মহাজোটের ভাবনা শুরু বিরোধীদের

উত্তরপ্রদেশে হারের পরে নরেন্দ্র মোদীকে ঠেকাতে এ বার সামনে এসে গেল বিরোধীদের মহাজোট গড়ে তোলার ভাবনা। বিধানসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর বিপুল জয় দেখে বিরোধী দলগুলির বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা মনে করছেন, পারস্পরিক ভেদাভেদ ভুলে এখন একজোট হওয়ার সময় এসেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৭ ০৪:০২
Share:

উত্তরপ্রদেশে হারের পরে নরেন্দ্র মোদীকে ঠেকাতে এ বার সামনে এসে গেল বিরোধীদের মহাজোট গড়ে তোলার ভাবনা।

Advertisement

বিধানসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর বিপুল জয় দেখে বিরোধী দলগুলির বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতা মনে করছেন, পারস্পরিক ভেদাভেদ ভুলে এখন একজোট হওয়ার সময় এসেছে। রাহুল গাঁধী, অখিলেশ যাদব যেমন এটা মনে করছেন, তেমনি লালুপ্রসাদ, নবীন পট্টনায়কেরাও একই ভাবে ভাবতে শুরু করেছেন।

যোগেন্দ্র যাদবের মতো ভোট বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক নেতাও মনে করছেন, মোদী যে ভাবে প্রবল শক্তিশালী নেতা হিসেবে উঠে এসেছেন, তাতে বিরোধীদের হাত ধরা খুবই জরুরি। বিহারে জোট হয়েছিল বলেই মোদীকে ধাক্কা দেওয়া
সম্ভব হয়েছিল।

Advertisement

কিন্তু উত্তরপ্রদেশে তা সম্ভব হয়নি। তাঁর মতে, উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ-রাহুলের সঙ্গে মায়াবতীকেও এক মঞ্চে আনা গেলে বিজেপির এমন জয় হতো না। কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ আজ যুক্তি দেন, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস ও সপা-র ভোট ব্যাঙ্ক সে ভাবে কমেনি। মায়াবতীর ভোটও কমেনি। বরং লোকসভার প্রেক্ষিতে বিজেপিরই ২ শতাংশ ভোট কমেছে। তবে মোদীকে আটকাতে সব বিরোধী দলের এক ছাতার তলায় আসা দরকার।

অবশ্য এই মহাজোট গঠন নিয়ে বিরোধী শিবিরেই দু’টি প্রশ্ন রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, ভারতের রাজনীতিতে বরাবরই বিরোধী শিবিরে অনৈক্যের চোরাবালি দেখা গিয়েছে। এনডিএ জমানায় সিপিএম যখন তৃতীয় ফ্রন্ট গড়তে উদ্যোগী, সপা তখন চতুর্থ ফ্রন্টের প্রস্তাব দিচ্ছে। এ ছাড়া, এই মুহূর্তে মহাজোট গড়ার যুক্তিকেও খারিজ করেছেন কেউ কেউ। যেমন মায়াবতীর ঘনিষ্ঠ সেনাপতি সতীশ মিশ্র বলেন, ‘‘এক মাঘে শীত যায় না। মোদী জিতেছেন বলেই তড়িঘড়ি কোনও প্রতিক্রিয়া দেখানোর দরকার নেই।’’ তাঁর মতে, ‘‘সবার আগে প্রয়োজন বিকল্প কর্মসূচি ও সঠিক নেতত্ব প্রতিষ্ঠা করা।’’

বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিনই ওমর আবদুল্লা বলেছিলেন, ‘‘এখনই যদি বিরোধীরা একজোট না হয়, তা হলে পরের লোকসভাতেও মোদীকে ঠেকানো সম্ভব নয়।’’ কংগ্রেস প্রকাশ্যে অবশ্য এ কথার সমালোচনা করেছে। কিন্তু তলে তলে এ-ও কবুল করছে, মোদী যে ভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন, তাতে বিরোধীদের একজোট হতেই হবে।

মুলায়ম সিংহ এখনও অবশ্য বলে চলেছেন, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়া ভুল হয়েছে। কিন্তু অখিলেশ তা মানেন না।

হোলির পর বুধবার ফের সংসদের অধিবেশন। তখনই বিরোধীরা সংসদের বাইরে বৃহত্তর মঞ্চ তৈরি নিয়ে আলোচনা শুরু করবেন। কংগ্রেসের এক নেতার মতে, সপা-কংগ্রেসের জোটের সঙ্গে বিএসপিও যদি সঙ্গে আসত, তা হলে বিজেপির দাপটকে অনায়াসে রোখা যেত।

উত্তরপ্রদেশে বিজেপি প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছে। কিন্তু সপা-বিএসপি ও কংগ্রেস মিললে সেই জোটের ভোট হত ৫০ শতাংশ। যা পরিস্থিতি, তাতে পরের বছর এপ্রিলে রাজ্যসভায় মায়াবতীর মেয়াদ শেষের পর তাঁর ফিরে আসার সংখ্যাও নেই।

তবে বিজেপি নেতা অরুণ জেটলির মতে, বিরোধীরা একে অপরের প্রতিপক্ষ। এদের এক ছাতার তলায় আসা মুশকিল। সেই চেষ্টা করলে তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্বই শেষ হবে। অতীতেও এই চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সফল হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন