প্লাস্টিক-অসুর বধের পণ দিল্লির পুজোয়

Uমাত্র এক বার ব্যবহারের (সিঙ্গল ইউজ) প্লাস্টিক পণ্যে রাশ টানতে লালকেল্লার প্রাচীর থেকে অভ্যেস বদলের ডাক দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ অধিকারী

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৩৯
Share:

ছবি পিটিআই।

কোথাও প্রসাদ বিতরণের জন্য বরাত দেওয়া সারা শালপাতার। কেউ হাঁক পাড়ছেন, প্যান্ডেলে বসিয়ে খাওয়াতে ভাড়ায় নেওয়া স্টিলের থালা-বাটি এসে পৌঁছল কি না। কোনও পুজোয় প্লাস্টিকের জলের বোতল রুখতে জলশোধক যন্ত্র আর কাগজের কাপ। কোনও আয়োজক মজেছেন পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহারে। তা সে প্রতিমার রং হোক বা ভোগের বাসন। সব মিলিয়ে ‘প্লাস্টিক-অসুর’ দমনে কোমর বাঁধছে দিল্লির অনেক মণ্ডপই।

Advertisement

করোলবাগ পূজা সমিতির সাধারণ সম্পাদক দীপক ভৌমিক বললেন, ‘‘প্লাস্টিককে দূরে রাখতে এ বার কাগজের থালা-গ্লাস ব্যবহার করছি আমরা। প্রসাদ বিলি থেকে বসিয়ে খাওয়ানো, সর্বত্র।’’ চিত্তরঞ্জন পার্কের নবপল্লী পূজা সমিতির উপদেষ্টা উৎপল ঘোষের দাবি, শুধুমাত্র পরিবেশবান্ধব (বায়ো-ডিগ্রেডেবল্‌) সামগ্রী ব্যবহারে জোর দিচ্ছেন তাঁরা। জনকপুরি বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনের এগ্‌জিকিউটিভ মেম্বার কল্যাণ পাঠকেরও দাবি, ‘‘পুজোয় পণ প্লাস্টিক বন্ধের। প্যান্ডেলে ভোগ খাওয়াতে স্টিলের থালা-বাটি। প্রসাদ বিতরণে পরিবেশবান্ধব প্যাকেট। মণ্ডপ-চত্বরে জলের বোতলে রাশ টানতে জল শোধনের যন্ত্র। সঙ্গে কাগজের কাপ।’’

মাত্র এক বার ব্যবহারের (সিঙ্গল ইউজ) প্লাস্টিক পণ্যে রাশ টানতে লালকেল্লার প্রাচীর থেকে অভ্যেস বদলের ডাক দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এর পরে ১১ সেপ্টেম্বর মথুরার মাটি থেকে সেই লক্ষ্যকে পুরোদস্তুর সামাজিক আন্দোলনের চেহারা দেওয়ার চেষ্টায় মাঠে নামেন তিনি। সম্প্রতি সেই প্রতিজ্ঞার কথা তুলেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের বক্তৃতাতেও। আজ, ২ অক্টোবর গাঁধীর দেড়শোতম জন্মবার্ষিকীর দিন থেকে এক বার ব্যবহারের প্লাস্টিক পণ্য মুক্ত দেশ গড়ে তোলার শপথ নিতে সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘স্বচ্ছতাই সেবা প্রকল্পে পাখির চোখ এখন এক বার ব্যবহারের প্লাস্টিক থেকে দেশের মুক্তি।’’

Advertisement

কেন্দ্রের এই ঘোষণাই কি প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে অভিযানে নামতে ‘বাধ্য করেছে’ রাজধানীর বহু পুজোকে? সামাল দেওয়া যাচ্ছে বাড়তি খরচ? উত্তরে উদ্যোক্তাদের দাবি, দূষণে ঘোর সঙ্কটে পরিবেশ। তাই প্লাস্টিক বন্ধে সরকারের এই উদ্যোগ স্বাগত। এতে আখেরে সকলের ভাল বলেই বিষয়টিকে নিজে থেকে আঁকড়ে ধরতে চাইছেন তাঁরা। তাতে খরচ হয়তো কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু সচেতনতা তো বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

নয়ডায় বলাকা-র পুজোর অন্যতম আয়োজক অনুজ কান্তি চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘শালপাতার ঠোঙা আর স্টিলের থালার আয়োজন তো করছিই। প্যান্ডেল নির্মাতা-সহ প্রায় সকলকে বলছি প্লাস্টিক এড়াতে।’’ পুজো-ভোগ-প্রসাদের সমস্ত আয়োজনে প্লাস্টিকের বিকল্প খুঁজে তার ব্যবহারে জোর দেওয়ার কথা বলছেন ইন্দিরাপুরমে প্রান্তিকের পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা নীলাদ্রি দেব চৌধুরীও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement