— ফাইল চিত্র।
রাজা রঘুবংশীকে মেঘালয়ে নিয়ে গিয়ে খুনের ছক কষেছিলেন কে? স্ত্রী সোনম রঘুবংশী না কি, তাঁর ‘প্রেমিক’ রাজ কুশওয়াহা? এই প্রশ্নই এখন ভাবাচ্ছে মেঘালয় পুলিশকে। সোনম এবং রাজকে জেরা করছে মেঘালয় পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, জেরায় পরস্পরবিরোধী কথাবার্তা বলছেন সোনম এবং রাজ। একে অপরের ঘাড়ে দোষও চাপাচ্ছেন দু’জন। আর তাতেই ধন্দে পুলিশ।
মেঘালয় পুলিশের সিট মধ্যপ্রদেশের ইনদওর এবং উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুর থেকে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই তথ্যপ্রমাণ জুড়ে বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে যে, মেঘালয়ে ঠিক কী ঘটেছিল। সংবাদমাধ্যম লাইভ হিন্দুস্তান পুলিশের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে সোনমের কিছু বক্তব্য প্রকাশ করেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোনম তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছেন, মেঘালয়ে বেড়ানোর সময়ে কয়েক জন তাঁর গয়না ছিনতাই করতে গিয়েছিলেন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন রাজা। সোনমের আরও দাবি, ওই ঘটনার সময়েই জ্ঞান হারিয়েছিলেন তিনি। কী ভাবে গাজ়িপুরে তিনি পৌঁছোন, তা মনে করতে পারেননি।
সোনমের এই বয়ান পরখ করে দেখছে মেঘালয় পুলিশ। অন্য দিকে, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী প্রিস্টোন টিনসং জানিয়েছেন, রাজার খুনের ঘটনায় বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজন দোষ স্বীকার করেছেন। সোনম ওই ঘটনায় ‘জড়িত’ ছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। পুলিশের একটি সূত্র মনে করছে, রাজার মৃত্যুর পরে সোনম শিলং থেকে গুয়াহাটি যান। সেখান থেকে ট্রেনে চেপে ২৭ মে ইনদওরে যান। পরের দিন তিনি গাজ়িপুরে গিয়েছিলেন। সেখানেই ছিল রাজের বাড়ি। ৯ জুন ওই গাজ়িপুরের ধাবা থেকেই ধরা পড়েন সোনম।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, সোনমের বয়ানের সঙ্গে রাজের বয়ানের কোনও মিল নেই। তিনি জেরায় দাবি করেছেন, তিনি শেষ মুহূর্তে মেঘালয়ে যাওয়া বাতিল করেন। বাকিদের যাওয়ার আটকানোর চেষ্টা করেন। এক পুলিশ আধিকারিক সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, ‘‘রাজ কুশওয়াহা দাবি করেছেন, তিনি সোনমকে সাহায্য করতে চাননি। শেষ মুহূর্তে মেঘালয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেন। বাকি তিনজনকেও যেতে বারণ করেছিলেন তিনি। তবে সোনম তাঁদের যাওয়ার টিকিট কেটে দেওয়ায় তারা মেঘালয় দেখতে যেতে চাইছিলেন।’’ ওই পুলিশ আধিকারিক আরও বলেন, ‘‘শেষ মুহূর্তে ওই তিন জন রাজাকে মারতে অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু সোনম জোর করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, ১৫ লক্ষ টাকা দেবেন তিনি। পুলশি এই দাবি খতিয়ে দেখছে।’’
সোনমের বাবা দেবী সিংহ রঘুবংশী যদিও দাবি করেছেন, তাঁর মেয়ে নিরপরাধ। মেঘালয় পুলিশ তরুণীকে ফাঁসিয়েছেন। তিনি সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। ১১ মে রাজার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সোনমের। তার পরে তাঁরা মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন। ২ জুন পূর্ব খাসি পাহাড় জেলার সোহরার একটি খাদ থেকে উদ্ধার হয় রাজার দেহ।