বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন নীতীশ কুমার। —ফাইল চিত্র।
দশম বারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণ করলেন নীতীশ কুমার। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় পটনার গান্ধী ময়দানে নীতীশকে শপথবাক্য পাঠ করান বিহারের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। নীতীশ ছাড়াও মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন ২৬ জন বিধায়ক। শপথগ্রহণ করেছেন আগের মন্ত্রিসভায় নীতীশের দুই ডেপুটি, বিজেপির বিজয় সিন্হা এবং সম্রাট চৌধরি। একটি সূত্রের দাবি, এ বারও এই দু’জনকেই উপমুখ্যমন্ত্রী করা হচ্ছে।
ঐক্যবদ্ধ এনডিএ-র ছবি তুলে ধরতে শপথগ্রহণের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা টিডিপি নেতা চন্দ্রবাবু নায়ডু, এলজেপি (আর) নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসওয়ান, হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (হাম)-র নেতা জিতনরাম মাঝি। উপস্থিত ছিলেন বিজেপিশাসিত বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত প্রমুখ।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন জেডিইউ-র বিজয়কুমার চৌধরি, বিজেন্দ্রপ্রসাদ যাদব, শ্রোয়ান কুমার, অশোক চৌধরি, লেসি সিংহ, মদন সাহনি, সুনীল কুমার এবং মহম্মদ জামা খান। বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে সম্রাট এবং বিজয় ছাড়াও শপথগ্রহণ করেন দিলীপ জয়সওয়াল, মঙ্গল পান্ডে, সঞ্জয় সিংহ টাইগার, রমা নিষাদ, অরুণশঙ্কর প্রসাদ, রামকৃপাল যাদব, নীতিন নবীন এবং সুরেন্দ্রপ্রসাদ মেহতা। জিতনরামের দল হাম-এর তরফে মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন সন্তোষ সুমন। চিরাগের দলের দুই বিধায়ক সঞ্জয় কুমার এবং সঞ্জয়কুমার সিংহ মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন।
মাঝের কয়েক মাস বাদ দিলে ২০০৫ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত পটনার কুর্সিতে বসেছেন নীতীশই। ২০ বছরে বহু রাজনৈতিক অদলবদল ঘটেছে, একাধিক বার জোট বদলে ভিন্ন ভিন্ন দল বা জোটের হাত ধরেছেন নীতীশ। কিন্তু বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে নীতীশই থেকে গিয়েছেন। এ বারে বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ-র ঝুলিতে গিয়েছে ২০২টি আসন, যা সরকার গঠনের জন্য দরকারি সংখ্যা (১২২)-র চেয়ে অনেক বেশি। নির্বাচনে বিজেপি (৮৯টি আসন)-র সঙ্গে কার্যত পাল্লা দিয়ে আসন বাড়িয়েছে নীতীশের দল জেডিইউ-ও। তারা জিতেছে ৮৫টি আসন।
নানা কারণে পটনার গান্ধী ময়দান বিহারের এক ঐতিহাসিক স্থান। ১৯৭৪ সালে এখান থেকেই ‘সম্পূর্ণ ক্রান্তি’র ডাক দিয়েছিলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ, যিনি রাজনৈতিক মহলে ‘জেপি’ নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। নীতীশের কাছেও জায়গাটির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। ২০০৫, ২০১০, ২০১৫ সালে এখানেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন নীতীশ। ২০২৫ সালে দশম বারের জন্য ওই মাঠেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন ৭৪ বছর বয়সি জেডিইউ নেতা।