Trade Deals

‘জিনপিং, পুতিনের মুখোমুখি হতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি’, শুল্কযুদ্ধ-আবহে কী বার্তা মোদীর?

বুধবার থেকেই ভারতীয় পণ্যের উপর জরিমানা-সহ ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার। তা নিয়ে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন কূটনৈতিক চাপানউতরের আবহে মোদীর এই মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৫ ১৬:৩৩
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষসম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। পাঁচ দিনের বিদেশ সফরে রওনা হওয়ার আগে এ কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘‘ভারত অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও নিবিড় করার জন্য এসসিও সদস্যদের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জিনপিং, পুতিন এবং অন্য নেতাদের সাথে দেখা করার জন্যও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’’

Advertisement

ঘটনাচক্রে, বুধবার থেকেই ভারতীয় পণ্যের উপর জরিমানা-সহ ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার। তা নিয়ে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন কূটনৈতিক চাপানউতরের আবহে মোদীর এই মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন অনেকে। প্রসঙ্গত, আগামী ৩১ অগস্ট-১ সেপ্টেম্বর চিনের তিয়ানজ়িনে এসসিও শীর্ষসম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে উপস্থিত থাকার কথা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনেরও। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এসসিও সম্মেলনের পাশাপাশি চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেরও আয়োজন করা হয়েছে। পুতিনের সঙ্গে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পার্শ্ববৈঠক হওয়ার কথা।

সাত বছর পর ফের চিন সফরে যাচ্ছেন মোদী। ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনা সেনার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরেই এটাই তাঁর প্রথম চিন সফর। বেজিংয়ের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এসসিওর বৈঠকে মধ্য, পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া মিলিয়ে মোট ২০ জনের বেশি রাষ্ট্রপ্রধানের পা পড়ার কথা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে মাত্র দু’জনকে ব্যক্তিগত ভাবে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন স্বয়ং চিনা কমিউনিস্ট পার্টি বা সিসিপির চেয়ারম্যান তথা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তাঁরা হলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। নয়াদিল্লি-বেজিং সমীকরণের নিরিখে যা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শাস্তিমূলক শুল্ক বসানোর জন্য ট্রাম্প সরকারের প্রধান যুক্তি, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পুতিনকে মদত দিচ্ছে নয়াদিল্লি! ভারত অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। বস্তুত, রাশিয়া থেকে তেল কেনা দেশগুলির মধ্যে চিনও রয়েছে। কূটনীতিকদের একাংশের মত, এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার পাশাপাশি চিনের সঙ্গেও কূটনৈতিক দৌত্য চালিয়ে দিল্লি বহুপাক্ষিক কূটনীতির পথ খোলা রাখতে চাইছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, এ বারের এসসিও বৈঠকে ‘রুশ ভারত চিন ত্রিশক্তি’ বা রিক ট্রয়িকা (রাশিয়া-ইন্ডিয়া-চায়না ট্রয়িকা) দানা বাঁধার সম্ভাবনা রয়েছে। যা নিঃসন্দেহে ওয়াশিংটনের পক্ষে উদ্বেগের।

মোদী এবং জিনপিং শেষবার মুখোমুখি হয়েছিলেন ২০২৪ সালের ২৩শ অক্টোবরে। রাশিয়ার কাজ়ান শহরে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে। সেই বৈঠকের ফলে পূর্ব লাদাখের নিয়ন্ত্রণরেখার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা প্রত্যাহার (ডিসএনগেজমেন্ট) হয়। এর পর কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রা আবার শুরু করার বিষয়ে ইতিবাচক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়। চিনা পর্যটকদের জন্য ভারতীয় ভিসা এবং দু’দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচলকে নতুন মাত্রা দেওয়ার পদক্ষেপ করা হয়। যদিও গত মে মাসে পাকিস্তানের জঙ্গিডেরায় ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুরের পরে দ্বিপাক্ষিক সংঘাতপর্বে ইসলামাবাদকে অস্ত্র ও প্রযুক্তিগত মদত দিয়েছে বেজিং। এই আবহে এসসিও বৈঠকে টানাপড়েনের আশঙ্কা থাকলেও পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে ট্রাম্পের ‘শুল্কবাণ’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement