্তু সাফল্য এলে কোনও প্রশ্ন ওঠে না। কাউকে ডেকেও পাঠানো হয় না।’’
পাঁচ রাজ্যের সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটে তিনটি বড় রাজ্যে বিজেপি’র ভরাডুবির পর অবশ্য শাসক দলের নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা জানিয়েছিলেন, ভোটারদের এই রায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাজকর্মের জবাব নয়। এগুলি বিক্ষিপ্ত ঘটনা। যা সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতেই সীমাবদ্ধ।
রাজনৈতিক মহলে স্পষ্টবাক বলে পরিচিত নিতিন গত কাল বলেছেন, ‘‘লোকসভা বা কোনও রাজ্যের বিধানসভা ভোটে কেউ হারলেই অন্যের দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেন। লড়ার জন্য দলের প্রতিটি অংশের পর্যাপ্ত সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেন। কেউ বলেন, ঠিক সময়ে পোস্টার পৌঁছয়নি। কেউ বলেন, প্রচারের তহবিল পর্যাপ্ত ছিল না। কিন্তু আমি মনে করি, কোনও নির্বাচনে কেউ হারেন মূলত দু’টি কারণে। হয় তাঁর দলের কোনও ভুলচুক রয়েছে। না হলে, প্রার্থী ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে পারেননি। এক পরাজিত প্রার্থীকে এ কথা বলেওছিলাম, এক সময়। বলেছিলাম অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর অভ্যাসটা ছাড়ো।’’
শনিবার পুণেয় নিতিনের ওই মন্তব্যের পরেই দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যায়। তার প্রেক্ষিতে রবিবার নিতিন টুইট করে জানিয়েছেন, ‘‘কেউ এই সব রহস্য খুঁজতে চাইলে হতাশ হবেন। এই ভাবে আমাকে বা আমার দলকে (বিজেপি) হেয় করা যাবে না।’’